ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৭/০৪/২০২৩ ৭:১৫ এএম

কক্সবাজারের রামুতে মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে আসা অসংখ্য গরু উৎকোচ নিয়ে ছেড়ে দিচ্ছে রামু থানা পুলিশ। পুলিশের নীরব ও রহস্যজনক ভূমিকার ফলে রামু সড়ক-উপসড়ক ও পাহাড়ি এলাকা দিয়ে প্রতিনিয়ত বানের পানির মতো পাচার হচ্ছে মিয়ানমার থেকে আনা গরু।

রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হাসনাত মোহাম্মদ মাজেদুল হকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি টহল দল সোমবার, ২৪ এপ্রিল দুপরে সড়কে দাঁড়িয়ে গরু চোরাকারবারিদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে নিচ্ছিলেন ঘুষ। ওইসময় পুলিশের ঘুষ নেয়ার একটি ভিডিও ও একাধিক ছবি বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। যা নিয়ে চলছে তোলপাড়।
প্রতিবেদকের হাতে থাকা এ ভিডিওতে দেখা গেছে- রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ ইউনিয়নের উখিয়ারঘোনা মুরাপাড়া রামু-নাইক্ষ্যংছড়ি সড়কের মোড়ে রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হাসনাত মোহাম্মদ মাজেদুল হক সহ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব পালনে দেখা গেছে। এসময় ওই সড়ক দিয়ে মিয়ানমার থেকে চোরাই পথে আসা গরুর প্রতি গাড়ি থেকেই ঘুষ নিচ্ছিলো সেখানে কর্তব্যরত পুলিশ। ভিডিওতে দেখা যায় গরুর গাড়ি থেকে নেমে এক ব্যক্তি রামু থানা পুলিশের একজন কনস্টেবলকে টাকা দিচ্ছেন। তার পাশেই ছিলেন এসআই আবু হাসনাত মোহাম্মদ মাজেদুল হক। টাকা নেয়ার পর এসআই মাজেদুল হক গরুর গাড়িগুলোকে দ্রুত চলে যাওয়ার নির্দেশ দিতে দেখা যায়। পরে সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশের ওই দলটি সেখান থেকে সটকে পড়েন। ওইদিন সকাল থেকে প্রায় অর্ধশতাধিক গরু বোঝাই মিনিট্রাক (পিকআপ) এ সড়ক হয়ে রামুতে আসতে দেখা গেছে।
দিনদুপুরে পুলিশের এমন ঘুষ লেনদেনের বিষয়ে জানতে চাইলে রামু থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ারুল হোসাইন বলেন- ভিডিও দেখে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত মাজেদুলের ডিউটি ছিলো। এখানে পেশাদারিত্বের সাথে কারো দায় আমি নিবো না। যদি এরকম হয়ে থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গরু চোরাচালান রোধে পুলিশের যেখানে শক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিৎ সেখানে দিনদুপুরে সড়কে দাঁড়িয়ে ঘুষ লেনদেনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন- রামু উপজেলা সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সভাপতি মাস্টার মোহাম্মদ আলম। তিনি বলেন, যেখানে কিছুদিন আগেই গরু চোরাচালানের ঘটনায় একজন নিহত হয়েছে, সেখানে পুলিশের উল্টো ঘুষ নেওয়া হতাশাজনক। সরকারের উচিৎ অনতিবিলম্বে গরু চোরাচালান রোধ এবং ঘুষ বাণিজ্যে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ শাস্তিমূলক প্রদক্ষেপ নেয়া।

এ ব্যাপারে রামু থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু হাসনাত মোহাম্মদ মাজেদুল হক ঘুষ গ্রহনের বিষয়টি এড়িয়ে যান।
উল্লখ্য যে বিগত ৬ মাস ধরে নাইক্ষ্যংছড়ি পয়েন্টের মিয়ানমার সীমান্ত দিয়ে দৈনিক হাজার হাজার গরু পাচার হচ্ছে রামু উপজেলাসহ সারাদেশে। কয়েকদিন আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সীমান্তবর্তী কচ্ছপিয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে গরুর জন্য দেওয়া একটি প্রত্যয়ন পত্র ভাইরাল হয়। এর আগে ৮ এপ্রিল রামু উপজেলার কাউয়ারখোপে বিজিবির সাথে গরু চোরাকারবারিদের গোলাগুলিতে একজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে গরু চোরাচালানকে ঘিরে পথে পথে গরু ডাকাতি, লুট, ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনায় রামুর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি চরম অবনিত হয়েছে।

পাঠকের মতামত

সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেলেন উখিয়ার ডাঃ এ.এইচ. সুমন

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সদ্য প্রকাশিত প্রজ্ঞাপনে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থো-পেডিক) ডাঃ ...

উপকূলের ম্যানগ্রোভে বিশ্বস্বীকৃতি—দ্য আর্থশট প্রাইজ জিতলো ফ্রেন্ডশিপ

বিশ্বের অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ পরিবেশ পুরস্কার ‘দি আর্থশট প্রাইজ ২০২৫’ জিতেছে বাংলাদেশের সামাজিক উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ। ...

রোহিঙ্গার হাতে এনআইডি : নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে আসামি চসিকের কর্মচারীও

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) শুলকবহর ওয়ার্ড কার্যালয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে জন্ম নিবন্ধন এবং পরবর্তীতে এটি ব্যবহার ...

রোহিঙ্গা সংকটে মানবপাচার রোধে একসঙ্গে কাজ করবে আইওএম ও এইচসিআই

আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) এবং কানাডার প্রাচীনতম মুসলিম ত্রাণ সংস্থা হিউম্যান কনসার্ন ইন্টারন্যাশনাল (এইচসিআই) ও ...