প্রকাশিত: ১৯/০৬/২০২০ ১:৫৪ পিএম
ফাইল ছবি

ডেস্ক রিপোর্ট::
১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গার বোঝা কয়েক বছর ধরেই চেপে বসেছে বাংলাদেশের কাঁধে। এ সংকট সমাধানের কোনো লক্ষণই দেখা যাচ্ছে না। আগামীকাল শনিবার বিশ্ব শরণার্থী দিবসের প্রাক্কালে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) বিশ্বে শরণার্থী, বাস্তুচ্যুতি নিয়ে কয়েকটি বড় দুঃসংবাদ দিয়েছে। এর একটি হলো ২০১৯ সালে বিশ্বে বাস্তুচ্যুতের সংখ্যা ৮৭ লাখ বেড়েছে। সংকট সমাধান ও প্রত্যাবাসনের সুযোগও দিন দিন কমে আসছে।

গতকাল প্রকাশিত বিশ্বে বাস্তুচ্যুতি পরিস্থিতি বিষয়ক এক প্রতিবেদনে ইউএনএইচসিআর বলেছে, ২০১৯ সাল শেষে সারা বিশ্বে সাত কোটি ৯৫ লাখ মানুষ বাস্তুচ্যুত অবস্থায় ছিল। ইতিহাসে এর আগে এত মানুষ কখনো গৃহহারা ছিল না। প্রতিবেদনে দেখা যায়, ‘শরণার্থীদের দুর্দশা দ্রুত শেষ হওয়ার আশাও দিন দিন কমে আসছে। নব্বইয়ের দশকে প্রতিবছর গড়ে ১৫ লাখ মানুষ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে নিজ দেশে ফিরতে পারত। গত দশকে এই সংখ্যা কমে তিন লাখ ৯০ হাজারে পৌঁছেছে। এতে বোঝা যায়, বাস্তুচ্যুতির পরিমাণ এখন টেকসই সমাধানকে কত দূরে নিয়ে গেছে।’

ইউএনএইচসিআর তার প্রতিবেদনে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের ‘স্টেটলেস’ (রাষ্ট্রহীন) বলে অভিহিত করেছে। অর্থাৎ ওই ব্যক্তিদের স্বীকৃত ‘রাষ্ট্র পরিচয়’ নেই। ইউএনএইচসিআরের হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে আশ্রিত ‘রাষ্ট্রহীনের’ সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে আট লাখ ৫৪ হাজার ৮০০। এ সুবাদে আশ্রয়দাতা রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে নবম স্থানে আছে বাংলাদেশ।

Interesting For YouMgid

একই সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে আশ্রয়প্রার্থীদের তালিকায় বাংলাদেশিরা আছে। ২০১৯ সাল শেষে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ৫৭ হাজার ৯৩৩ জন বাংলাদেশি ইউএনএইচসিআরের উদ্বেগের তালিকায় ছিল। তাদের মধ্যে ২২ হাজার ৮৭১ জন বাংলাদেশি শরণার্থী মর্যাদা পেয়েছে। গত বছর শেষে ‘শরণার্থীর মতো পরিস্থিতিতে’ ছিল ২৪ জন। এর বাইরে ৩৪ হাজার ৫৩৫ জন বাংলাদেশির ‘অ্যাসাইলাম’ আবেদন ঝুলে ছিল। এ ছাড়া আরো ৫০৩ জনের পরিস্থিতি নজরে ছিল ইউএনএইচসিআরের।

বিশ্বের সব দেশকে শরণার্থী এবং সংঘাত, নিপীড়ন বা অন্যান্য হুমকির কারণে উদ্বাস্তুদের নিরাপদ আশ্রয় ফিরে পেতে সাহায্য করার জন্য ইউএনএইচসিআর এ বছর আবারও আহ্বান জানিয়েছে। গতকাল জেনেভায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, বর্তমান বিশ্বের ১ শতাংশেরও বেশি মানুষ বলপূর্বক বাস্তুচ্যুতির শিকার। অর্থাৎ বিশ্বের প্রতি ৯৭ জন লোকের একজন বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্র্যান্ডি বলেন, ‘পরিবর্তিত বাস্তবতায় আজ বলপূর্বক বাস্তুচ্যুতির পরিমাণই যে শুধু বেড়েছে তা নয়; বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সমস্যাগুলো দীর্ঘমেয়াদি। নিজ দেশে প্রত্যাবাসনের কিংবা নতুন কোথাও ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার কোনো আশা ছাড়া এই মানুষগুলো বছরের পর বছর কাটিয়ে দিচ্ছে অনিশ্চয়তায়। এটা মেনে নেওয়া যায় না। শরণার্থীদের জন্য প্রয়োজন একেবারে নতুন ও উদার দৃষ্টিভঙ্গি। এর সঙ্গে তাদের দুর্ভোগের মূলে থাকা বছরের পর বছর ধরে চলমান সংঘাতগুলোর সমাধানে চাই দৃঢ় প্রত্যয়।’

ইউএনএইচসিআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী, চার কোটি ৫৭ লাখ লোক নিজ দেশে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। বাকিরা বাধ্য হয়েছেন দেশ ছাড়তে। তাদের মধ্যে দুই কোটি ৯৬ লাখ শরণার্থী, আর ৪২ লাখ মানুষ অন্য কোনো দেশে আশ্রয়ের আবেদন করে ফলাফলের অপেক্ষা করছে। গত বছর বিশ্বে বাস্তুচ্যুতি বাড়ার ক্ষেত্রে কঙ্গো, পশ্চিম আফ্রিকার সাহেল অঞ্চল, ইয়েমেন ও সিরিয়ার সংঘাত বড় ভূমিকা রেখেছে। বৈশ্বিক বাস্তুচ্যুতির ছয় ভাগের এক ভাগই হচ্ছে ওই অঞ্চলগুলোতে।

পাঠকের মতামত

টানা ১০ দিন ঝরবে বৃষ্টি

মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে আগামী ১০ দিন চট্টগ্রামসহ দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকার ...

ভোটার তালিকায় রোহিঙ্গা নিয়ে বেকায়দায় নির্বাচন কমিশন

মিয়ানমারে অত্যাচার-নির্যাতন ও উচ্ছেদের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের কক্সবাজার ও নোয়াখালীর কয়েকটি ক্যাম্পে ...

নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে সেনাবাহিনী: প্রেস সচিব

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার ...