প্রকাশিত: ০৯/০১/২০১৮ ৫:৪০ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৮:১৭ এএম
Single Page Top

নিউজ ডেস্ক::
সম্প্রতি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া এক বৃদ্ধ বাবার ছবি ও তাকে ঘিরে একাধিক ব্যক্তির দেয়া স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র আলোচনা-সমালোচনার। জনমনে দেখা দিয়েছে ক্ষোভ। ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার খারুয়ালী গ্রামের মফিজউদ্দিন পাঠান নামে সত্তর বছর বয়সী এক বৃদ্ধের কথা উল্লেখ করে সেখানে দাবি করা হয়েছে; তার দু’ছেলের একজন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (বিচারিক হাকিম)। অন্যজন একটি বেসরকারি কোম্পানিতে উচ্চপদে কর্মরত। কিন্তু সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও সন্তানরা কোনো খোঁজ নেয় না বাবার।

এই তথ্য জানার পর চ্যানেল আই অনলাইনের পক্ষ থেকে কথিত ম্যাজিস্ট্রেট ছেলে, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, স্থানীয় জনতা ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, এ তথ্যের কোনো সত্যতা নেই। এবং মফিজউদ্দিনের কোনো ছেলে ম্যাজিস্ট্রেট নয়। বয়সের কারণে তিনি মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত হওয়াতে এ ধরনের কথা বলছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মফিজউদ্দিন পাঠান মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। যে কারণে তিনি এ ধরনের কথা বলে থাকেন। কখনো বলেন, তার এক ছেলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। কখনো বা বলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।

মফিজউদ্দিন পাঠানের স্ত্রী লুৎফুন নাহারের বরাত দিয়ে ভালুকা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সিয়াম আমীন খান চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, ‘মফিজউদ্দিন পাঠান একজন সরকারি গাড়িচালক ছিলেন। অবসর গ্রহণের পর থেকে মানসিকভাবে কিছুটা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। বাড়িতেও ঠিকমতো থাকতে চান না। রাত-বিরেতে বেরিয়ে যান বাড়ি থেকে। চা খেতে গিয়ে এলাকার মানুষের কাছে বলে আসেন নানা বিভ্রান্তিকর কথা।’

প্রকৃতপক্ষে মফিজউদ্দিন পাঠানের দুই ছেলে। তাদের একজন রাসেল পাঠান, তিনি তৈরি পোশাক শ্রমিক। অন্যজন রাজ পাঠান, তিনি একটি এনজিওতে চাকুরিরত। রাসেল পাঠান মা-বাবার সঙ্গেই ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার খারুয়ালী গ্রামে ভাড়া বাসায় থাকেন। তার অর্জিত বেতন ১৮ হাজার টাকা থেকে প্রতিমাসে বাবা-মায়ের খরচ বাবদ দেন ১০ হাজার টাকা।

অবশ্য একসময় বেশ স্বচ্ছল ছিলেন মফিজউদ্দিন পাঠান। তার কথার সূত্র ধরে, বৃদ্ধ মা-বাবাকে না দেখার অভিযোগে চাকুরি চলে গিয়েছিল রাজ পাঠানের। পরে সঠিক তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের পর পুনরায় তাকে চাকরিতে বহাল করা হয়।

মফিজ পাঠানের ভাষ্যমতে, গাড়িচালক হয়েই তিনি শিক্ষিত করেছেন তার দু’ ছেলেকে। এক ছেলে জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (বিচারিক হাকিম), অন্য ছেলে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত।

তবে তার দু’সন্তানের একজনও খোঁজ নেয়না বাবা-মায়ের। এমনকি কোন সম্পর্কই রাখেনি দরিদ্র বাবা-মায়ের সাথে। শুনেছেন তার ম্যাজিস্ট্রেট ছেলে নিজে নিজেই খুলনায় বিয়ে করেছেন। তার শ্বশুর নাকি একজন সচিব। আর তাই বেঁচে থাকার তাগিদে শেষ বয়সে স্ত্রীকে নিয়ে বাধ্য হয়েই বেছে নিয়েছেন ভিক্ষাবৃত্তি।

মফিজউদ্দিনের বড় ছেলে রাসেল পাঠান (যাকে ম্যাজিস্ট্রেট দাবি করা হয়েছে) চ্যানেল আই অনলাইনকে বলেন, ‘বাবা ছিলেন বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের গাড়িচালক। বেশ স্বচ্ছল ছিলাম আমরা। কিন্তু আমরা ততোটা ভালো চাকুরি না পাওয়ায় বাবার হাতে বেশি টাকা দিতে পারি না। যে কারণে উনি নিজের ইচ্ছেমত খরচ করতে পারেন না।’

রাসেল পাঠান মনে করেন ভাল অবস্থা থেকে হঠাৎ এ আর্থিক অনটনই তার বাবার মানসিক বিপর্যস্ততার মূল কারণ।

ভালুকা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ কামাল চ্যানেল আই অনলাইনকে জানান, ফেসবুকের মাধ্যমে মফিজউদ্দিনের সম্পর্কে জেনে তার বাড়িতে গিয়েছিলেন। কথা বলে বুঝতে পারেন বৃদ্ধ বাবা বয়সের ভারে মানসিকভাবে বিছুটা বিপর্যস্ত।

মফিজউদ্দিনের পারিবারিক বিষয়ে তিনি বলেন, ‘দু্ই ছেলেই বাবা-মায়ের খোঁজ রাখেন। তবে অর্থিকভাবে ততোটা স্বচ্ছল না তারা। এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সহায়তা করার কথা বলা হলেও মফিজউদ্দিন পাঠানের দুই ছেলে মানসম্মানের তাগিদে কোনো সহায়তা নিতে রাজি হয়নি।’ সুত্র :: চ্যানেলআই

পাঠকের মতামত

Single Page Bottom

৮ বছরে পা হারিয়েছে ৪৪, নিহত ৫বিপদ জেনেও মাইন পুতে রাখা জায়গায় যাচ্ছে সীমান্তের লোকজন

ওমর ফারুক হিরু :: মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী এলাকা বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি পয়েন্টে প্রায়ই ঘটছে মাইন বিস্ফোরনের ঘটনা। ...

রামুতে ইয়াবাসহ নারী আটক

কক্সবাজারের রামুতে চেকপোস্টে অভিযান চালিয়ে ১০ হাজার ২০০ ইয়াবাসহ এক রোহিঙ্গা নারীকে আটক করেছে বর্ডার ...

টেকনাফে চিকুনগুনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব; আতংকিত না হওয়ার পরামর্শ স্বাস্থ্য বিভাগের

জসিম উদ্দিন টিপু,টেকনাফ:: টেকনাফজুড়ে ঘরে ঘরে চিকনগুনিয়া রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। প্রায় বাড়ী-ঘরে শিশু থেকে ...

নিম্নচাপের প্রভাব: কক্সবাজার সৈকতে ভাঙন, লোকালয়ে জোয়ারের পানি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানি ঢুকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের কিছু এলাকা ...
Single Page Footer