প্রকাশিত: ০৪/০৪/২০১৮ ১:১৮ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৪:৩৭ এএম

রংপুর: স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিকের পরকিয়ায় খুন হয়েছেন রংপুরে নিখোঁজ আইনজীবী ও আওয়ামী লীগ নেতা রথীশ চন্দ্র ভৌমিক। নিখোঁজের পাঁচ দিন পর মঙ্গলবার মধ্যরাতে স্ত্রীর দেয়া তথ্যে রংপুর শহরে রথীশের বাড়ির আধা কিলোমিটার দূরে তাজহাট মোল্লাপাড়া এলাকার নির্মাণাধীন একটি বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে র‌্যাব।
রথীশের ভাই সাংবাদিক সুশান্ত ভৌমিক সুবল লাশটি তার ভাইয়ের বলে শনাক্ত করেন। রথীশের স্ত্রী স্নিগ্ধা ভৌমিকের দেয়া তথ্যে র‌্যাব লাশ উদ্ধার করে।
এঘটনায় রথীশের স্ত্রী স্নিগ্ধা ও তার প্রেমিক কামরুলকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে স্নিগ্ধা ভৌমিকের সঙ্গে তার এক সহকর্মী শিক্ষকের সম্পর্কের জেরে রথীশ হত্যাকা- ঘটেছে।
যে বাড়িতে রথীশের লাশ পাওয়া গেছে, তা স্নিগ্ধার সহকর্মী তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল ইসলামের ভাইয়ের বাড়ি।
পাঁচ দিন আগে হত্যার পরই লাশটি নির্মাণাধীন বাড়িটিতে মাটিচাপা দেওয়া হয়েছিল।
রংপুর জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেকও লাশ উদ্ধারের সময় উপস্থিত ছিলেন।
রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের আইনবিষয়ক সম্পাদক রথীশ জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি এবং মাজারের খাদেম রহমত আলী হত্যা মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন।
হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি, জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতির দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।
গত শুক্রবার সকাল ৬টার দিকে নগরীর বাবুপাড়া এলাকার বাড়ি থেকে বের হয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে মোটরসাইকেলে করে শহরের দিকে রওনা হয়েছিলেন রথীশ। এরপর থেকে তার সন্ধান ছিল না।
অন্তর্ধানের পর ট্রাস্টের নেতারা সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন, যুদ্ধাপরাধের বিচার নিয়ে জামায়াতে ইসলামী কিংবা জঙ্গি গোষ্ঠী কিংবা ভূমিদস্যুরা রথীশকে ধরে নিয়ে গেছে।

কিন্তু সোমবার তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল ইসলাম ও মতিয়ার রহমানকে আটকের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্ত ভিন্ন দিকে মোড় নেয়।
তাজহাট উচ্চ বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ছিলেন রথীশ। তার স্ত্রী দীপা এই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তৌহিদা খাতুন জানান।
সোমবার সন্দেহভাজন নয়জনকে গ্রেপ্তারের পর কামরুল ও মতিয়ারকে আটক করা হলেও তখন কিছু জানায়নি পুলিশ। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তাদের গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করেন কোতোয়ালি থানার ওসি বাবুল মিঞা।
তখন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, “যাদের আটক করা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদে তারা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। সে তথ্য ধরেই আমরা কাজ করছি। উদ্ধারে বিলম্ব হলেও ভালো ফল পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।”
এর মধ্যে দুপুর থেকে রথীশের বাড়ির পাশের ডোবাটিতে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। রথীশের চাচাত ভাই লিটন ভৌমিকের গোয়াল ঘরের পাশের আট-দশ ফুট গভীর এই ডোবায় গোবরসহ বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনা ছিল।
সেখানে বিকালে আবর্জনার নিচে হালকা রক্তের ছিটা লাগানো সাদা একটি শার্ট পাওয়ার পর তা মাহিগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়িতে নেওয়া হয়।
রথীশের ছোট ভাই সুশান্ত তা দেখে বলেন, “শার্টটিতে রক্তের ছিটার মতো লেগেছিল। তবে সেটি ভাইয়ের নয়।”
রাতে ডোবায় তল্লাশি অভিযান পুলিশ স্থগিত রাখার খানিক পর তাজহাটে র‌্যাবের অভিযানে কামরুলের ভাইয়ের নির্মাণাধীন বাড়িতে একটি লাশ পাওয়ার খবর আসে।
রথীশ নিখোঁজ হওয়ার পর সুশান্ত বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। তবে তাতে কাউকে আসামি করা হয়নি।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির আশা বাংলাদেশ-গাম্বিয়ার

রোহিঙ্গা গণহত্যার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে করা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তিতে আশাবাদ ব্যক্ত করেছে বাংলাদেশ ও গাম্বিয়া। ...

কারামুক্ত হলেন মামুনুল হক

হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক কারামুক্ত হয়েছেন। শুক্রবার (৩ মে) সকাল ...

সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উখিয়ায় হবে উন্মুক্ত কারাগার, শিগগির নির্মাণ শুরু

উন্নত দেশের ন্যায় বাংলাদেশে উন্মুক্ত কারাগার নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ...