প্রকাশিত: ১৪/১০/২০১৭ ৭:১৪ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১২:১৭ পিএম

ডেস্ক রিপোর্ট ::
রাখাইনের উন্নয়ন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে সেখানকার ত্রাণ কার্যক্রম নিয়ে নতুন পরিকল্পনা নিয়েছেন মিয়ানমারের ডি-ফ্যাক্টো সরকারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি। সু চি’র একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে রয়টার্সের শনিবারের এক প্রতিবেদনে এই দাবি করা হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ওই উপদেষ্টা সু চির খুবই ঘনিষ্ঠ। বৃহস্পতিবার রাতে মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া ভাষণে সু চি প্রতিশ্রুতি দেন, রাখাইনের উত্তেজনা নিরসনের করণীয় নির্ধারণে তিনি মানবিক সহায়তা সংগঠন, ব্যবসায়ী নেতা এবং সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদেরকে আমন্ত্রণ জানাবেন।

২৫ আগস্ট নিরাপত্তা বাহিনীর চেকপোস্টে বিদ্রোহীদের হামলার পর ক্লিয়ারেন্স অপারেশন জোরদার করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। ইন্টারন্যাশনাল অরগানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইএমও)’র সবশেষ হিসেব অনুযায়ী রাখাইনের সহিংসতা থেকে বাঁচতে এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫ লাখ ৩৬ হাজার মানুষ বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

‘তার একটাই চিন্তা। কেমন করে এই সংকট দূর করা যায়। কেমন করে সেনাবাহিনীর কাছ থেকে ত্রাণ কার্যক্রম, সমন্বয় আর পুননির্মাণের ক্ষমতা বেসামরিক সরকারের হাতে দেওয়া যায়।’ টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেন সু চির ওই ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা। তিনি জানান, সু চি নিজেকে ওই কাজেই নিয়োজিত রেখেছেন।

রয়টার্স জানিয়েছে, সু চির সঙ্গে ওই উপদেষ্টার ঘনিষ্ঠতা সম্পর্কে তার (সু চি) অন্য কোনও প্রতিনিধির কাছে থেকে কোনও তথ্য পায়নি তারা। তবে দু’জন বিশেষজ্ঞ দুজনের ঘনিষ্ঠতার ব্যাপারটি রয়টার্সকে নিশ্চিত করেছেন।

এরআগে শুক্রবার ওই উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানায়, এই সংকট উত্তোরণে রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা যথেষ্ট পরিমাণে প্রত্যয়ী। শুক্রবার রয়টার্সকে ওই উপদেষ্টা জানিয়েছেন, সু চি চান না পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হোক। সতর্কতার সঙ্গে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে চান। তিনি বলেছেন, ‘পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে, তা দেখে সু চি ভেঙে পড়েছেন। তিনি এ নিয়ে ভীষণ উদ্বিগ্ন। আমি জানি, তার এই উদ্বেগের কথা প্রকাশ্যে আসেনি। তবে আমি জানি, তিনি নিশ্চয় পরিস্থিতির উত্তোরণ ঘটাবেন।`

সু চিকে মিয়ানমারের ক্ষমতাধর ব্যক্তি বলে মনে করা হলেও তিনি আসলে সেখানকার সামরিক বাহিনীর কাছে ‘অসহায়’। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স তাদের এক প্রতিবেদনে ৬ জন কূটনীতিকের দাবির বরাত দিয়ে শুক্রবার জানিয়েছে, সু চি রোহিঙ্গাদের প্রতি সহানুভূতিশীল, আর রাখাইন হত্যাকাণ্ডের মূল ক্রীড়ানক সেনাপ্রধান মিন অং। রোহিঙ্গা সংকটে সু চির হৃদয় ভেঙে পড়েছে বলে তার একজন উপদেষ্টাও রয়টার্সের কাছে এইকদিনে দাবি করেছেন। তবে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের সাম্প্রতিক এক অনুসন্ধানে সু চির রোহিঙ্গা ভীতির কথা উঠে আসে।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের অনুসন্ধান বলছে, সু চি সরকারে এসে আরও বেশি করে সেনাক্ষমতার হাতে বন্দি হয়ে পড়েছেন। ‘এশিয়ার ম্যান্ডেলা’ খ্যাত এই নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ীর ক্ষমতাহীনতাকে সেনাবাহিনী ও তার মধ্যকার স্বার্থগত বন্ধন বলে উল্লেখ করা হয়েছে ওই প্রতিবেদনে। সু চির উপদেষ্টা যা বলছেন, তা সত্যি হলে সেই স্বার্থগত বন্ধন ক্ষুণ্ণের আশঙ্কাই জোরালো হবে।

পাঠকের মতামত