ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১৭/০৪/২০২৩ ১০:৪৭ এএম

শিপ্ত বড়ুয়া, রামু (কক্সবাজার)

কক্সবাজারের প্রধান নদী বাঁকখালী মারাত্মক দূষণে ধুঁকছে। সম্প্রতি দেখা গেছে, রামু উপজেলার রামু ফকিরা বাজারের সব ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে এই নদীতেই। উপজেলার প্রায় ১২টি পয়েন্টে নানান ধরনের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে নদীতে।

গতকাল শনিবার বিকেলে সরেজমিন দেখা যায়, রামু ফকিরা বাজার থেকে পাঁচটি পয়েন্ট, চাকমারকুল, চেরাংঘাটা, হাইটুপি, আতিক্কা বিবির ঘাট, কাউয়ারখোপের দুটিসহ একাধিক জায়গা দিয়ে বাঁকখালী নদীতে ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।

নিয়মিত এসব নানান ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে যেমন নদীর জমি ভরাট হচ্ছে, তেমনি দিন দিন দূষিত হচ্ছে নদীটি। পাশাপাশি ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়ছে নদীর পানি। শুষ্ক মৌসুমে নদীতে পানি না থাকায় আরও বেশি ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে ও বিভিন্ন স্থানে নদীর বুকেই তামাক চাষ করা হচ্ছে বলে জানান স্থানীয়রা।

এদিকে ফকিরা বাজারের বর্জ্য বাঁকখালী নদীতে কেন ফেলা হচ্ছে—জানতে চাইলে রামু ফকিরা বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সদ্য সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী মো. আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ফকিরা বাজার ঐতিহ্যবাহী বাজার। সুষ্ঠু বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকায় অনেকে নদীতে বর্জ্য ফেলছে। তবে শিগগির সবার সঙ্গে সমন্বয় করে নদীতে বর্জ্য না ফেলার জন্য আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা করতে হবে এবং এ জন্য প্রশাসনের সহযোগিতাও দরকার।’

বাঁকখালী নদী রক্ষায় এর আগেও অবৈধ দখল উচ্ছেদ, বালু উত্তোলন বন্ধ ও তামাক চাষসহ নানান বিষয়ে উচ্চ আদালতের বিভিন্ন নির্দেশনা থাকলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারির অভাবে মরতে বসেছে নদীটি।

প্রায় সময় বাঁকখালী নদী দূষণ রোধে কক্সবাজারের বিভিন্ন পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা সোচ্চার থাকলেও কেন দূষণ বন্ধ হচ্ছে না—এমন প্রশ্নে কক্সবাজার পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক কলিম উল্লাহ বলেন, ‘নদী রক্ষায় প্রশাসনের বিভিন্ন উইংয়ের কাজ থাকলে তাদের সমন্বয়হীনতার অভাবে বাঁকখালী নদী দূষণ ও দখল দুটোই হচ্ছে। এই প্রধান নদী রক্ষা করতে চাইলে জেলা নদী রক্ষা কমিটিকে আরও সোচ্চার হতে হতে হবে।’

তিনি//// আরও বলেন, ‘কক্সবাজার জেলাজুড়ে বাঁকখালী নদীর আরও প্রায় ৩০টি পয়েন্টে নদীর বুকেই নানান পচনশীল ও অপচনশীল প্লাস্টিক ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে।’

উপজেলার বাঁকখালী নদীর প্রায় ১২টি পয়েন্টে নানান ধরনের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে
উপজেলার বাঁকখালী নদীর প্রায় ১২টি পয়েন্টে নানান ধরনের আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। ছবি: আজকের পত্রিকা
শুধু ময়লা-আবর্জনা নয়, কক্সবাজারের রামু উপজেলার কাউয়ারখোপ, গর্জনিয়া, কচ্ছপিয়া, রাজারকুল, মনিরঝিলসহ একাধিক পয়েন্টে বাঁকখালী নদীর বুকেই করা হয়েছে তামাক চাষ। তামাক কোম্পানিগুলো সরাসরি বীজ, সার, নগদ অর্থ ঋণ দিয়ে তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ করায় বেড়েছে তামাক চাষ—এমনটাই বলছেন গর্জনিয়ার তামাকচাষি মো. ইউসুফ। তিনি বলেন, ‘তামাক চাষে কোম্পানিগুলো সহজে ফলনের আগেই অধিকাংশ বিক্রয়মূল্য দিয়ে দেন। যার দরুন টাকাগুলো কাজে লাগানো যায়। সুযোগ-সুবিধা বেশি থাকায় তামাক চাষ করছি।’

নদীর বুকে তামাক চাষের ফলে ভূগর্ভস্থ পানির দূষণ, নদীতে থাকা নানান প্রজাতির মাছের প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট, মাটির দূষণসহ বাঁকখালী নদীর বিবিধ স্থায়ী দূষণ হচ্ছে বলে জানান নদী নিয়ে কাজ করা সংগঠন রিভারাইন পিপলের মহাসচিব শেখ রোকন। তা ছাড়া বর্জ্য ফেলার মাধ্যমে নদীর জমি দখলের চেষ্টাও করেন অনেকে এমনটাও বলছেন এই নদী বিশেষজ্ঞ।

নদী দূষণ নিয়ে কী ব্যবস্থা নিচ্ছেন—জানতে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক ফরিদ আহমেদ ও উপপরিচালক মুহাম্মদ হাফিজুর রহমানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কল করেও পাওয়া যায়নি।

পাঠকের মতামত

বদি যদি আমাকে সন্তান হিসেবে মেনে নেন, তাহলে মনোনয়ন প্রত্যাহার করবো

কক্সবাজার-৪ (টেকনাফ-উখিয়া) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির ...

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও ফোরামের গাড়ির ধাক্কায় শিশুর মৃত্যু

কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও ফোরামের একটি গাড়ির (চট্টমেট্রো চ-১১৮৬৫৯) ধাক্কায় দু’বছরের এক রোহিঙ্গা শিশুর ...