প্রকাশিত: ২৮/০৭/২০১৭ ২:০৭ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৪:০৫ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
পার্বত্য বান্দরবানের গহীন অরণ্যে জলপাই রঙের পোশাকধারী শতাধিক সদস্যের একটি বাহিনীর আনাগোনা নিয়ে এলাকায় আতংক ছড়িয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার বাইশারী-দোছড়ি সীমান্তের অদূরে সাপমারাঝিরি-লেদুখাল নামক এলাকায় এই বাহিনীটির উপস্থিতি দেখতে পায় স্থানীয় কৃষকরা। তবে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বিষয়টি প্রকাশ্যে স্বীকার না করলেও রাতেই বিজিবির অতিরিক্ত সৈনিক পাহাড়ি অরণ্যে অভিযানে যেতে দেখেছেন বলে স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন।

প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, কয়েক মাস ধরে জলপাই রঙের পোশাক পরিহিত স্বল্প সংখ্যক সদস্যের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় বিচরণের খবর পাওয়া গেলেও তিন দিন ধরে দোছড়ি ইউনিয়নের ছাগলখাইয়া বিজিবির আওতাধীন সাপমারাঝিরি-লেদুখাল এলাকায় অন্তত শতাধিক অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীর আনাগোনা দেখতে পায় স্থানীয়রা। অত্যাধুনিক অস্ত্র শস্ত্রে সজ্জিত ওই বাহিনীটি নিজেদের ‘আরাকান পার্টি’ হিসেবে স্থানীয়দের পরিচয় দিচ্ছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ‘অ, খ, ন আদ্যক্ষর নামের ব্যক্তি এ প্রতিবেদককে জানান, জলপাই রঙের পোশাকধারী সন্ত্রাসীরা আরাকান পার্টি পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন ক্ষেত খামার থেকে খাবার হিসেবে ফলমূল নিয়ে গেছে। পরে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে জানানো হলে বৃহস্পতিবার রাতে ৩১বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল আনোয়ারুল আজিমের নেতৃত্বে বিজিবি পৃথক অভিযানে নামে।

নাইক্ষিংছড়ির বাইশারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আলম জানান, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার রাবার ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষ অপহরণ ও চাদাঁবাজিতে অতিষ্ঠ। কয়েকমাস আগে হাঙ্গার্স পিপলস পার্টি (এইচপিপি) নামক একটি উগ্রপন্থী গ্রুপের পক্ষ থেকে বিভিন্ন রাবার বাগানে চিঠি পাঠানো হয়। বিষয়টি তিনি উপরের মহলে জানিয়ে এলাকার মানুষের জানমালের নিরাপত্তার জন্য গহীন অরণ্যে সেনা-বিজিবির যৌথ অভিযান জোরদারের দাবি তোলেন।

উগ্রপন্থী এ সন্ত্রাসী গ্রুপটিকে নাইক্ষ্যংছড়ি-লামা সীমান্তের তিরের ডিব্বা এবং আলীক্ষ্যং-ঈদগড় ও বাইশারী মৌজায় আনাগগোনা দেখা গেলেও মূলত তারা ছাগলখাইয়ার অদূরে সাপমারাঝিারি-লেদুমুখ এলাকায় প্রায় সময় অবস্থান করে থাকতে পারে বলে মনে করছেন পাহাড়ের কাঠুরিয়ারা।

এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নাইক্ষ্যংছড়ি বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেনেন্ট কর্নেল আনোয়ারুল আজিম জানান, পাহাড়ি এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সবসময় অভিযান চলে। তবে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে বিজিবির অভিযান চালানো হচ্ছে।

অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রমকে কেন্দ্র করে মিয়ানামার বিদ্রোহী উপজাতীয় কিছু জনগোষ্ঠী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা বাংলাদেশে বসবাসরত উপজাতীদের আত্মীয়স্বজন পরিচয় দিয়ে ভোটার হওয়ার জন্য কৌশল অবলম্বন করছে। যার কারণে শুক্রবার সীমান্তের দোছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মো: হাবিবুল্লাহকে বিজিবি তলব করে সর্তকর্তার সাথে কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশনা দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, বিগত ২০০৩ সাল নাগাদ সাপমারাঝিরি-লেদুখাল নামক ওই এলাকায় মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী আরাকান আর্মি (এএ) হেডকোয়াটার হিসেবে ব্যবহার করে। তৎসময় বিজিবি ব্যাপক অভিযানে শত শত ভারী অস্ত্র উদ্ধার করে আস্তানা গুড়িয়ে দিয়েছিল। বর্তমানে একই স্থানে জলপাই রঙের পোশাক পরিহিত সন্ত্রাসী বাহিনীর আনাগোনা নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই আতংকে ছড়িয়ে পড়েছে সীমান্তের মানুষের মাঝে। সুত্র: বিবার্তা

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় কোরিয়ার ৫০ লাখ ডলার অনুদান

কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাকে (আইওএম) ৫০ লাখ মার্কিন ...

পল্লীবিদ্যুৎকে দায়ী করছে বনবিভাগবৈদ্যুতিক ফাঁদে উখিয়ায় বন্যহাতি নিধন

কক্সবাজারের উখিয়ায় আবারো বৈদ্যুতিক ফাঁদে পড়ে বন্যহাতির মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকালে উপজেলার রাজাপালং ...

টেকনাফে বাজার সমুহে যানজটমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান জোরদারের দাবী

টেকনাফের বিভিন্ন বাজার সমূহে প্রতিনিয়ত যানজটে জনজীবন অতীষ্ট হয়ে পড়েছে সর্বস্তরের মানুষ। যানজটের জন্য ব্যবসায়ীসহ ...