
উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
রোহিঙ্গাদের আক্রমণ থেকে স্থানীয় জনগণকে নিরাপত্তা দিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো কাঁটাতারের বেষ্টনি দিয়ে ঘিরে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়। এজন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে ৩ কোটি ১৯ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
সূত্র জানায়, মিয়ানমারের সামরিক সরকারের অত্যাচারে গত ২৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত ৬ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। কক্সবাজার জেলা সদর, উখিয়া, রামু ও টেকনাফে ১১টি আশ্রয়কেন্দ্রে এরা অবস্থান করছে। সরকার এদের সম্পূর্ণ মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছে। বর্তমানে বিভিন্ন দেশ থেকে শরণার্থীদের জন্য ত্রাণ সামগ্রী আসলেও শুরুতে সরকার নিজ তহবিল থেকে এদের আশ্রয়সহ খাবার সরবরাহ করছিল। ত্রাণ বিতরণ নিয়েও রোহিঙ্গারা নানা বিতর্কের সৃষ্টি করে। আর এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সরকারের ব্যাপক সমালোচনা করা হয়।
সূত্র জানায়, স্থানীয় জনগণের সঙ্গে একাধিকবার রোহিঙ্গাদের সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়া এবং নানা ধরনের আইনশৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে সরকার রোহিঙ্গাদের দেখভালের দায়িত্ব সেনাবাহিনীর হাতে তুলে দেয়। সেনাবাহিনী দায়িত্ব নেওয়ার পর রোহিঙ্গাদের নিবন্ধনের মাধ্যমে একটি ডাটাবেজ তৈরির কাজে হাত দেয়। এ পর্যন্ত ৩ লাখের বেশি রোহিঙ্গার নিবন্ধন সম্পন্ন করেছে সেনাবাহিনী।
সূত্র জানায়, শুরুতে মানবপাচার এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণের দিকে বেশি নজর দেওয়া হয়েছিল। অনেক রোহিঙ্গা স্থানীয়দের সঙ্গে যোগসাজশে এ কাজগুলো করছিল। সেনাবাহিনী দায়িত্ব নেওয়ার পর সেগুলো অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু বিচ্ছিন্নভাবে সম্প্রতি স্থানীয়দের সঙ্গে বেশকিছু ঘটনা ঘটে, যা যেকোনো সময় বড় আকার ধারণ করতে পারে। এরই মধ্যে অনেকেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে। এমনকি আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পানি সরবরাহের জন্য টিউবওয়েল স্থাপনের কাজে নিয়োজিত কর্মীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সূত্র জানায়, গত ২৮ অক্টোবর রোহিঙ্গাদের দ্বারা সংঘটিত এক সন্ত্রাসী ঘটনায় বাংলাদেশি এক দিনমজুর আহত হন। চিকিৎসার জন্য তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর আব্দুল জব্বার নামের ওই দিনমজুর মারা যান। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে জিয়াবুল হক (২২) এবং তার চাচি বাওলা খাতুনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, সন্ধ্যার পর যাতে রোহিঙ্গারা তাদের ক্যাম্প থেকে বের হতে না পারে এবং স্থানীয় কোনো ব্যক্তি যাতে ক্যাম্পের ভেতর ঢুকতে না পারে, সেজন্য ক্যাম্পগুলো কাঁটাতারের বেষ্টনির মধ্যে আনার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এসব ক্যাম্পের মধ্যে রয়েছে- কুতুপালংয়ের বর্ধিতাংশ, কুতুপালং, লেদা, নয়াপাড়া, শ্যামলাপুর, হাকিমপাড়া, ঠেংখালী, জামতলি, ময়নারঘোনা এবং চাকমারকুল।
তিনি আরো বলেন, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে টাকা বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তার অনুমোদন পাওয়া গেলেই দ্রুত সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পগুলো কাঁটাতারের বেষ্টনির মধ্যে আনার কাজ শুরু করা হবে।
রাইজিঙবিডি
পাঠকের মতামত