প্রকাশিত: ০৪/০৯/২০১৭ ৭:৩৮ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ২:০৭ পিএম

শফিক আজাদ,উখিয়া নিউজ ডটকম::
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গণহত্যা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এবং আন্তর্জাতিক মানবতা বিরোধী ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর এ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ভাবেই মিয়ানমারে গণহত্যা চালাচ্ছে। এই গণহত্যার আন্তর্জাতিকভাবে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।
মিয়ানমারে মানবতা বিরোধী অপরাধে যারা জড়িত তাদেরকে আন্তর্জাতিক আইনের আওতায় আনতে জাতিসংঘকে উদ্যোগ নেয়ার দাবীও জানান তিনি। রবিকির কক্সবাজারের কুতুপালংয়ে আশ্রিত রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দা হিন্দু শরণার্থীদের আশ্রয় স্থল পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের আরো বলেন, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মিয়ানমার সরকারের সাথে কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনা চলছে। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক ভাবেও বিষয়টি উত্তাপনের চেষ্টা হচ্ছে।
এ্যাডভোকেট রান দাশ গুপ্ত বলেন, সম্প্রতি মিয়ানমারে হাজার হাজার মানুষ হত্যা করা হয়েছে। তাদের হত্যাকান্ড থেকে বাঁচতে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। ২৭ আগষ্ট পরবর্তী বার্মা সীমান্ত অতিক্রম করে সাড়ে ৫শ জনের মতো নিগৃহীত হিন্দু শরণার্থী কুতুপালং এসে আশ্রয় নিয়েছে। তন্মধ্যে ১০০ জনের মতো আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে।
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে অনুপ্রবেশ করা হিন্দু শরণার্থীদের রবাত দিয়ে তিনি আরো বলেন, ‘কালো মুখোশধারীরাই’ হিন্দুদের উপর হামলা করে। হামলাকারীরা বাংলায় এবং বার্মিজ ভাষায় কথা বলেছে। মুখোশধারীদের হাতে বন্দুক, বোমা, ছোরা, দা-খুন্তিও ছিলো বলেন তিনি জানান।
তবে কালো পোশাকধারীদের সম্পর্কে সঠিক কিছু বলতে পারেনি কেউ। হিন্দু পল্লী গুলোর আয়তন ভেদে ২০০/৩০০ কালো মুখোশধারীরা হামলা চালায় নির্যাতিতরা জানিয়েছে। মিয়ানমারের ফকিরা বাজারে হিন্দুদের মধ্যে ৮৬জনকে কেটে ফেলা হয়েছে। যাদের খোঁজ এখনো পর্যন্ত পাওয়া যায়নি ।
পানিরছড়া গ্রামে একটু ব্যতিক্রম দেখা গেছে হিন্দু পল্লীর পার্শ্ববর্তী মগদের একটি কেয়াং ও পাড়ায় বোমা মেরে আগুন ধরিয়ে দেয়। হিন্দুদের বাড়ীঘর অক্ষত রেখে হিন্দুদের উদ্ধার করে বাংলাদেশে ঢুকতে সহায়তা করেছে কিছু মুসলিম ছেলে। গণহত্যা, নির্যাতন, নিপীড়নের ভয়ে হিন্দু, বৌদ্ধ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের যে সকল মিয়ানমার নাগরিকরা স্বদেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছে। তাদেরকে স্বদেশে ফিরিয়ে নেওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ সুনিশ্চিত করতে হবে মিয়ানমার সরকারকে। মিয়ামারে গণহত্যার বিরুদ্ধে তিনি জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে সোচ্চার হয়ে মানবতাবাদী ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহবান জানান। আর বাংলাদেশে আশ্রিতদের জীবন রক্ষায় সরকার ও আন্তর্জাতিক সংস্থাকে এগিয়ে আসার আহবান জানান।
নির্যাতিত আশ্রিত হিন্দু শরণার্থীদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন রানা দাশগুপ্ত। সাথে ছিলেন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টি অধ্যাপক প্রিয়তোষ শর্মা চন্দন, হিন্দু-বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদ, চট্টগ্রাম মহা নগরীর সভাপতি পরিমল কান্তি চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক তাপস হোড়, কক্সবাজার জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীষ্টান ঐক্য পরিষদের সহ সভাপতি এডভোকেট দীপংকর বড়ুয়া পিন্টু, কক্সবাজার জেলা পুজা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি এড. রনজিত দাশ, সাধারণ সম্পাদক বাবুল শর্মা, উখিয়া উপজেলা উদ্যাপন পরিষদের সভাপতি স্বপন শর্মা রনি, সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রবীন্দ্র দাশ রবি।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজারে নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ২০২৪ উপলক্ষে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বক্তারা কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর তাগিদ

নারী সহায়ক কর্মপরিবেশ তৈরি করে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর পাশাপাশি বৈষম্যহীন ...

কক্সবাজারে কর্মরত এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে মামলা

কক্সবাজারের ইউনিটস আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে (এপিবিএন) কর্মরত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফখরুল হাসানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে ...

ইসলামী উইন্ডো থেকে গ্রাহকের ১৮ কোটি টাকা আত্মসাৎ সোনালী ব্যাংক কক্সবাজারের উপমহাব্যবস্থাপকসহ টাকা লুট করলেন কর্মকর্তারা

আলমগীর কবির ২০১৯ সালে সোনালী ব্যাংক থেকে একটি ঋণের জন্য আবেদন করেন। আবেদন যাচাই বাছাই ...

সাবেক ৩০ ডিসি-ইউএনওসহ টেকনাফের সাবেক ইউএনওকে তলব, নির্বাচন সংস্কার কমিশনের বৈঠক আজ

বিগত সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রশ্নবিদ্ধ তিনটি নির্বাচনে কারচুপির তথ্য ...

দেশীয় অস্ত্র নিয়ে কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ

ঢাকা থেকে বান্দরবান যাওয়ার পথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়কদের গাড়িবহরে হামলার অভিযোগ উঠেছে। রোববার ...