প্রকাশিত: ৩১/১০/২০১৭ ৮:২৩ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১১:৩৯ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
প্রতিবছর ১ অক্টোবর থেকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত ছয় মাস টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়। এই সময় নাফ নদী ও সাগরপথে টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিন পর্যন্ত সরাসরি জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেয় প্রশাসন। দ্বীপে যাওয়ার জন্য মিয়ানমারের জলসীমার কিছুটা অংশ এখন পাড়ি দিতে হয় জাহাজকে। ফলে নিরাপত্তার কারণে এবার ১ অক্টোবর থেকে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়নি।

পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই এটি বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন হোটেল-মোটেল ও জাহাজ মালিকেরা। টেকনাফ ও সেন্ট মার্টিনের পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হোটেল-মোটেলের তিন শতাধিক কর্মীর এখন অলস সময় কাটছে। এ ছাড়া সাতটি জাহাজের আরও প্রায় ১০০ শ্রমিকও বেকার বসে আছেন।

সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ১০৬টি হোটেল, মোটেল ও কটেজ রয়েছে। পর্যটন মৌসুমে দিনে গড়ে ৩ হাজার পর্যটক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যঘেরা এই দ্বীপ ভ্রমণে যায়। সাধারণত শুক্র, শনিবারসহ সরকারি ছুটির দিনে দেড় হাজার মানুষ এই দ্বীপে রাত কাটায়।

টেকনাফ উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, নাফ নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় গত কয়েক বছরে একাধিক চর জেগে ওঠে। যে কারণে সেন্ট মার্টিন যেতে এখন মিয়ানমারের জলসীমার প্রায় এক কিলোমিটার অংশ পার হতে হয়। টেকনাফ থেকে সেন্ট মার্টিনের দূরত্ব নদী ও সাগরপথে ৩৪ কিলোমিটার (এর মধ্যে সাগরে ১৩ কিলোমিটার)।

সেন্ট মার্টিন পর্যটনশিল্প রক্ষা ও উন্নয়ন পরিষদের আহ্বায়ক শিবলুল আজম কোরেশী সাংবাদিকদের বলেন, প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দ্বীপের প্রায় ১০ হাজার লোকই বছরের ছয় মাস পর্যটনশিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকে। স্থানীয় বাসিন্দারা পর্যটন মৌসুমে হোটেল-মোটেল, রেস্তোরাঁয় কাজ করেন। এখন সবাই বেকার বসে আছেন।

সেন্ট মার্টিন হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর পাটোয়ারী বলেন, ‘এক মাস চলে গেছে। মাছি মারছে হোটেলগুলো। কক্সবাজারেও সেভাবে পর্যটক নেই। যারা আছেন তাঁদের বেশির ভাগ রোহিঙ্গা সমস্যার কারণে আসা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি ও উন্নয়ন সংস্থার লোকজন।’

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন ছিদ্দিক সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গা পরিস্থিতির কারণে আপাতত সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণ বন্ধ রয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন তাঁরা। পর্যটনশিল্পের বিষয়টিও ভেবে দেখা হচ্ছে।

হোটেল-মোটেলের কর্মীদের মতো টেকনাফে অলস সময় পার করছেন জাহাজের শ্রমিকেরা। গত বৃহস্পতিবার টেকনাফ নাফ নদীর দমদমিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, কেয়ারি ট্যুরসের দুটি জাহাজ কেয়ারি সিন্দবাদ ও কেয়ারি ক্রুজ অ্যান্ড ডাইন নোঙর করা। জাহাজ দুটিতে নতুন করে রং করা হয়েছে। জাহাজের ভেতরে কয়েকজন কর্মীকে দেখা গেল দাবা খেলতে।

কেয়ারি ট্যুরসের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহ আলম সাংবাদিকদের বলেন, অনুমতি পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছেন তাঁরা। জাহাজ না চলায় তাঁরা ক্ষতির শিকার হচ্ছেন।

কেয়ারি ছাড়াও গ্রিনলাইন, এমভি বাঙালিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সাতটি জাহাজ এই দ্বীপে আসা-যাওয়া করে। পর্যটকেরা কক্সবাজার থেকে প্রথমে টেকনাফ ও পরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণে যায়। দ্বীপে ভ্রমণের আগে টেকনাফে কেউ কেউ এক রাত অবস্থান করে নাফ নদী, শাহপরীর দ্বীপ এবং মাথিনের কূপ ঘুরে দেখে। এ মাসে এখন পর্যন্ত কোনো পর্যটকই পাননি বলে জানান টেকনাফের হোটেল ডি প্লাজার ব্যবস্থাপক আবদুল খালেক। তিনি বলেন, যেসব অতিথি এ মাসে এখন পর্যন্ত এসেছেন তাঁদের কেউ সাংবাদিক, কেউবা ব্যবসায়ী।

সূত্র: প্রথম আলো

পাঠকের মতামত

শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে পোস্ট, এসিল্যান্ড প্রত্যাহার

শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনিরা ...

আলোচিত স্কুলছাত্রী টেকনাফের তাসফিয়া হত্যা: এবার তদন্ত করবে পুলিশ

চট্টগ্রামের আলোচিত স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিন হত্যা মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনের ...