![](https://www.ukhiyanews.com/wp-content/uploads/2017/03/Pic-201.jpg)
বাসচালকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশের প্রতিবাদে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাকে চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে জেলাব্যাপী সর্বস্তরের মানুষকে। ভোর ৬ টা থেকে কক্সবাজার শহর থেকে দুরপাল্লার কোন বাস ছাড়তে দেখা যায় নি। ফলে আটকে পড়েছে হাজার হাজার পর্যটক ।
সরেজমিনে কক্সবাজার বাস টার্মিনাল এলাকা ঘুরে দেখা যায়, পরিবহন ধর্মঘটের বিষয়টি অনেকেই অবগত না থাকায় সকাল থেকে যাত্রীরা বাসস্ট্যান্ডে ভিড় জমাতে থাকে। এতে কাউন্টারের সামনে যাত্রীরা বাসের অপেক্ষায় বসে আছেন। টার্মিনালের অধিকাংশ বাস কাউন্টার খোলা থাকলেও সেগুলো থেকে কোনো টিকিট বিক্রি হচ্ছে না। হঠাৎ করে ডাকা ধর্মঘটের কারণে যাত্রীদের গাড়ির জন্য দিক বেদিক ছুটাছুটি করতে দেখা গেছে ।
এদিকে বিভিন্ন জায়গায় চলাচলরত সিএনজি, মাইক্রো পরিবহন শ্রমিকরা থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া চলাচলরত গাড়ি গুলো অতিরিক্ত হারে ভাড়া আদায় করছে বলে জানান কয়েকজন যাত্রী।
কাউন্টারে ম্যানেজারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাকে সাড়া দিয়ে কোন দুরপাল্লার বাস চলাচল করছে না। সকাল থেকে একটি গাড়িও টার্মিনাল ছেড়ে যায় নি। ফেডারেশনের ঘোষনা অবধি ধর্মঘট চলবে বলে জানান তারা। অগ্রিম টিকেট কিনেছিলেন তাদের টিকিটের টাকা ফেরত দেয়া হচ্ছে। তারা বলেন, দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে তাই সড়কে কোন গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাদের দাবী আদায় হওয়া অবধি ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন বলে জানান তারা।
বাসটার্মিনালে ঢাকা থেকে আসা কয়কজন পর্যটকের সাথে কথা বলে জানা যায়, পরিবহনের ধর্মঘটের কারণে কক্সবাজার থেকে সবধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ছুটি শেষে এখন তারা কিভাবে অগন্তব্য স্থলে পৌঁছাবে সেটা দুশ্চিন্তার কারণ হিয়ে দাঁড়িয়েছে। ধর্মঘটের কারণে তাদের চরমভাবে দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
কক্সবাজার থেকে সিএনজি নিয়ে টেকনাফ যাওয়া মাজেদ বলেন, স্পেশাল সার্ভিস চলাচল না করায় সিএনজি সহকারে টেকনাফ যাচ্ছি কিন্তু পথিমধ্যে পরিবহন শ্রমিকরা গাড়ি থামিয়ে নামিয়ে দিয়েছে। ফলে গন্তব্যস্থলে পৌঁছানো কষ্ঠদায়ক হয়ে পড়েছে। পরিবহন শ্রমিকদের অনেক অনুরোধ করলে তারা শুনছেন না।
উখিয়ার আড়ত ব্যবসায়ী জাফর সওদাগর বলেন, প্রতিদিন কাঁচামাল এবং পাকা উভয় ধরনের মালবোঝাই ট্রাক আসে। এখন ধর্মঘটের ফলে কাঁচামালের ট্রাক পৌছাঁতে না পারলে বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
কোটবাজার ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি মোঃ শাহজাহান জানান, কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারাদেশ বাস ট্রাকসহ সকল যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে এক জেলার সঙ্গে অন্য জেলার যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। এছাড়া কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত এই ধর্মঘট চলবে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালের ১৩ আগস্ট ঢাকা-মানিকগঞ্জের জোকা এলাকায় চুয়াডাঙ্গা ডিলাক্সের একটি বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে চলচিত্রকার তারেক মাসুদ ও সাংবাদিক মিশুক মুনীরসহ পাঁচজন নিহত হন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মানিকগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত চালক জামির হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ প্রদান করেন। এর প্রতিবাদে মঙ্গলবার সারাদেশে ধর্মঘটের ডাক দিয়েছ বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন।
পাঠকের মতামত