শাহজাহান চৌধুরী শাহীন,কক্সবাজার::
কক্সবাজারের সীমান্ত উপজেলা উখিয়ার বালুখালি ঝুমেরছড়ায় ইয়াবা ‘গডফাদারে’র হামলায় আহত হয়েছেন কাচা মাছ ব্যবসায়ি আব্দুল হাকিম (৩৮)। তিনি উখিয়া উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালি ঝুমেরছড়া বদিউর রহমানের ছেলে।
১২ ডিসেম্বর বিকাল ৪টার দিকে বালুখালি পশ্চিমপাড়াস্থ মকবুল আহমদের মুদির দোকানের সামনে এই ঘটনা ঘটে। একই এলাকার ‘ইয়াবা গডফাদার’ হিসেবে পরিচিত ইয়াবা ব্যবসায়ি ও মোঃ হোছনের ছেলে নুরুল ইসলাম মুন্না (২৪) এবং ইয়াবা ব্যবসায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে চাকুরীচ্যুত পুলিশ কনষ্টেবল ও আলী আহম্মদের ছেলে আলা উদ্দিনের নের্তৃত্বে একদল দুর্বৃত্ত এই হামলা চালিয়েছে। আহত আব্দুল হাকিম পারিবারিক সূত্র এমনটাই দাবি করেছেন। এ ঘটনায় আহত আব্দুল হাকিমের স্ত্রী রোকসানা আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা সহ ৭ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছে। থানায় মামলা দায়েরের পর ইয়াবা ব্যবসায়ি আসামীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। এমনকি মামলার আসামী নুরুল ইসলাম মুন্না বাদী হয়ে আহত আব্দুল হাকিম সহ মামলার স্বাক্ষী ও আত্মীয় স্বজনদের বিরুদ্ধে উল্টো উখিয়া থানায় মিথ্যা মামলা দায়ের করে প্রতিনিয়ত হুমকি দিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
তাদের দাবি, ইয়াবা ব্যবসায়ি নুরুল ইসলাম মুন্না, বরখাস্তকৃত কনষ্টেবল আলা উদ্দিন, জমির উদ্দিনসহ তাদের সিন্ডিকেটের ইয়াবার চালান চট্টগ্রাম এলাকায় আইনশৃঙ্খল্ বাহিনীর হাতে ধরা পড়ার জন্য কাচা মাছ ব্যবসায়ি আব্দুল হাকিমের হাত রয়েছে এমন সন্দেহ থেকেই এই হামলা চালানো হয়। আহত মাছ ব্যবসায়ি আব্দুল হাকিম প্রথমে উখিয়া উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহত আব্দুল হাকিমের স্ত্রী রোকসানা জানান, ১৮ ডিসেম্বর বিকাল ৪টার দিকে কাচা মাছ ব্যবসায়ি আব্দুল হাকিম ব্যবসায়িক কাজ শেষে বাড়ি ফিরছিল। পথিমধ্যে বালুখালি পশ্চিমপাড়াস্থ মকবুল আহমদের মুদির দোকানের সামনে পৌছলে ইয়াবা পাচারকারি ইসলাম মুন্না, বরখাস্তকৃত কনষ্টেবল আলা উদ্দিন, জমির উদ্দিনসহ তাদের সিন্ডিকেটের সদস্যরা গতিরোধ করে ভারি অস্ত্র দিয়ে আব্দুল হাকিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তার পকেটে থাকা ৬২ হাজার টাকা লুট করে।
তিনি আরো জানান, আহত আমার স্বামীকে জীবন্ত কবর দেয়ার জন্য টেনে হেচঁড়ে পশ্চিপাড়া কবরস্থানে নিয়ে যায়। পরে উপস্থিত লোকজন এসে তাকে দুর্বৃত্তদের কবল থেকে রক্ষা করেন। রোকসানা আরো জানান, প্রায় তিন মাস আগে ‘ইয়াবা গডফাদার’ ইসলাম মুন্না, বরখাস্তকৃত কনষ্টেবল আলা উদ্দিন, জমির উদ্দিনসহ তাদের সিন্ডিকেটের তিন লাখ টাকা মুল্যের ইয়াবা চ্ট্টগ্রামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে। আর এই ঘটনার জন্য কাচা মাছ ব্যবসায়ি হাকিমকে সন্দেহ করে তার উপর এই হামলা করা হয়েছে। উক্ত টাকা আমার স্বামীর কাছ থেকে যে কোন মুল্যে আদায় করবে মর্মে হুমকি দিয়ে সরে পড়ে হামলাকারীরা।
রোকসানা আক্তার আরো জানান, আলা উদ্দিন পুলিশ কনষ্টেবল হিসেবে ঢাকা মেট্ট্রোপলিটন চাকুরী করত। পুলিশ কনষ্টেবল হয়ে ইয়াবা ব্যবসায় সম্পৃক্ত থাকায় তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়। গত দেড় বছর ধরে চাকুরীচ্যুত আলা উদ্দিন বালুখালি এলাকায় অবস্থান করে একটি বিশাল সিন্ডিকেট গঠনের মাধ্যমে অবৈধ ইয়াবা ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে আসছে।
এই ঘটনায় রোকসানা বাদী হয়ে নুরুল ইসলাম মুন্না, আলা উদ্দিন, জমির উদ্দন, আনোয়ার ইসলাম সহ আরো অজ্ঞাতনামা ৩ জনের বিরুদ্ধে গত বছরের ২২ ডিসেম্বর উখিয়া থানার মামলা নং-২০, জিআর-৩১২ দায়ের করেন। থানায় মামলা দায়েরের পর ইয়াবা ব্যবসায়ি আসামীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। এমনকি মামলার আসামী নুরুল ইসলাম মুন্না বাদী হয়ে আহত আব্দুল হাকিম সহ মামলার স্বাক্ষী ও আত্মীয় স্বজনদের বিরুদ্ধে উল্টো উখিয়া থানার মামলা নং-২২, জিআর-৩১৪ দায়ের করেন। গুরুতর আহত আবদুল হাকিম এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে বলে জানা গেছে।
পাঠকের মতামত