
মায়ানমারভিত্তিক রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান জুনুনীর মুক্তির দাবিতে রোহিঙ্গাদের ঝাঁপিয়ে পড়তে প্ররোচিত করার অভিযোগ উঠছে মোহাম্মদ হারুন নামের এক রোহিঙ্গা যুবকের বিরুদ্ধে।
রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে এক ভিডিওতে হারুনকে বলতে শোনা যায়, জুনুনীকে মুক্ত করতে নাফ নদে চলাচলরত নৌকা জিম্মি ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপসংলগ্ন সাগর থেকে বাংলাদেশি মাছ ধরার নৌকা ছিনতাই করতে হবে।
গতকাল বুধবার (৯ জুলাই) রাতে ৩ মিনিট ৩৯ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি ছাড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওর বিষয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (৮-এপিবিএন) ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক রিয়াজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, ‘ভিডিওর বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে।
আমরা ইতিমধ্যে এসব প্ররোচনার কাজে যে বা যারা লিপ্ত রয়েছে তাদের শনাক্ত করার কাজ শুরু করে দিয়েছি।’
ভাইরাল ওই ভিডিওর বিষয়ে কক্সবাজার জেলা পুলিশের একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার দুপুরে জানান, বিষয়টি তরা খতিয়ে দেখছেন।
আরসা প্রধান জুনুনীকে আটক রাখার জন্য ওই রোহিঙ্গা যুবক বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সমালোচনা করেছেন। তিনি রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে রোহিঙ্গা ভাষায় বলেন, ‘তোঁয়ারা মন্ডুর হারি (নাফনদ) কব্জা গরি ফেল।
মন্ডুর হারি কব্জা গিরিয়েরে বাদে বাংলাদেশর সেন্টমার্টিনত্তু বোট ধরি লই আইয়্য।’ (অর্থাৎ তোমরা নাফনদ জিন্মি করে ফেল। নাফনদ জিম্মি করার পর বাংলাদেশের সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকেও নৌকা ধরে নিয়ে আস)।
এ বিষয়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের কয়েকজন রোহিঙ্গা নেতা জানান, বাস্তবে বাংলাদেশের ক্যাম্পে অবস্থানকারী কোনো রোহিঙ্গা এমন সব আপত্তিকর কথাবার্তার ভিডিও করার সাহস করবে না।
মোহাম্মদ হারুন নামের রোহিঙ্গা যুবক মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন এবং সেখান থেকেই ভিডিওটি পাঠানো হয়েছে বলে তারা মনে করছেন।
গত ১৮ মার্চ রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এবং ময়মনসিংহ শহরের নতুন বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরসা প্রধান রোহিঙ্গা আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনীসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল র্যাব। বর্তমানে জুনুনী কক্সবাজারের কারাগারে আটক রয়েছে।
উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ২০২০ সালের ৬ অক্টোবর সশস্ত্র রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের হামলায় ৪ জন নিরীহ রোহিঙ্গার প্রাণহানির একটি চাঞ্চল্যকর মামলার এজাহারভুক্ত আসামি আরসা প্রধান আতাউল্লাহ জুনুনী। গতকাল বুধবার (৯ জুলাই) কক্সবাজারেরর একটি আদালত ওই মামলায় ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
তার বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তা হত্যাসহ আরো কমপক্ষে ডজনখানেক হত্যা মামলা রয়েছে।
সুত্র, দৈনিক কালেরকন্ঠ
পাঠকের মতামত