আত্মসমর্পণ দুই জঙ্গির, প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা অনুদানগুলশানের ঘটনায় নিহত পায়েলের সহযোগী বগুড়ার আব্দুল হাকিম (২২) ও গাইবান্ধার মাহমুদুল হাসান ওরফে বিজয় (১৭) নামে দুই জঙ্গি র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। বুধবার দুপুরে বগুড়ার শহীদ টিটু মিলনায়তনে র্যাব-১২-এর আয়োজিত সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ বিরোধী সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল এমপির উপস্থিতিতে তারা র্যাবের কাছে আত্মসমর্পণ করেন। এসময় আত্মসমর্পণকারী দুই জঙ্গির প্রত্যেককে পুনর্বাসনের জন্য ৫ লাখ টাকা করে চেক হস্তান্তর করেন মন্ত্রী।
আত্মসমর্পণকারী দুই জেএমবি সদস্য হলেন, বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার চুপিনগর ইউনিয়নের কামারগাড়ি গ্রামের আব্দুর রহমানের পুত্র আব্দুল হাকিম এবং গাইবান্ধা জেলার সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী গ্রামের মৃত সেকেন্দার আলীর পুত্র মাহমুদুল হাসান বিজয়।
আব্দুল হাকিমের পরিচয়
আব্দুল হাকিম গুলশানের হলি আর্টিজন রেস্তোরায় নিহত জঙ্গি খায়রুল ইসলাম পায়েলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সহযোগী ছিলেন। পায়েলের হাত ধরেই তিনি জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। ছোট বেলায় ব্র্যাক স্কুলে পড়াশুনা করেছেন। পরে স্থানীয় একটি মাদরাসায় ৫ম শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে ২০১৩ সালে দাখিল এবং ২০১৫ সালে আলিম পাশ করেন। ৫ম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায়ই তার পরিচয় হয় হলি আর্টিজান রেস্তোরায় নিহত জঙ্গি খায়রুল ইসলাম পায়েলের সঙ্গে। তার কথা মত তিনিও জঙ্গিদের আস্তানায় পা বাড়ান। এর পর থেকে স্থানীয় এবং কেন্দ্রীয়ভাবে বিভিন্ন জঙ্গি প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। এক পর্যায়ে জঙ্গিদের চূড়ান্ত পদের জন্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে পাস করতে না পেরে ফিরে আসেন। প্রস্তুতি নেন পুনরায় পরীক্ষার। এর মধ্যে ঘটে গুলশান এবং শোলাকিয়ার ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড। এতে তিনি তার ভুল বুঝতে পারেন। ফিরে আসার পথ খোঁজেন পরিবার এবং আইনশৃংখলা বাহিনীর মাধ্যমে।
এরআগে হাকিম নিয়মিত ধর্মীয় উগ্রবাদের শিক্ষার পাশাপাশি অস্ত্র চালোনা ও শারীরিক প্রশিক্ষণ করতেন।
এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নিয়ম কানুন সম্পর্কে হাকিম জানান, তাদের প্রতি নির্দেশ ছিল-জানালা দিয়ে বাইরে কোন কাগজ ফেলবেন না, জানালার কাছে কখনো কেউ দাঁড়াবেন না এবং দরজা নক করলে কেউ খুলবেন না। নির্দিষ্ট ব্যক্তিরা দরজা খুলে দেবে। এছাড়াও তাদের প্রশিক্ষকদের রুমে প্রবেশ করার অনুমতি ছিল না। প্রশিক্ষণ গ্রহণের সময় গুলশান ও শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার ঘটনা হয়। ওই ঘটনার পর প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে পালিয়ে বগুড়ায় বাড়িতে চলে আসেন তিনি।
মাহামুদুল হাসান ওরফে বিজয়ের পরিচয়
গাইবান্ধা জেলার হাটভরতখালী গ্রামের মৃত সেকেন্দার আলীর ছেলে বিজয়। তিনি গ্রামের একজন সাধারণ পরিবারের ছেলে। শিক্ষা জীবনের শুরুতে মাদরাসা এবং জেনারেল দুই শাখাতেই পড়াশুনা করেছেন। তিনি মুফতি জসীম উদ্দিন রহমানীয়ার ওয়াজ এবং বই পড়ে জেএমবিতে যোগ দেন। পরে তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি অস্ত্রের পরীক্ষায় পাশ করেন। এছাড়া তাকে থ্রিমা ও ভিপিএনের মাধ্যমে যোগাযোগ করার প্রশিক্ষণও দেয়া হয়।
মানবকণ্ঠ
পাঠকের মতামত