
আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বছরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে চলতি বছর ‘মুজিববর্ষ’ পালন বড় সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে। অর্থনৈতিক কূটনীতিতেও সফলতা এসেছে। তবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কূটনীতির চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে আগের মতোই।
সরকারের দ্বিতীয় বছরের শুরুতেই নতুন কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ দেখা দিয়েছে ইরাকে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় শীর্ষস্থানীয় ইরানি কমান্ডার কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়াকে কেন্দ্র করে। শুধু মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে নয়, বিশ্বের অন্য দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে এ ঘটনা।
২০১৭ সালের আগস্ট মাসে রাখাইনে মিয়ানমার বাহিনীর অভিযানে গণহত্যা, গণনিষ্ঠুরতায় প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। বাংলাদেশ মানবিক দিক বিবেচনায় জরুরি আশ্রয় দেওয়ার পর তাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন নিয়ে দেখা দেয় বড় ধরনের কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ, যা ‘রোহিঙ্গা কূটনীতি’ নামে পরিচিতি পায়। কিন্তু প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য দিনক্ষণ ঠিক করেও তা শুরু করা যায়নি।
অবশ্য গত বছর রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে চীনের অবস্থানের ইতিবাচক পরিবর্তন দৃশ্যমান হয়েছে। আগে যুক্ত না হলেও গত বছর এ প্রক্রিয়ায় চীন দৃশ্যত যুক্ত হয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালতে রাখাইন গণহত্যার বিচার চেয়ে গাম্বিয়ার করা মামলায় মিয়ানমারকে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়েছে। জাতিসংঘে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাব পাস হয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু না হওয়ার দায় মিয়ানমারের। তারা রাখাইনে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টিতে সফল হয়নি। বাংলাদেশ প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গার তালিকা দিলেও তারা মাত্র আট হাজার জনকে চূড়ান্ত করেছে, যা যথাযথ হোমওয়ার্ক না করার ফল। তিনি বলেন, প্রতিবেশী মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক খুবই ভালো। চলতি বছর রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর ক্ষেত্রে সফলতা আসবে বলে আশা করেন তিনি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে চলতি বছর ‘মুজিববর্ষ’ পালন কূটনীতিতেও বড় সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে। এ বছর ৭৭টি বাংলাদেশি দূতাবাস ও মিশনে মুজিববর্ষ পালন উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর মহান কীর্তি, মানুষের মুক্তির জন্য তার আজীবন সংগ্রামের ইতিহাস তুলে ধরা হবে। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সমৃদ্ধির পথে যাত্রার উজ্জ্বল সম্ভাবনার বিষয়টিও উঠে আসবে।
পাঠকের মতামত