ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৪/০৩/২০২৫ ৮:৫০ পিএম
বাংলাদেশের কক্সবাজার শহরের কাছে এক শরণার্থী শিবিরে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের দেখা যাচ্ছে। ছবি: রয়টাসর্

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক দাতারা তহবিল কমালে ‘খুব খারাপ পরিস্থিতি’ তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা আইওএম।

সংস্থা দুটি যৌথ উদ্যোগে রোহিঙ্গাদের খাদ্য ও শিক্ষা সহায়তায় কয়েক বছরের তহবিল সংগ্রহের আবেদনে বলেছে, খাদ্য সহায়তা, জ্বালানি ও আশ্রয়ের মত গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলোতে সহায়তা তহবিলে যেকোনো সংকট তৈরি হলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত এই জনগোষ্ঠীর জন্য পরিস্থিতি খুব শোচনীয় হবে।

এর ফলে রোহিঙ্গারা বিপজ্জনক নৌকা ভ্রমণের মাধ্যমে অন্য কোথাও নিরাপদ আশ্রয় খোঁজার মত ভয়ানক পদক্ষেপও নিতে পারে বলে এক বিবৃতিতে বলেছে জাতিসংঘের সংস্থাটি দুটি।

রয়টার্স লিখেছে, ইউএনএইচসিআর ও আইওএমের পাশাপাশি ১১৩টি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশে আশ্রিত ১৪ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা ও স্থানীয় কমিউনিটির জন্য ২০২৫-২৬ বছরে ৯৩ কোটি ৪৫ লাখ ডলার সহায়তা চেয়েছে।

চলতি মার্চের শুরুতে জাতিসংঘের আরেক সংস্থা বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের বৈশ্বিক সাহায্য সংস্থা ইউএসএআইডির কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্যে সহায়তার রেশন কমে যেতে পারে। ওই ঘোষণার পর জনবহুল রোহিঙ্গা শিবিরে খাদ্য সংকটের আশঙ্কার করছেন সেখানে কাজ করা সাহায্যকর্মীরা।

ডব্লিউএফপি বলছে, দাতারা যে সাহায্য দিয়ে থাকেন, তা বড় অংকে কমে আসায় রোহিঙ্গাদের জন্য রেশন কমছে। বিষয়টি এমন নয় যে এটি ইউএসআইডিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সাহায্য বন্ধের সিদ্ধান্তের কারণেই ঘটছে। তবে বাংলাদেশি এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেন, সাহায্য কমার ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সিদ্ধান্তও একটি প্রভাব ফেলছে, যেহেতু রোহিঙ্গাদের জন্য সবথেকে বড় দাতা দেশ যুক্তরাষ্ট্র।

বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের উন্নয়ন অর্থায়ন ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হলেও জরুরি খাদ্য সহায়তা এর বাইরে থাকার কথা বলা হচ্ছিল।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের অগাস্টে রোহিঙ্গা শরণার্থী সঙ্কট শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র ২৫০ কোটি ডলারের বেশি সহায়তা দিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশে দিয়েছে ২১০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি।

গত ২৬ জানুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় বলেছিল, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রায় সব ধরনের সহায়তা কার্যক্রম বন্ধের যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের জীবনরক্ষাকারী খাদ্য ও পুষ্টি সহায়তা কার্যক্রম তার আওতায় পড়বে না।

যুক্তরাষ্ট্রের আন্তজার্তিক সহযোগিতা বন্ধের ঘোষণা নিয়ে আলোচনার মধ্যেই জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ‘তহবিল ঘাটতির’ কথা তুলে ধরে বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য সহায়তায় খরচের পরিমাণ অর্ধেকের বেশি কমাচ্ছে। এপ্রিলের ১ তারিখ থেকে মাসিক ফুড রেশনের পরিমাণ জনপ্রতি সাড়ে ১২ মার্কিন ডলার থেকে কমে ছয় ডলার হওয়ার কথা বাংলাদেশকে জানিয়েছে সংস্থাটি।

তবে বাংলাদেশ সফরে এসে রোহিঙ্গাদের জন্য রেশন কমানো ঠেকাতে জাতিসংঘ সম্ভব সবকিছু করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এ বিশ্ব সংস্থার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস।

পাঠকের মতামত

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার বাদী এখন কক্সবাজার দুদকের উপ-পরিচালক

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ...

দৈনিক জনকণ্ঠের রিপোর্ট রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর সরকারি লাইসেন্স নেই, তদন্ত টিমের পরিদর্শন

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ায় ১৫টি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার চলছে অনুমতি বিহীন। সরকারিভাবে কোন ...

উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ, ইউনিফর্ম, অস্ত্র-গুলি ও হাতকড়াসহ আটক ১

কক্সবাজারের উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা এবং প্রতারণার অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ ...