ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৪/১০/২০২৪ ৫:৩১ পিএম , আপডেট: ২৪/১০/২০২৪ ৬:১০ পিএম

শামীমুল ইসলাম ফয়সাল
২০২১ সালের ২০ সেপ্টেম্বর, এমবিবিএস ডাক্তার না হয়েও চক্ষু বিশেষজ্ঞ পরিচয়ে অনুমোদনবিহীন ক্লিনিক খুলে রোগীর দেখার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মোহাম্মদ সোলায়মান হোসেন।

পাবনা জেলার বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে পার্শ্ববর্তী রাজবাড়ী জেলা সদরের বড়পুলে রাবেয়া টাওয়ারের তৃতীয় তলায় সরকারি অনুমোদন ছাড়াই তিনি গড়ে তোলেন ‘আইভি আই কেয়ার এন্ড ফ্যাকো সেন্টার’ নামে চক্ষু হাসপাতাল।

ঐ হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ও ফ্যাকো সার্জন ডা. মো. মোস্তফা সরোয়ার নামে ভূয়া পরিচয়ে সোলায়মান ৫০০ টাকা ভিজিটের বিনিময়ে দুই বছর ধরে সাধারণ মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছিলেন তিনি, যেখানে তার সহযোগী ছিলেন দ্বিতীয় স্ত্রী শিমুল মুন এবং যিনি
অপথালমোলজিস্ট হিসেবে পরিচয় দিতেন।

বিষয়টি নজরে এলে সোলায়মানের প্রতারণার মুখোশ উন্মোচন করেন জিটিভি ও
সারাবাংলার রাজবাড়ী জেলা প্রতিনিধি মো. আশিকুর রহমান সহ স্থানীয় কিছু গণমাধ্যমকর্মী।

পরে প্রতিবেদন প্রকাশ হলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। মুঠোফোনে আশিক বলেন , ” সোলায়মান ভয়ংকর প্রতারক, সে দীর্ঘদিন ধরে ডাক্তার সেজে মানুষকে বোকা বানাচ্ছিলো এবং আমরা তা হাতে নাতে প্রমাণ করি।”

পাবনা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সেসময় সোলায়মানের অবৈধ ক্লিনিকটি সীলগালা করা হয় এবং অভিযোগের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিক বেড়া থেকে উখিয়ায় সোলায়মানকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয়।

বেড়া উপজেলার বনগ্রামের লুৎফর রহমানের পুত্র সোলায়মান ২০১০ সালে উপসহকারী মেডিকেল কমিউনিটি অফিসার হিসেবে চাকরিতে যোগদান করেন।

অভিযোগ আছে, ২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি পাশের জাল সার্টিফিকেট ব্যবহার করে চাকরি নিয়েছেন তিনি। দামী দামী ঔষধ লিখে, রোগীদের কাছ থেকে টাকা নে,ঔষধ কোম্পানির কাছ থেকে টাকা নে, রোগী কে অযথা পরীক্ষা করতে পাঠায় বিভিন্ন ল্যাব এ যা সেখান থেকে সে কমিশন পায়।। অন্য ল্যাব হলে সে রিপোর্ট দেখেনা, যদি যদিও রিপোর্ট করতে দেওয়ার এখতিয়ার তার নেই।।

উখিয়ায় বদলি হয়ে আসার পরও বদলাননি সোলায়মান, অব্যাহত রেখেছেন তার চারিত্রিক আচরণ। নিয়মবহির্ভূতভাবে তিনি টেকনাফে সপ্তাহে তিন দিন ডাক্তার পরিচয়ে রোগী দেখেন এছাড়াও মেডিসিন কোম্পানির প্রতিনিধিদের কাছ থেকে ওষুধ লেখার নামে নিয়মিত মাসোয়ারা আদায় করেন।

গত ১৮ অক্টোবর, উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগ থেকে চুরি হয় ওসমান সরোয়ার পুতু নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার ব্যবহৃত এন্ড্রয়েড ফোন।

ঘটনার সময় জরুরি বিভাগে দায়িত্বে ছিলেন সোলায়মান। পুতু জানান, ” মোবাইলটি সোলায়মান কৌশলে লুকিয়ে ফেলেন পরে বিষয়টি জানাজানি হলে সে আমাকে ফেরত দেয়।”

মোবাইল চুরির বিষয়টি মিথ্যা দাবী করেন সোলায়মান তবে প্রতারণা ও জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে মুঠোফোনে তিনি ” আমার সবকিছুই জাল তাতে আপনার কি সমস্যা বলেন? ” মন্তব্য করে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

সোলায়মান প্রসঙ্গে জানতে চেয়ে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার রনজন বড়ুয়া রাজনকে ফোন দেওয়া হলে তিনি রিসিভ করেননি তবে ডাক্তার রাজন বর্তমানে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে।

কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাক্তার আসিফ হাওলাদার বলেন, ” দুর্নীতি অনিয়ম বা অসদাচরণকে প্রশ্রয় দেওয়ার সুযোগ নেই, কেউ যদি জাল সার্টিফিকেট দিয়ে চাকরি করে তাহলে বিধি অনুযায়ী তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে ।”

এদিকে উখিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সোলায়মানের ব্যাপারে তদন্ত চলছে এবং একটি প্রতিনিধি দল সম্প্রতি হাসপাতালে এসে তদন্ত করে গেছেন।

পাঠকের মতামত

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার বাদী এখন কক্সবাজার দুদকের উপ-পরিচালক

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ...

দৈনিক জনকণ্ঠের রিপোর্ট রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর সরকারি লাইসেন্স নেই, তদন্ত টিমের পরিদর্শন

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ায় ১৫টি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার চলছে অনুমতি বিহীন। সরকারিভাবে কোন ...

উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ, ইউনিফর্ম, অস্ত্র-গুলি ও হাতকড়াসহ আটক ১

কক্সবাজারের উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা এবং প্রতারণার অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ ...