আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১/০৮/২০২৫ ৮:১০ এএম

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চালানো বোমা হামলায় কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার পাঁচ সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। হামলার শিকার এই সাংবাদিকদের মধ্যে রয়েছেন আল জাজিরা আরবির জনপ্রিয় প্রতিবেদক আনাস আল শরীফ।

রোববার (১০ আগস্ট) সন্ধ্যায় গাজার সবচেয়ে বড় হাসপাতাল আল শিফার প্রধান ফটকের সামনে একটি তাঁবুতে বসে কাজ করছিলেন তারা। সেখানেই ইসরায়েলি বাহিনীর টার্গেটেড হামলায় ঘটনাস্থলেই নিহত হন এই পাঁচ সাংবাদিক। একই হামলায় মোট সাতজন প্রাণ হারান।

আল জাজিরা জানিয়েছে, নিহত সাংবাদিকরা হলেন— আনাস আল শরীফ (২৮), মোহাম্মদ ক্রিকেহ (সংবাদদাতা), ইব্রাহিম জাহের (ক্যামেরা অপারেটর), মোহাম্মদ নওফাল ও মোমেন আলিওয়া।

তাদের মধ্যে আনাস আল শরীফ সবচেয়ে বেশি পরিচিত ছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি উত্তর গাজা থেকে রিপোর্টিং করে আসছিলেন। নিহত হওয়ার কিছু সময় আগেই তিনি সামাজিকমাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করেছিলেন, যেখানে গাজার পূর্ব ও দক্ষিণাংশে তীব্র বোমাবর্ষণের কথা উল্লেখ করেন।

‘অবিরাম বোমাবর্ষণ…’
আনাস লিখেছিলেন, গত দুই ঘণ্টা ধরে ইসরায়েলি আগ্রাসন তীব্রতর হয়েছে। অবিরাম বোমাবর্ষণ চলছে। সঙ্গে একটি ভিডিওও শেয়ার করেছিলেন। সেই ভিডিওতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। কমলা আগুনে মুহূর্তের জন্য রাতের অন্ধকার আকাশ আলোকিত হয়ে উঠেছিল।

আনাসকে ঘিরে বিতর্কিত অভিযোগ
আনাস আল শরীফ নিহত হওয়ার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে দাবি করে, তিনি হামাসের সামরিক শাখার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এমনকি ‘সুনির্দিষ্ট প্রমাণ’ থাকার কথাও জানায় তারা।

তবে এই অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও সাংবাদিক সংস্থা। ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটরের বিশ্লেষক মুহাম্মদ শেহাদা বলেন, আনাসের সহিংস কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কোনো তথ্য নেই। তার কথায়, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ক্যামেরার সামনেই কাটতো তার সময়।

উসকানিমূলক প্রচারণা
আল জাজিরা মিডিয়া নেটওয়ার্ক এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। তারা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তাদের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে ‘উসকানিমূলক প্রচারণা’ চালানোর অভিযোগ তোলে।

২০২৪ সালের জুলাই মাসেই ইসরায়েলি বাহিনীর মুখপাত্র আভিচাই আদরাই সামাজিকমাধ্যমে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন, যেখানে আনাসকে হামাসের সদস্য হিসেবে চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হয়। তবে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক সংগঠনগুলো ওই দাবিকে ‘ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে মন্তব্য করে।

কমিটি টু প্রোটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে) এক বিবৃতিতে জানায়, আনাস আল শরীফকে ইসরায়েলি অপপ্রচারের লক্ষ্যবস্তু বানানো হয়েছিল। তারা তার নিরাপত্তা নিয়ে আগেও উদ্বেগ জানিয়েছিল।

সাংবাদিকদের নিশানা করছে ইসরায়েল?
২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় হামলা শুরু করার পর থেকে ইসরায়েল নিয়মিতভাবে সাংবাদিকদের হামাস-সংশ্লিষ্ট বলে দাবি করে আসছে। তবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর ভাষ্য, এটি মূলত সাংবাদিকদের কাজ খাটো করার একটি কৌশল।

গত প্রায় দুই বছরে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ২০০ জনের বেশি সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে আল জাজিরার একাধিক সাংবাদিক ও তাদের পরিবারের সদস্যরাও রয়েছেন। সূত্র: আল জাজিরা

পাঠকের মতামত

এবার গাজার পাশে দাঁড়াল চীন, জাতিসংঘে বললো: ‘গাজা শুধু ফিলিস্তিনিদের!’

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সেশন-এ বক্তব্য রাখেন চীনের জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি ফু কং। তিনি শক্তিশালীভাবে বলেন, ...

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়ে মারা গেছেন

মিয়ানমারের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়ে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে রাজধানী নেপিদোর একটি সামরিক হাসপাতালে ...

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য ‘সুখবর’ দিল মালয়েশিয়া সরকার

মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশ ওভারসিস এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য নতুন ...

ভারতে আশ্রিত আওয়ামী নেতাদের নিয়ে ক্ষোভে ফুঁসছেন মমতা, পশ্চিমবঙ্গ ছাড়ার হুঁশিয়ারি

বাংলাদেশে দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিবাদী শাসন চালিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ...