প্রকাশিত: ২৩/০১/২০১৮ ৯:৩৮ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৭:৪০ এএম

রফিকুল ইসলাম::

আজ মঙ্গলবার উখিয়ায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ফেরত পাঠানো ও রোহিঙ্গাদের সেবায় নিয়জিত দেশী বিদেশী এনজিও গুলো নানা অনিয়ম ও দুর্ণীতি তদারকের দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটি। বক্তারা রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন কার্যক্রমে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থদের কর্মসংস্থান, বিভিন্ন বিশৃংখলা নিয়ন্ত্রন ও দেশী বিদেশী এনজিও গুলো কার্যক্রমে স্বচ্ছতা আনার জন্য সরকারী প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকদের সমম্বয়ে তদারকি কমিটি গঠনের দাবি জানান।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে উখিয়া বাস ষ্টেশনে অনুষ্ঠিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা জানান, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের পরিকল্পিত ভাবে তাদের মৌলিক অধিকার সমূহ নিশ্চিত না করে আবারও তাদের মিয়ানমার ফেরত পাঠানো ঠিক হবে না। জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব ও রাখাইন কমিশনের প্রধান কফি আনানের প্রদত্ত সুপারিশ অনুযায়ী মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠিকে নাগরিকত্ব প্রদান ও তাদের রোহিঙ্গা স্ব^ীকৃতি প্রদানের অগ্রাধিকার মূলক সুপারিশ মালা বাস্তবায়নের দাবি জানানো হয়েছে। এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন পূর্বক রাখাইনে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের মর্যাদা পূর্ণ, নিরাপদ নিশ্চয়তা নাগরিকত্ব ছাড়া ফেরত প্রদান করা হলে মিয়ানমার সরকারী বাহিনী আবারও তাদের উপর নির্যাতন চালাতে পারে। তাই আন্তর্জাতিক বিশ্বকে সাথে নিয়ে মিয়ানমারের উপর আরো কঠোর চাপ প্রয়োগ করে তাদের অধিকার নিশ্চিত করে ফেরত পাঠানোর দাবি জানানো হয়েছে।

রোহিঙ্গাদের সেবায় নিয়জিত বিভিন্ন দেশী বিদেশী এনজিও গুলোর নানা অনিয়ম ও দুর্ণীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এবং রোহিঙ্গা শিবির গুলোতে পরিকল্পিত ভাবে সেবা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকারী প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, সাংবাদিকদের অবাধ বিচরণের সুযোগ দিতে হবে। ইতিমধ্যে যেসব সেবা সংস্থাগুলো বিভিন্ন কাজে রোহিঙ্গা সহ বহিরাগতদের নিয়োজিত করেছে বাংলাদেশে আইনুযায়ী আগামী ৩০ জানুয়ারীর মধ্যে তাদের ছাড়াই করে ঐসব কাজে স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্থ দরিদ্র জনগোষ্ঠিকে নিয়োজিত করার দাবি জানানো হয়েছে।

বক্তারা জানান রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ব্যাপারে অতীতে জাতিসংঘের এ সংস্থাটির ভূমিকা সুখকর ছিল না। কারন ১৯৯২ সাল থেকে এখনো পর্যন্ত উল্লেখ যোগ্য সংখ্যক রোহিঙ্গা শরনার্থীদের সংস্থাটি মিয়ানমারে ফেরত পাঠাতে পারেনি। বাংলাদেশে নতুন ভাবে রোহিঙ্গা আগমনের পিছনে সংস্থাটি সহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সেবা সংস্থা দায়ী। এসব সংস্থার লোকজন গোপনে রাতের অন্ধকারে চুরি করে সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে মিয়ানমারে প্রবেশ করে সেখানে রোহিঙ্গাদের যাবতীয় সাহার্য্য সহায়তা ও সুবিধার প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলে আসতে উৎসাহ যুগিয়েছিল।

বক্তারা আরো জানান ১৯৯২ সালে আশ্রয় নেওয়া ২লাখ ৩৫ হাজারের বেশী রোহিঙ্গা যখন বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যকার চুক্তিতে ফিরে যাচ্ছিল তখন মানবতাবাধী তথাকথিত এ সংস্থাটি বাংলাদেশ সরকারে চাপে ফেলে রোহিঙ্গা প্রর্ত্যাপন সংক্রান্ত একটি সমাঝোতার চুক্তি স্বাক্ষর করিয়ে নেন। ফলে ২০০৫ সালে চুক্তির পর থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত মাত্র দুই হাজারের মত রোহিঙ্গা শরনার্থী প্রত্যাবাসন করার সম্ভব হয়েছিল। ২০০৭ সালের পর থেকে এ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। তারা বলেন, পৃথিবীর যেসব দেশে শরনার্থী সমস্যা রয়েছে সেসব দেশে উল্লেখিতদের দীর্ঘ মেয়াদি অবস্থানের কারনে শরনার্থী সমস্যা জিইয়ে রয়েছে। আগামী ৩০ জানুয়ারীর উল্লেখিত দাবি দাওয়া সহ পূরনের দাবিতে উখিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ের সম্মুখে অবস্থান ধর্মঘটের কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।

উখিয়া বাস ষ্টেশনে  মঙ্গলবার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংগ্রাম কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আহমদ এর সভাপতিত্বে মৌলনা জাফর আলমের কুরআন তেলোয়াতের মাধ্যমে এনজিও বিরোধী বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের উপদেষ্ঠা সাবেক প্রথম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মাহমুদুল হক চৌধুরী, প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারন সম্পাদক পালংখালী ইউপি চেয়ারম্যান এম গফুর উদ্দিন চৌধুরী, বক্তব্য রাখেন উখিয়া প্রেস ক্লাব সভাপতি রফিকুল ইসলাম, আওয়ামীলীগ নেতা মাহবুবুল আলম মাহাবুব, উখিয়া কলেজের প্রভাসক মোঃ মাসুদ, স্বেচ্ছা সেবকলীগ নেতা জাসিদ, যুবলীগ নেতা মাসুদ আমিন শাকিল সহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ।

পাঠকের মতামত

ব্র্যাকের আয়োজনে ‘যুব ক্যারিয়ার ভাবনা’ শীর্ষক সংলাপ অনুষ্ঠিত

যুবদের দক্ষতা উন্নয়নে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করার তাগিদ বিশিষ্টজনদের দেশে চাকরির তুলনায় চাকরিপ্রত্যাশীর সংখ্যা ...

দৈনিক ইত্তেফাকের প্রতিবেদনসীমান্তে ডজনখানেক সশস্ত্র আরাকান আর্মির অবস্থান, বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায়

সোমবার বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মির (এএ) এক সশস্ত্র সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর উত্তেজনাকর পরিস্থিতি ...