ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ১৮/০৮/২০২৪ ৬:১৫ পিএম

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী ও তাদের পিতৃহীন পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হয়েছে। উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

শনিবার (১৭ আগস্ট) রাতে ভুক্তভোগী চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী আশরাফুননেছা তানিয়া বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ১৪-১৭/০৮/২০২৪। এতে ঘটনায় জড়িত ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এর আগে শুক্রবার (১৬ আগস্ট) সকাল সাড়ে আটটার দিকে উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড রহমতেরবিল এলাকায় এ নিন্দনীয় হামলার ঘটনাটি ঘটে।

হামলার শিকার ও গুরুতর আহত হন ওই এলাকার মৃত মো. হারুনের স্ত্রী হাফিজা বেগম (৪৯), তার দুই মেয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী ফারিহা ফারহানা পুষ্প (২১) ও মামলার বাদী আশরাফুননেছা তানিয়া (২৩)।

এরই মধ্যে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি তুলেছে ভুক্তভোগী দুই শিক্ষার্থীর সহপাঠী, শিক্ষক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অ্যাসোসিয়েশনের সদস্য ও উখিয়ার সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

মামলার আসামিরা হলেন, রহমতেরবিল এলাকার মৃত মুজিবুল হকের ছেলে আতাউর রহমান (৪০), তার স্ত্রী আমেনা বেগম (৪০) ও মেয়ে আতেকা (২১); ফজলুর রহমান (৪২), তার স্ত্রী মাইমুনা বেগম (৪২), ছেলে মো. তুহিন (২২) ও মেয়ে হাকিমা (২২); একই এলাকার মৃত মো. সাকেরের স্ত্রী সেলিনা আক্তার (৩০); টেকনাফ উপজেলার লম্বরি এলাকার আনোয়ারের ছেলে মো. ইসমাঈল (৪৫), তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৪০) ও মেয়ে পুতু মনি (২৩)।

এজাহার সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত আসামিরা ধারালো দা, লোহা, লাঠি, বাঁশ ইত্যাদি দিয়ে ভুক্তভোগীদের হাতে, পায়ে, মাথায় ও শরীরের বিভিন্ন অংশে মারাত্মকভাবে জখম করে। এ সময় ঘটনা ক্যামেরাবন্দী করতে চাইলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে তাদের ব্যবহৃত একটি স্মার্টফোন কেড়ে নেওয়া হয়; টেনেহিঁচড়ে নেওয়া হয় দুটি গলার হার। শ্লীলতাহানি, হুমকিধামকি ও হত্যাচেষ্টার পাশাপাশি অভিযুক্তদের দাবিকৃত মোটা অঙ্কের চাঁদা না দেওয়ায় এ হামলা চালানো হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়। অভিযুক্ত আসামিদের বিরুদ্ধে এর আগেও সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করে এই ভুক্তভোগী পরিবার। যার মামলা নম্বর ১৭৪ ও প্রসিকিউশন নম্বর ৬৬/২০২২। ওই মামলায় আসামিরা জামিনে আছে।

হামলার ঘটনায় সাক্ষী জুলিয়া আক্তার, শামশুল আলম, স্থানীয় লোকজন ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ঘটনার দিন (শুক্রবার) সকালে ভুক্তভোগীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বেশ কয়েকজন পুরুষ ও নারী মৃত মো. হারুনের স্ত্রী ও দুই মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালায়। একপর্যায়ে প্রায় অজ্ঞান অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয় বলে জানান তারা।

স্থানীয় পালংখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এম. গফুর উদ্দিন চৌধুরী বলেন, সম্প্রতি রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর হামলাকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। রাজনৈতিক প্রভাব ও দাপট দেখিয়ে দখলবাজি ও চাঁদাবাজি শুরু করেছে তারা। পিতৃহীন টলোমলো একটি নিরীহ পরিবারের নারী সদস্যের ওপর হামলা চালাতে তারা দ্বিধাবোধ করেনি। আসামিরা স্থানীয় চেয়ারম্যান-মেম্বারের বিচার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তোয়াক্কা করে না বলে জানান এই জনপ্রতিনিধি।

পেশিশক্তিপ্রদর্শনকারী না থাকায় ভুক্তভোগীর পরিবারের ওপর প্রতিনিয়ত হামলা হয় বলে জানান চেয়ারম্যান।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন জানান, মামলা দায়ের হয়েছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হবে।

এই হামলার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। নারীদের ওপর এমন অত্যাচার ও মারধরের ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছে সমাজের মানবাধিকারসচেতনরা

পাঠকের মতামত

ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার বাদী এখন কক্সবাজার দুদকের উপ-পরিচালক

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও গ্রামীণ টেলিকমের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ...

দৈনিক জনকণ্ঠের রিপোর্ট রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকায় প্রাইভেট হাসপাতালগুলোর সরকারি লাইসেন্স নেই, তদন্ত টিমের পরিদর্শন

রোহিঙ্গা অধ্যুষিত এলাকা উখিয়ায় ১৫টি ক্লিনিক হাসপাতাল ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার চলছে অনুমতি বিহীন। সরকারিভাবে কোন ...

উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ, ইউনিফর্ম, অস্ত্র-গুলি ও হাতকড়াসহ আটক ১

কক্সবাজারের উখিয়ায় র‌্যাব পরিচয়ে রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়ের চেষ্টা এবং প্রতারণার অভিযোগে একটি সংঘবদ্ধ ...