প্রকাশিত: ২৬/১০/২০১৯ ১০:৫৩ এএম

মামলা বা জিডি (সাধারণ ডায়েরি) নথিভুক্ত করতে অহেতুক অবহেলা, দুর্ব্যবহার, আর্থিক লেনদেন কিংবা হয়রানি করলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশনা দেওয়ার আগেই জিডি করতে যেন কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন না হয়, কিংবা কোনো ধরনের হয়রানি না করা হয়- এ ব্যাপারে তদারকি শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির এক কর্মকর্তা। প্রথমবারের মতো এ ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা মহানগর পুলিশের থানাগুলোয় প্রতিদিন যে জিডি নথিভুক্ত করা হয়, তা তদারকিতে প্রথমবারের মতো বিশেষ সেল গঠন করা হয়েছে। এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তাকে এই সেলের প্রধান করা হয়েছে। তার অধীনে কাজ করছেন আরও বেশ কয়েক পুলিশ সদস্য। এই সেল থেকে জিডি করা ব্যক্তির সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হচ্ছে ডিএমপি সদর দপ্তর থেকে। জানতে চাওয়া হচ্ছে জিডি নথিভুক্ত করতে সংশ্লিষ্ট থানাপুলিশ কোনো টাকা-পয়সা নিয়েছে কিনা, থানা পুলিশকে অবহিত করার পর অহেতুক জিডি নিতে বিলম্ব বা দুর্ব্যবহার কিংবা হয়রানির শিকার হয়েছে কিনা। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী ব্যক্তির কাছ থেকে কোনো ধরনের অভিযোগ পেলে ডিএমপি সদর দপ্তর সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, থানায় জিডি করতে গেলে সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগী ব্যক্তির কাছ থেকে পুলিশ টাকা নিয়ে থাকে বলে বছরের পর বছর অভিযোগ চলে আসছে। টাকা না দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অনেক সময় নানা ধরনের হয়রানির শিকার হন- এই অভিযোগও হরহামেশা পাওয়া যায়। এসব ঘটনায় পুলিশের ইমেজ ক্ষুণœ হয়ে থাকে। বিষয়টি মাথায় রেখেই ডিএমপির বর্তমান কমিশনার মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম একটি সেল গঠন করে দিয়েছেন। থানায় জিডি হলেই এই সেল জানতে পারছে। পরে সেল থেকে জিডি করা ব্যক্তির ফোন নম্বরে কল করে জানতে চাওয়া হচ্ছে।

ঢাকা মহানগরীর অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় আমাদের সময়কে জানান, কিছুদিন আগে তারা জিডির বিষয়ে তদারকি করতে এক এডিসি, এক এসি এবং বেশকিছু পুলিশ সদস্যকে দায়িত্ব দিয়েছেন। তারা জিডির বিষয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন। কোনো অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রিপোর্ট করছেন।

গত ১ অক্টোবর পুলিশ সদর দপ্তর থেকে জারি করা এক চিঠিতে বলা হয়- জননিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি নাগরিকদের কাক্সিক্ষতমানের সেবা দেওয়া পুলিশের অন্যতম দায়িত্ব। এ লক্ষ্যে আপনার অধীনস্থ থানা, তদন্তকেন্দ্র এবং পুলিশ ফাঁড়িগুলোয় মামলা, জিডি বা অন্য কোনো অভিযোগের ক্ষেত্রে সেবাপ্রত্যাশীরা যেন কোনো ধরনের অবহেলা, দুর্ব্যবহার, সেবা প্রদানে অস্বীকৃতি, আর্থিক লেনদেন বা হয়রানির শিকার না হন, তা নিশ্চিত করা একান্ত প্রয়োজন। কোনো অভিযোগ পাওয়ার পর অবিলম্বে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে সেবাপ্রত্যাশীকে অবহিত করাও অত্যাবশ্যক। এ লক্ষ্যে আপনার ইউনিট, জেলা থেকে এক অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে নিয়োজিত করে তার মোবাইল ও ইমেইল নাম্বার থানা প্রাঙ্গণে বা বাইরে জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত স্থানে প্রদর্শনের জন্য অনুরোধ করা হলো।

তদুপরিও উক্ত কর্মকর্তা সেবাপ্রত্যাশীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে অভিযোগ, মামলা এবং জিডি করার ক্ষেত্রে কোনো অবহেলা, আর্থিক লেনদেন বা হয়রানির শিকার হয়েছেন কিনা তা চিহ্নিত করবেন। এ সংক্রান্তে অভিযোগ ও নিষ্পত্তি রেকর্ড সংরক্ষণ করবেন। এ ক্ষেত্রে কোনো ব্যত্যয় পরিলক্ষিত হলে দায়ী পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে অফিসকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হলো।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরাকান আর্মি বড় সমস্যা : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন নিয়ে বাংলাদেশ উভয় সংকটে আছে। শুক্রবার (১৮ এপ্রিল) ...

আরো ১২০ টন ত্রাণ নিয়ে ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ

মায়ানমারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য দ্বিতীয় পর্যায়ে মানবিক সহায়তা সামগ্রী নিয়ে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জাহাজ ‘বানৌজা ...

রোহিঙ্গা সংকট: বাংলাদেশকে অব্যাহত সহায়তার আশ্বাস ইউএনএইচসিআরের

জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) বাংলাদেশকে বিশেষ করে রোহিঙ্গা সংকটে অব্যাহত সহায়তা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন। ...