প্রকাশিত: ২৮/১২/২০১৬ ৪:১৮ পিএম , আপডেট: ২৮/১২/২০১৬ ৯:১৮ পিএম

Σউখিয়া নিউজ ডটকম::

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর  নির্যাতন থেকে জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সরাসরি কেউ মানবিক সহায়তা দিতে পারবে না। কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ত্রাণ সহায়তা দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। আর যেসব ব্যক্তি ও সংস্থা ত্রাণ সহায়তা দিতে চায়, জেলা প্রশাসনকে তাদের গ্রহণযোগ্য বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে নয় ধরনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের মংডু এলাকায় বিরাজমান অস্থিতিশীলতার কারণে কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বিধি-বহির্ভূতভাবে কয়েক হাজার মিয়ানমার নাগরিক (রোহিঙ্গা) বাংলাদেশ অভ্যন্তরে প্রবেশ করেছে। অবৈধ অনুপ্রবেশকারী মিয়ানমারের নাগরিকরা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় নিবন্ধিত ও অনিবন্ধিত শরণার্থী ক্যাম্পের আশপাশ এলাকায় অবস্থান করছে। তাদের মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশের বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে বিভিন্ন ধরনের ত্রাণসামগ্রী প্রদানের আগ্রহ ব্যক্ত করা হয়েছে। এসব ত্রাণসামগ্রী বিতরণের লক্ষ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চিঠিতে নির্দেশনায় বলা হয়েছে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মাধ্যমে ত্রাণ গ্রহণ ও সংরক্ষণ; ত্রাণের ধরন, উপযোগিতা ও প্রয়োজনীয়তা যাচাই-বাছাইপূর্বক ত্রাণসামগ্রী গ্রহণ; ত্রাণ প্রদানকারী সংগঠন বা সংস্থা অথবা ব্যক্তির গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করে ত্রাণসামগ্রী গ্রহণ; নগদ অর্থ/চেক গ্রহণের ক্ষেত্রে একটি ব্যাংক হিসাব খুলে তা যথাযথভাবে সংরক্ষণ ও পরিচালনা; ত্রাণসামগ্রী গ্রহণ, সংরক্ষণ, পরিবহন ও বিতরণের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যয়ভার বহনের ক্ষেত্রে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জ্ঞাপন; ত্রাণসামগ্রী গ্রহণের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসককে ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে দায়িত্ব প্রদান; ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা কর্তৃক প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট অন্য যেকোনো কর্মকর্তার সহায়তা গ্রহণ; ত্রাণসামগ্রী গ্রহণ ও বিতরণের ক্ষেত্রে যথাযথ হিসাব রেকর্ড সংরক্ষণ; বিদ্যমান ব্যবস্থাপনায় ত্রাণ বিতরণ এবং প্রয়োজনে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), আনসার, কোস্টগার্ড, গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে।
চিঠির অনুলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিবকে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর মহাপরিচালক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারকেও চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে।
গত ৯ অক্টোবর মিয়ানমারের তিনটি সীমান্ত পোস্টে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হামলায় নয় সীমান্ত পুলিশ নিহত হওয়ার পর রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত জেলাগুলোতে শুরু হয় সেনা অভিযান। এরপর থেকে সহিংসতায় বহু রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে, সহিংসতা থেকে বাঁচতে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে ঢুকেছে। এবারের সেনা অভিযানে রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া এবং বেসামরিক লোকদের হত্যার অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকার তা অস্বীকার করেছে। -মানবকন্ঠ

পাঠকের মতামত