প্রকাশিত: ১৯/০২/২০১৮ ৯:৫৫ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৬:২৫ এএম

নিউজ ডেস্ক::

মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনের পরিপ্রেক্ষিতে লাখ লাখ রোহিঙ্গার বাস্তুচ্যুতি ও দেশত্যাগের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নকে (ইইউ) মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের (ইপি) প্রতিনিধিরা। গত ১২ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমার সফর শেষে ইপি প্রতিনিধিদল এক বিবৃতিতে ওই আহ্বান জানায়। তারা দেশটির রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের আন্তর্জাতিক তদন্তের তাগিদ দিয়েছে।

প্রতিনিধিদলের পক্ষে এর নেতা পিয়ের অ্যান্তোনিও পানজেরি শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ইইউকে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক অবশ্যই পুনর্বিবেচনা করতে হবে।’ তিনি বলেন, মিয়ানমারের প্রতিটি খাত ধরে পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রণোদনা দেওয়া ও বিপরীতধর্মী উদ্যোগ নেওয়ার নীতি ইইউকে গ্রহণ করতে হবে। অ্যান্তোনিও পানজেরি বলেন, মিয়ানমারে মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের উদ্বেগ ছিল। দেশটিতে পাঁচ দিনের সফর শেষে তাদের উদ্বেগ বহাল আছে।

পানজেরি বলেন, মিয়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে মানবাধিকার পরিস্থিতির সুস্পষ্ট অবনতি ঘটছে। সাংস্কৃতিক, নৃতাত্ত্বিক ও ধর্মীয় গোষ্ঠী, মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের কাজে এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর সদস্যদের তাদের জমি থেকে তাড়ানো হচ্ছে, নিপীড়ন, এমনকি মেরে ফেলা হচ্ছে।

পানজেরি বলেন, ইপি প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে নাগরিক সমাজ, সংগঠন ও ধর্মীয় নেতারা নিশ্চিত করেছেন যে মিয়ানমারে গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রক্রিয়া অত্যন্ত কঠিন সংকটে পড়েছে। ইপি প্রতিনিধিরা মনে করেন, মিয়ানমারে সংস্কার নিশ্চিত করতে গণতান্ত্রিক রূপান্তর প্রক্রিয়া আবশ্যক; কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে মিয়ানমার তা পারবে এমন বিশ্বাস রাখতে পারছেন না ইপি প্রতিনিধিরা।

পানজেরি বলেন, ইপি প্রতিনিধিরা মিয়ানমারকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে তিনটি সুনির্দিষ্ট তাগিদ দিয়েছেন। এগুলো হলো জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) পূর্ণ সম্পৃক্ততা নিশ্চিত করে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে গত ২৩ নভেম্বর সই হওয়া প্রত্যাবাসন চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন, রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব সমস্যা দূর করতে ১৯৮২ সালের নাগরিক আইন সংশোধন এবং গত বছরের আগস্ট মাস থেকে রাখাইন রাজ্যে সংঘটিত নৃশংসতার স্বাধীন আন্তর্জাতিক তদন্ত, পূর্ণ মানবিক সহযোগিতার সুযোগ প্রদান এবং মানবিক পরিস্থিতি কার্যকরভাবে পর্যবেক্ষণ করা।

উল্লেখ্য, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের মানবাধিকারবিষয়ক উপকমিটির একটি প্রতিনিধিদল গত সপ্তাহে মিয়ানমার ও  বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা সফর করে। ওই প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ইপির পররাষ্ট্র ও বাণিজ্যবিষয়ক কমিটি এবং আসিয়ানবিষয়ক কমিটির সদস্যরাও ছিলেন। জানা গেছে, ইপি প্রতিনিধিদলটি শিগগিরই ইউরোপীয় পার্লামেন্টে একটি প্রস্তাব আনবে। সেটি গৃহীত হলে তা ইইউর ২৮টি সদস্য রাষ্ট্রের জন্য নির্দেশনা হিসেবে গণ্য হবে।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে আসিয়ান

রাখাইন রাজ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় মিয়ানমারের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে আসিয়ান পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। পাশাপাশি ...

ফিলিস্তিনপন্থি গ্রুপকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন টিউলিপ

যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে প্রো-প্যালেস্টাইন কর্মসূচির সংগঠন ‘প্যালেস্টাইন অ্যাকশন’কে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করে নিষিদ্ধ করার প্রস্তাবে ...