আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশিত: ১৬/০৮/২০২৫ ১২:২৯ পিএম

যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে ভয়াবহ খাদ্যসংকট দেখা দিয়েছে। জাতিসংঘের বিশ্বখাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) সতর্ক করে বলেছে, পর্যাপ্ত সহায়তা না পেলে পরিস্থিতি ‘পূর্ণাঙ্গ বিপর্যয়ে’ রূপ নিতে পারে। সংস্থাটি জানিয়েছে, রাখাইনে দ্রুত বাড়তে থাকা বাস্তুচ্যুত মানুষকে খাবার সরবরাহের চেষ্টা করছে তারা।

খাদ্য সংকটে পড়া জনগোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে ২০১২ সালের সংঘর্ষে সর্বস্ব হারানো প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা মুসলিম। ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর গৃহযুদ্ধে সারাদেশের অর্থনীতি ধসে পড়লেও, সামরিক অবরোধের কারণে রাখাইনের অবস্থা এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ।

খাদ্যাভাবে ভয়ংকর রূপ নিয়েছে মানুষের হতাশা। এপ্রিলে সিত্তে শহরের এক আশ্রয় শিবিরে কীটনাশক পানে আত্মহত্যা করেন এক ব্যক্তি। একইভাবে জুনে মারা যান এক রাখাইন পরিবারের পাঁচজন। সম্প্রতি অভাবের কারণে আত্মহত্যা করেছেন এক বৃদ্ধ দম্পতি।

চলতি বছর ডব্লিউএফপির বৈশ্বিক তহবিল গত বছরের তুলনায় ৬০% কমে গেছে। ফলে মিয়ানমারে তীব্র খাদ্যসংকটে থাকা মানুষের মাত্র ২০%কে সাহায্য করা সম্ভব হচ্ছে সংস্থাটির। চলতি বছরের শুরু থেকেই প্রদেশটিতে অভাবগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে। তবে তহবিল সংকটে এমন পরিস্থিতিতেও মার্চ মাসে রাখাইনে সহায়তা কমাতে বাধ্য হয়েছে সংস্থাটি।

২০২৩ সালে দেশটিতে ক্ষমতাসীন সামরিক জান্তা সরকার আরাকান আর্মির অস্ত্র ও রসদ সরবরাহ ঠেকাতে রাখাইনের সব বাণিজ্য ও পরিবহন রুট বন্ধ করে দেয়। সিত্তে শহরটিতে এখন কেবল সমুদ্র ও আকাশপথে পৌঁছানো যায়। এখানকার কৃষকরা মাঠে চাষ করতে পারছেন না। রোহিঙ্গাদের মাছ ধরা নিষিদ্ধ। ফলে জনপদটির লোকজনের আয়ের পথ প্রায় বন্ধ।

আশ্রয় শিবিরের এক বাসিন্দা জানান, ‘বাইরে যাওয়া যায় না, কাজ নেই। জিনিসপত্রের দাম পাঁচগুণ বেড়েছে। আয় না থাকায় অনেকেই সেদ্ধ কচু ও লতাপাতা খেয়ে বেঁচে আছে।’ এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সামরিক বাহিনীতে জোরপূর্বক নিয়োগ। যে পরিবার তাদের কোনো পুরুষকে বাহিনীতে পাঠায়নি, তাদের আর্থিক জরিমানা দিতে হচ্ছে।

ডব্লিউএফপি বলছে, রাখাইনের সব সম্প্রদায়ই গভীর অর্থনৈতিক চাপে আছে। অনেক পরিবার ঋণ নিচ্ছে, ভিক্ষা করছে, সন্তানদের পড়াশোনা বন্ধ করছে–এমনকি মানব পাচারেরও শিকার হচ্ছে। সংস্থাটি নির্দিষ্ট করে কোনো দেশের নাম না বললেও, যুক্তরাষ্ট্রের ট্রাম্প প্রশাসনের ৮৭% ইউএসএইড তহবিল কমানো পরিস্থিতি আরও কঠিন করে তুলেছে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্র একাই ডব্লিউএফপিকে প্রায় ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার অনুদান দিয়েছিল।

গত বছরের নভেম্বরে জাতিসংঘ রাখাইনে ‘আসন্ন দুর্ভিক্ষ’ বিষয়ে সতর্ক করেছিল। ৯ মাস পরও তহবিল ঘাটতি পূরণ না হওয়া এবং নতুন করে সাহায্যের আবেদন জানানোই চলমান সংকটের ভয়াবহতা তুলে ধরছে। খবর বিবিসির

পাঠকের মতামত

এবার গাজার পাশে দাঁড়াল চীন, জাতিসংঘে বললো: ‘গাজা শুধু ফিলিস্তিনিদের!’

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সেশন-এ বক্তব্য রাখেন চীনের জাতিসংঘে স্থায়ী প্রতিনিধি ফু কং। তিনি শক্তিশালীভাবে বলেন, ...

মিয়ানমারের জান্তা সরকারের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়ে মারা গেছেন

মিয়ানমারের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট মিন্ট সোয়ে বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে রাজধানী নেপিদোর একটি সামরিক হাসপাতালে ...

বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য ‘সুখবর’ দিল মালয়েশিয়া সরকার

মালয়েশিয়ায় কর্মসংস্থানের জন্য বাংলাদেশ ওভারসিস এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)-এর মাধ্যমে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য নতুন ...