প্রকাশিত: ২৬/০৬/২০১৭ ১০:৪৬ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৫:৪২ পিএম

গত ঈদুল আজহায় পরিবার নিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ পেলেও এবার বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ঈদ কাটছে পরিবারের সদস্যদের ছাড়াই।

যদিও নিকটাত্মীয় এবং দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে যথারীতি আনুষ্ঠানিক-অনানুষ্ঠানিকভাবে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করছেন তিনি।

আজ সোমবার দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। খালেদা জিয়া প্রথমেই শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন বিদেশি কূটনীতিবিদদের সঙ্গে। এরপর দেশের বিশিষ্ট নাগরিক, রাজনীতিবিদ ও অন্যদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি।

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে খালেদা জিয়া প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করবেন। এরপর তিনি যাবেন বনানী কবরস্থানে। সেখানে তাঁর ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর কবর জিয়ারত করবেন।

গত ঈদুল আজহায় দুই ছেলের পরিবারের সঙ্গে সৌদি আরবে ঈদ করেন খালেদা জিয়া। সেখানে বিএনপি নেত্রী তার ছেলে তারেক রহমান, পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান, নাতনি জাইমা রহমান ও ছোট ছেলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান সিঁথি ও তার সন্তানদের কাছে পান।

তার আগের বছর ঈদুল আজহায় লন্ডনে তাদের সঙ্গে ঈদ করার সুযোগ হয় বিএনপি নেত্রীর। সেবার দীর্ঘ আট বছর পর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করার সুযোগ হয় খালেদা জিয়ার।

২০০৭ সালের এক-এগারোর রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য বড় ছেলে তারেক রহমান পরিবার নিয়ে যান লন্ডনে। এখনো সেখানেই থাকছেন তিনি। ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো সপরিবারে থাকতেন মালয়েশিয়ায়। আর বিএনপি নেত্রী একা বাংলাদেশে।

গত ১০ বছরের মধ্যে প্রথম আট বছরই খালেদা জিয়া ও তার দুই ছেলের পরিবার ঈদ উদযাপন করে আলাদা। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের পরিবারের এই তিন অংশ ঈদ করে আসছে তিন জায়গায়। এর মধ্যে আরাফাত রহমান ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালেয়শিয়ায় মৃত্যুবরণ করেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে সংসদ ভবন এলাকার বিশেষ কারাগারে আটক থাকার পর ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর মুক্তি পান খালেদা জিয়া। এর মধ্যে ২০০৭ সালের দুটি ঈদ কারাগারে কেটেছে তার। পরে তারেক রহমান প্যারোলে মুক্তি নিয়ে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান। সেখানে সঙ্গে আছেন স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও মেয়ে জাইমা রহমান।

এদিকে আরাফাত রহমান কোকোও ওই সময়ে প্যারোলে মুক্তি পেয়ে থাইল্যান্ড যান। পরে তার স্ত্রী শর্মিলা রহমান, দুই মেয়ে জাফিয়া রহমান ও জাহিয়া রহমানকে নিয়ে মালেয়শিয়ায় যান। সেখানে গত বছর মৃত্যুবরণ করেন তিনি। রাজধানীর ঢাকার বনানী কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

পরিবারের তিন অংশ তিন স্থানে থাকায় ১৭টি ঈদ আপনজন ছাড়াই উদযাপন করেছেন বিএনপি নেত্রী। পরিবারের তিন অংশ তিন জায়গায় ঈদ করলেও ঈদের দিনে খালেদা জিয়ার সঙ্গে টেলিফোনে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তার ছেলের পরিবারের সদস্যরা।

এবার ঈদুল ফিতরে পরিবার ছাড়াই ঈদ করছেন খালেদা জিয়া। পরিবার ছাড়া ঈদ করলেও প্রতিবছর ঈদের দিন নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন খালেদা জিয়া। ঈদের দিন রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিশিষ্ট নাগরিক, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক ও সর্বসাধারণের সঙ্গে ঈদের কুশল ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন বিএনপি নেত্রী। আর রাতে ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরা আসেন তার সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করতে। ঈদের দিন সকালে এসেও তারা বিএনপি নেত্রীকে সঙ্গ দিয়ে যান।

বিএনপি চেয়ারপারসনের ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন, পুত্র, পুত্রবধূ ও নাতি-নাতনিদের ছাড়া একাকি ঈদ খুব একটা উপভোগ করেন না খালেদা জিয়া। যদিও দলীয় প্রধান হিসেবে সবকিছু পেছনে ফেলে নেতাকর্মীদের পাশে থাকতে হয়, সেজন্য এসব নিয়ে খুব একটা ভাবেনও না তিনি। এরপরও পরিবার কাছে না থাকার নিঃসঙ্গতা লুকিয়ে থাকে হাসির আড়ালে।

পাঠকের মতামত

২ বাংলাদেশিকে গুলি করে মারল বিএসএফ, মরদেহ নিয়ে গেল ভারতীয় পুলিশ

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় খয়খাটপাড়া সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। পরে তাদের ...