
মাহাবুবুর রহমান :
কক্সবাজারের একমাত্র পরমাণু চিকিৎসা কেন্দ্রে রোগী গেলে গেইট থেকেই বের করে দেওয়া হয়। কোন রোগি গেলে তাকে কর্মচারীরাই কথা বলে বিদায় করে দেওয়া হয়। পৌছাতে পারেনা ডাক্তার পর্যন্ত। অবশ্য ডাক্তারই চেম্বার করেনা। মূলত যখন থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে তখন থেকে এই পরিস্থিতি বলে জানান সেখানে কর্মরতরা। এছাড়া কোন ডাক্তার অফিস করেননা, প্রশাসনিক কর্মকর্তা নেই প্রায় নেই মাস এছাড়া কোর রক্ত পরীক্ষা জাতিয়ে কোন পরীক্ষায় হয় না মাঝে মধ্যে প্রধান ডাক্তারের পুরাতন রোগিদের দেখা হয় তাই কালে ভদ্রে সচেতন মহলের দাবী সরকারি এই প্রতিষ্টান এভাবে কার্যত বন্ধ রাখার কোন অনুমতি আছে কিনা জানতে চায় কক্সবাজারের মানুষ।
খুরুশকুল মুনপাড়ার আবদুস সালাম বলেন, আমার থাইরয়েটের সমস্যার কারনে প্রায় সময় কক্সবাজার কলাতলীর পরমানু শক্তি কমিশনের হাসপাতালে চিকিৎসা করি কিন্তু বর্তমান করোনা পরিস্থিতিরকারনে প্রায় ২ মাসের বেশি সময় ধরে বন্ধ আছে সেই পরমানু হাসপাতাল। কিছু দিন আগে গিয়েছিলাম অনেক কষ্ট করে হাসপাতাল পর্যন্ত পৌছে গেইট থেকেই আমাকে ফেরত দেওয়া হয়েছে বলেছে ডাক্তার নেই আর কোন পরীক্ষাও বা চিকিৎসা হবে না।
পিএমখালীর ইউপি সদস্য নুরুল হুদা বলেন, আমার এক আত্বীয়ের গলা ফুলার সমস্যার কারনে ৫/৬ মাস আগে সেই পরমানু হাসপাতালে পরীক্ষা করে কিছুটা ভাল ফল পেয়েছিল সে জন্য গত কয়েকদিন আগে আবারো আরেক রোগি পাঠিয়েছিলাম কিন্তু তিনি পরমানু হাসপাতাল বন্ধ আছে বলে ফিরে এসেছে।
ধাওয়াখালীর সেই মহিলা রোগি বলেন, আমি ৩ রমজানে সেখানে গিয়েছিলাম ১২ টার দিকে ঢুকতে দরোয়ান বলেছে,ডাক্তার নেই ভেতরে গিয়ে লাভ হবেনা। পরে আমি অনেক অনুরোধ করে ভেতরে গিয়ে এক কর্মচারীরা সাথে কথা বল্লে তিনি বলেণ,আপনার চিকিৎসা আগে হলেও এখন হবে না। বর্তমানে এখানে কোর রক্ত পরীক্ষা করা হয়না। তাছাড়া ডাক্তারও নিয়মিত বসে না।

এ বিষয়ে সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে সরকারি এই হাসপাতালে ঢুকতে গেলে আগে প্রধান গেইটের বাইরে দারোয়ানকে বিস্তারিত কৈফিয়ত দিয়ে তার পর ভেতরে ঢুকতে হয়। পরে ভেতরে গিয়ে দেখা গেছে বাইরে দরজা খুলা থাকলেও কোন রুমে কোন কর্মচারী নেই। রিসিপন থেকে শুরু কালেকশন কোথাও কোন কর্মচারী নেই। পরে সাংবাদিক পরিচয় দিলে এক কর্মচারীএসে বলেন, আমাদের এখানে আগে ৪ জন ডাক্তার ছিল এখন ২ জন বদলী হয়ে গেছে বর্তমানে ২ জন আছে এর মধ্যে ডাঃ সাইদুল ইলসাম প্রিন্স মাঝে মধ্যে অফিস করে তাও দুপুর ১ টার মধ্যে আসতে হবে না হলে উনাকে প্রাইভেট চেম্বারে দেখাতে হবে। আর দেশের করোনা পরিস্থিতির কারনে কোন রক্ত পরীক্ষা বা সাধারণ পরীক্ষা গুলো হচ্ছে না। এটা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ।
এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, ডাঃ প্রিন্স মাঝে মধ্যে অফিস করলেও ডাঃ প্রিয়াংকা মোটেও অফিস করেন না। আর এখানে সব কিছু হয় ডাঃ প্রিন্স সাহেবের নির্দেশে উনি যা বলে তাই এখানে সবাই পালন করে। বে কার্যত হাসপাতাল বন্ধ এটা সত্য নিরাপত্তার কথা বলে কেউ ঠিকমত দায়িত্ব পালন করেননা।
এদিকে সদ্য বিদায়ী একজন ডাক্তার বলেন, কক্সবাজার ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন এন্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস এ চাকরী করা খুবই কঠিন সেখানে এক নায়ক তন্ত্র চলে আর অনৈতিক কর্মকান্ডের জন্য সেটা বিখ্যাত বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আপনারা কক্সবাজারের মানুষ সেখানে কি হয় খোজ খবর নেন প্রয়োজনে আমি সহযোগিতা করবো। এদিকে পরমানু হাসপাতালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোঃ জামাল মিয়া কর্মস্থলে অনুপস্থিত প্রায় ৩ মাস। মোবাইলে কারন জানতে চাইলে তিনি বলেন,লকডাউনের আগে পাবনায় এসেছিলাম আর যেতে পারিনি।
এ ব্যাপারে কক্সবাজার ইনস্টিটিউট অব নিউক্লিয়ার মেডিসিন এন্ড অ্যালায়েড সায়েন্সেস এর প্রধান ডাঃ সাইদুল ইসলাম প্রিন্সের কাছে জানতে চাইলে উনার ফোন একজন মহিলা রিসিভ করে বলেন, স্যার ব্যস্ত আছে উনার সাথে কথা বলা যাবে না।
এ ব্যাপারে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব রোকসানা মালেকা বলেন, সরকারি হাসপাতালে রোগি ফিরিয়ে দেওয়ার কোন এখতিয়ার নেই তবে বিষয়টি পরমানু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যানকে জানালে ভাল হয়। সুত্র: দৈনিক কক্সবাজার
পাঠকের মতামত