প্রকাশিত: ২৩/১১/২০১৭ ৯:৪৯ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১০:৪০ এএম
Single Page Top

শফিক আজাদ,উখিয়া নিউজ ডটকম::
মিয়ানমারের মংডু ফকিরাবাজার এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী ও মংডু শহর স্বর্ণ ব্যবসায়ী সমিতির সেক্রেটারী উখিয়ার কুতুপালং লম্বাশিয়া এলাকায় বসবাসকারী রোহিঙ্গা দিল মোহাম্মদ (৫৫) বাংলাদেশ-মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তি সই’য়ের ব্যাপারে তাৎক্ষণিক এক প্রতিক্রিয়ায় এ প্রতিবেদককে বলেন, কোনদিন চিন্তা করিনি নিজ মাতৃভূমি ছেড়ে চলে আসতে হবে। যেহেতু সেখানকার রাখাইন সম্প্রদায় ও আইনশৃংখলাবাহিনীর সাথে আমাদের সখ্যতা ছিল ভালো। কিন্তু হঠাৎ তাদের মূখ ফেরানোর কারণে দেশ চলে আসতে হয়েছে। ৬টি স্বর্ণের দোকান, ২০একর ধানী জমিসহ মূল্যবান সম্পদ ছিল। যাহা বাংলাদেশী প্রায় ১০কোটি টাকা। মুহুর্তের মধ্যে তচনচ করে দিয়েছে বর্মি বাহিনী। তবুও আজকের বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার খবরে নিজ মাতৃভূমিতে ফিরতে অধির আগ্রহে দিন গুনছি। একই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন পাশর্^বর্তী ঝুপড়িতে বসবাসকারী রোহিঙ্গা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু বলীবাজার এলাকার বাসিন্দা মাহামুদুর রহমান (৩৫)। তিনি বলেন, রাতের বেলায় ঘুমাতে গেলে কান্নায় বুক ভেসে যায়। একটি মাত্র অনুভূতি জীবনের শেষ বেলায় কি একবার মিয়ানমারে ফেরার সুযোগ সৃষ্টি হবে? তিনি বাংলাদেশের সরকারের প্রশংসা করে আরো বলেন বাংলাদেশ সরকার যদি তাদেরকে আশ্রয় না দিত তাহলে মিয়ানমার সেনা, বিজিপি ও সশস্ত্র রাখাইন জনগোষ্ঠির হাতে অথবা নাফ নদীতে প্রাণ দিত হতো। তাই বাংলাদেশে সরকারের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞতা কথা জানান তিনি। তার মতো একই অভিমত অন্যান্য রোহিঙ্গাদের। তারাও চায়, নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে গিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করতে।

কুতুপালং ক্যাম্পে বসবাসরত রোহিঙ্গা নেতা ডাঃ জাফর আলম বলেন, মিয়ানমার যেভাবে বাংলাদেশে ডাকে ছাড়া দিয়ে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া চালু করার জন্য এগিয়ে এসেছে এতে উভয় দেশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে রোহিঙ্গারা। তবে তিনি এসময় বলেন, মিয়ানমারে আগে শান্তি ফিরে আনতে হবে। জ¦ালাও-পুড়াও, হত্যা, নিযার্তন,জুলুম বন্ধ করতে হবে। এ অবস্থায় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরানো আগুনের কুন্ডলিতে লাকড়ি নিক্ষেপের মতো ঘটনা। তিনি আরো বলেন, চুক্তিটি কাগজে কলমে নয়, বাস্তবে দেখতে চায় রোহিঙ্গারা। তবে বাংলাদেশ সরকার যে ভাবে খোলামেলা মন নিয়ে এগিয়েছে মিয়ানমারকেও ঠিক সেভাবে আগাতে হবে। কারণ আমরা ফিরে যেতে চায় নিজ মাতৃভূমিতে। আর কতো বছর এদেশে রয়ে যাবো।

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ও সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী বলেন, মিয়ানমার সেনা ও বিজিপি ও রাখাইন উগ্রবাদীর নির্যাতনে মুখে ২৫ আগষ্টের পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়াও পুর্বে থেকে বসবাস করছে আরো ২লক্ষাধিক রোহিঙ্গা। এতো রোহিঙ্গা বোঝা একটি ছোট্ট রাষ্ট্রে কখনো সম্ভব নয়। তাই আমরা রোহিঙ্গা আসার পর থেকে বার বার দাবী জানিয়ে আসছিলাম যতদ্রত সম্ভব রোহিঙ্গা নাগরিকদের মিয়ানমারে ফেরত নেওয়া জন্য। অবশেষে জাতিসংঘ,ইইউসহ বিশে^র সংখ্যাঘরিষ্ট দেশের চাপের মূখে এবং আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় মিয়ানমার প্রত্যাবাসন চুক্তিতে সই হয়েছে।

এদিকে প্রত্যাবাসন চুক্তির অগ্রগতি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। নেইপিডোয় সদ্য সমাপ্ত আসেম বৈঠকে ইউরোপ ও এশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসনে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় এই চুক্তি সইয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। আন্তর্জাতিক ফোরামে মিয়ানমারের জোরালো সমর্থক চীন উদ্বাস্তু সঙ্কট নিরসনে যে তিন দফা প্রস্তাব দিয়েছে, প্রত্যাবাসন চুক্তি তার অন্যতম।

পাঠকের মতামত

Single Page Bottom

বিসিআরসি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড- ২০২৫ এ ভূষিত হলেন পুলিশ সুপার মো: নাইমুল হক পিপিএম

পর্যটন খাতের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য পুলিশ সুপার জনাব মোঃ নাইমুল হক পিপিএম ময়মনসিংহ ...

সাজেদা বেগমকে গর্জনিয়া ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব অর্পন

শামীম ইকবাল চৌধুরী,নাইক্ষ্যংছড়ি:: গর্জনিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসাবে ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ...

সাংবাদিক জসিম আজাদের বসতভিটা দখলের ঘটনায় বাবু সহ ৩ জন কারাগারে

কক্সবাজারের উখিয়ায় সাংবাদিকের বসতভিটা দখলের অভিযোগে স্থানীয়ভাবে পরিচিত মাহফুজ উদ্দিন বাবু ও তাঁর দুই সহযোগীকে ...
Single Page Footer