প্রকাশিত: ১৬/০৪/২০১৭ ৩:৪৯ পিএম

নিউজ ডেস্ক::

সীমান্ত দিয়ে ইয়াবা আসা বন্ধে মিয়ানমারের সঙ্গে কথা বলে কোন ‘সুফল পাওয়া যাচ্ছে না’ বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান খান কামাল।

রোববার (১৬ এপ্রিল) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির বিশেষ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই তথ্য দেন।

মন্ত্রী বলেন, ইয়াবা আমাদের দেশে তৈরি হয় না। আমাদের দেশে আমরা কোন মাদকই তৈরি করি না। ইয়াবা মিয়ানমার থেকে আসে। রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে হোক আর যেভাবেই হোক, ইয়াবা আসছে।

‘একসময় ভারত থেকে ফেনসিডিল আসত। এই ফেনসিডিল আসা বন্ধে ভারত সরকারের সঙ্গে কথাবার্তা বলে সেখানে আমরা কিছুটা সফল হয়েছি। তারা বিভিন্ন সীমান্তে ফেনসিডিল উৎপাদন বন্ধ করেছে। তারা সীমান্তে বেশ কড়াকড়ি করছে যাতে ফেনসিডিল না আসে। এর ফলে ভারত সীমান্ত দিয়ে ফেনসিডিল আসা আমাদের দেশে অনেকখানি কমে গেছে। ’

তিনি বলেন, ইয়াবা আসা বন্ধে আমরা মিয়ানমার সরকারের সঙ্গেও কথা বলছি। কিন্তু মিয়ানমার সরকার তাদের নীতির জন্য হোক কিংবা তারা একটু স্লো (ধীরগতিতে) চলে সেজন্য হোক, আমাদের সঙ্গে কথা বলার পরেও আমরা তাদের কাছ থেকে সুফল পাচ্ছি না।

‘মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের টিম, বিজিবি নিয়মিত মিয়ানমারে যাচ্ছে। তারাও আসছে। কথাবার্তা চলছে যাতে সীমান্ত নিয়ে ইয়াবা আদান-প্রদান না হয়। বিজিবি, কোস্টগার্ডও সচেতন আছে যেন ইয়াবাসহ কোন ধরনের মাদক আমাদের দেশে না ঢুকে। ’

গ্রেফতার করে, আইন প্রয়োগ করে মাদক বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে মনে করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এজন্য সামাজিক বিপ্লবের আহ্বান জানিয়েছেন মন্ত্রী।

‘আমি নিজে টেকনাফে গিয়ে অনেক ব্যবস্থা নিয়েছি। ছয় মাস ভাল থাকে, আবার দেখি শুরু হয়। সীমান্ত পার করে ইয়াবা যদি টেকনাফে বিক্রি হয় আমার কাছে যা ইনফরমেশন আছে তা ৫০ থেকে ৬০ টাকা। কক্সবাজার আসলে ১৫০, চট্টগ্রামে ২৫০ এবং ঢাকায় ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ডিমান্ড (চাহিদা) এবং সাপ্লাইয়ের (সরবরাহ) উপর নির্ভর করে দাম বেড়ে যায়। ’

‘সেজন্যই আমরা মনে করি, একেবারে পুলিশ অ্যাকশন দিয়ে, মানুষকে ধরে জেলখানায় পুরে দিয়ে কিংবা তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করলেই মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে না, যে পর্যন্ত মানুষ সচেতন না হয়। ’

‘মা-বাবাকে দেখতে হবে, তার ছেলেটা কোথায় যায়, কি করে। ভাইকে দেখতে হবে, তার ছোট ভাইটা কি করছে। একটা সামাজিক বিপ্লব যদি আমরা সবাই মিলে দেশে তৈরি করতে পারি…। ’

তিনি বলেন, যার যার জায়গা থেকে সবাই মাদকের কুফল সম্পর্কে কথা বলবেন। এনজিও, জনপ্রতিনিধি সবাই যার যার জায়গা থেকে কাজ করবেন। এই যুদ্ধে আমাদের জয়ী হতেই হবে।

মাদক আইন পরিবর্তনের চিন্তাভাবনা চলছে বলেও জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

তিনি বলেন, আমরা ধরলাম, মামলা দিলাম। কিন্তু সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে যায় না। এজন্য ধরার পরে এক মাসের মধ্যে তারা আবার বেরিয়ে আসে। এরপর মোবাইল কোর্টে গেলাম। কিন্তু এখানেও সীমাবদ্ধতা আছে। এজন্য আইনে পরির্বতন আনতে চাচ্ছি।

জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মো.সামসুল আরেফিনের সভাপতিত্বে এতে আরও বক্তব্য রাখেন সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম, সিএমপির উপ কমিশনার এস এম মোস্তাইন হোসেন, চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার নূরে আলম মিনা, র‌্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের জেলা কমান্ডার মো.সাহাবউদ্দিন ও মহানগর কমান্ডার মোজাফফর আহমেদ, সরকারি কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ আইয়ূব ভূঁইয়া, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ ও সিইউজের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস।

জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান এহছানুল হায়দার চৌধুরী বাবুল, আব্দুল জব্বার, মোহাম্মদ আলী শাহ, তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বাবু, পৌর মেয়র গিয়াস উদ্দিন, নিজাম উদ্দিন, বদিউল আলম বক্তব্য রাখেন।

এছাড়া জেলা পিপি আ ক ম সিরাজুল ইসলাম, চেম্বার পরিচালক একেএম আকতার হোসেন, পরিবহন শ্রমিক নেতা আব্দুল মান্নানও বক্তব্য রাখেন।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের চোরাই ১১টি মহিষ ১১লাখ ৫০হাজার টাকায় নিলামে বিক্রয়

মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে চোরাইপথে পাচারকালে কক্সবাজার উখিয়ার সীমান্ত পয়েন্ট থেকে ৬৪ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ...

১০ হাজার বাস রিজার্ভ, জামায়াতের সমাবেশে অংশ নেবে ১০ লাখের বেশি নেতাকর্মী

আগামী ১৯ জুলাই ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জাতীয় সমাবেশের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। এই সমাবেশকে দলের ...