প্রকাশিত: ০৮/০৫/২০১৮ ২:৫০ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৩:১০ এএম

নিউজ টাইমস্::
মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় তদন্ত করতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। তারা দাবি করছে, এটি তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়।

মিয়ানামারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাং ফেসবুকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে নিরাপত্তা পরিষদের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে বলে জানিয়েছে মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতী।

পত্রিকাটি বলছে, মিয়ানমার সফরকালে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রতিনিধি দলের সদসন্য ওলফ স্কুগ মিয়ানমার সেনাবাহিনীর শীর্ষ কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করতে চান বলে জানান। এ ব্যাপারে তিনি দেশটির সেনাবাহিনীর মত চান।

তবে সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাং এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিষয়টি অভ্যন্তরীন বলে দাবি করে বলেন, মিয়ানমার সরকার ও সেনাবাহিনী ২০১২ ও ২০১৬ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা তদন্ত করেছে। ইতোমধ্যে জড়িতদের শাস্তিও দিয়েছে।

ফেনবুকে দেওয়া বিবৃতিতে মিন অং হ্লাং দাবি করেন, সংস্থাগুলো মিয়ানমার আসে এবং যা ইচ্ছে করার চেষ্টা করে। আমরা এরই মধ্যে যথেষ্ট তদন্ত করেছি। কিন্তু জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদকে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তদন্ত করতে দেওয়ার সিদ্ধান্ত সেনাবাহিনীর এখতিয়ার নয়। সরকারের শুধু এই ক্ষমতা রয়েছে।

সম্প্রতি জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ৩০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ ও মিয়ানমারে চারদিনের সফর করেছেন। তাদের সফরের পর সোমবার মিয়ানমারের সেনাপ্রধান তাদের এই অবস্থান জানালেন।

মিয়ানমার সেনাপ্রধানের দাবি, বৌদ্ধ প্রধান মিয়ানমারে ধর্ষণের অভিযোগ অনেক মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। মিয়ানমারের সেনারা জড়িত এটি তো মোটেও নয়। দেশে ২০১৬ সালে ১ হাজার ১১৬টি ধর্ষণের অভিযোগ ছিল। এর মধ্যে মাত্র ১৬টি ঘটনায় সেনারা জড়িত ছিল থাকায় তাদের সবাইকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এমনকি ২০১৭ সালে ১ হাজার ৪২২টি ধর্ষণের অভিযোগের মধ্যে সেনারা মাত্র ১৭টি ঘটনায় জড়িত ছিল। তাদেরকেও ২০ বছরের কারাদণ্ডের শাস্তি দেওয়া হয়েছে।

রাখাইনের স্থানীয় জাতিগোষ্ঠীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সেনাবাহিনীর দায়িত্ব উল্লেখ করে তিনি আরও দাবি করেন, সশস্ত্র ব্যক্তিরা যদি পুলিশ ও স্থানীয়দের উপর হামলা না চালাত তাহলে সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করত না। ২০১২-২০১৮ সাল পর্যন্ত মোট ৭২ জন স্থানীয় মানুষ ‘বাঙালি’দের হামলায় নিহত হয়েছেন।

এদিকে জাতিসংঘের তদন্তের অনুরোধ প্রত্যাখ্যানের বিষয়ে সংস্থাটির অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের কূটনীতিক কেলি কারি জানিয়েছেন, এ ব্যাপারে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। কারণ এটা (রোহিঙ্গাদের ওপর মানবাধিকার লঙ্ঘন) আন্তর্জাতিক বিষয়।

পাঠকের মতামত