উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ দুই লেনের চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সেতু হচ্ছে ছয় লেনের। এই দুই লেনের মহাসড়কের ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ এলাকায় সড়কের চওড়া আবার দেড় লেইন। বর্তমান মহাসড়কটির চওড়া কম হলেও কক্সবাজারের সাথে আগামীর যাতায়াত ব্যবস’াকে গুরুত্ব দিয়ে এই মহাসড়কের চারটি সেতু ছয় লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। ক্রস বর্ডার নামের প্রকল্পটি ইতিমধ্যে একনেকে চারলেন হিসেবে অনুমোদন পেলেও সংশোধিত প্রকল্প হিসেবে তা ছয় লেনে উন্নীত করা হচ্ছে। পরিকল্পনা কমিশন অতিক্রম করে তা এখন একনেক হওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
ছয় লেনে উন্নীত হতে যাওয়া চারটি সেতু হলো পটিয়া চানখালী খালের উপরের ইন্দ্রপুল সেতু, চন্দনাইশ বড়গুনি ব্রিজ (মাজার পয়েন্ট), শঙ্খ নদীর উপরে সাঙ্গু ব্রিজ এবং চকরিয়ার মাতামুহুরী ব্রিজ। কিন’ চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের দোহাজারি পর্যন্ত দেড় লেইন এবং দোহাজারি থেকে কক্সবাজর পর্যন্ত দুই লেনের সড়কটিতে ছয় লেনের সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথের ক্রস বর্ডার প্রকল্পের ব্যবস’াপক ও নির্বাহি প্রকৌশলী সুপ্তা চাকমা বলেন, ‘কক্সবাজারে ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে, তাই এই শহরের সাথে দেশের অন্যান্য
এলাকার যাতায়াত ব্যবস’ার উন্নয়নে সরকার আন্তরিক। এজন্য চারটি ব্রিজকে ছয় লেনে উন্নীত করা হচ্ছে।’
কাজটি কোন প্রকল্পের আওতায় করা হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, জাইকার অর্থায়নে ক্রস বর্ডার প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ১৭টি সেতু, ৭টি কালভার্ট, দুটি (বেনাপোল ও রামগড়) এক্সেল লোড নিয়ন্ত্রন স্টেশন এবং এপ্রোচ সড়ক নির্মাণের প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এগুলোর মধ্যে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে রয়েছে চারটি সেতু নির্মাণ এবং বারৈয়ারহাট-হেঁয়াকো-রামগড় আঞ্চলিক মহাসড়কে রয়েছে ৮টি সেতু, ৭টি কালভার্ট ও রামগড়ে একটি এক্সেল লোড কন্ট্রোল স্টেশন নির্মাণ।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, ২ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকার প্রকল্পটি ২০১৬ সালে একবার একনেকে অনুমোদন পেয়েছিল। কিন’ তখন এই প্রকল্পে সেতুগুলো ছিল চার লেনের। পরবর্তীতে প্রকল্প সংশোধন করে ছয় লেনে উন্নীত করে নতুন করে তা আবারো মন্ত্রণালয়ে ডিপিপি আকারে পাঠানো হয়। বর্তমানে সেই প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
বর্তমানে তা বেড়ে কত টাকা হতে পারে জানতে চাইলে প্রকল্পের ব্যবস’াপক ও নির্বাহি প্রকৌশলী সুপ্তা চাকমা বলেন, ‘ছয় লেনে উন্নীত করায় খরচ বেড়ে তা প্রায় পৌনে চার হাজার কোটি টাকা হতে পারে। একনেকে অনুমোদন পেলেই আগামী অক্টোবরে কাজ শুরু করা যেতে পারে। তা শুরু হলে জুন ২০২২ এর মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।’
কিন’ এই মহাসড়কটি বর্তমানে কোথাও দেড় লাইন ও দুই লেনের। এখন ছয় লেনের সেতু নির্মিত হলে প্রধান মহাসড়কটি ছয় লেনের কবে হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সড়কের বিষয়ে আমার জানা নেই। আর সেতুর উপরে প্রধানত চার লেনের সড়ক হবে। আর উভয়পাশে দুই লেন হবে সার্ভিস লেন (ছোটো যানবাহন চলাচলের রাস্তা)।’
এদিকে চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়ক চারলেনে উন্নীতকরণের প্রকল্পের বিষয়ে জানতে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের দোহাজারি সার্কেলের নির্বাহি প্রকৌশলী মোহাম্মদ তোফায়েল বলেন, ‘১৫৫ কিলোমিটার দীর্ঘ চট্টগ্রাম কক্সবাজার মহাসড়কটি চার লেনের উন্নীতকরণ প্রকল্পটি মন্ত্রণালয় অনুমোদন শেষে এখন প্রি একনেকের অপেক্ষায় রয়েছে। অনুমোদন সাপেক্ষে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে প্রকল্পটি ২০২০ সালের মধ্যে শেষ হতে পারে।’
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক একটি দুর্ঘটনা প্রবণ মহাসড়ক হিসেবে বিবেচিত হয়। এই মহাসড়কের বিভিন্ন অংশে গর্ত থাকায় এবং চওড়া কমের পাশাপাশি অনেকগুলো বাঁক রয়েছে। কক্সবাজারের মহেশখালীতে গড়ে উঠছে দেশের অন্যতম পাওয়ার হাব। টেকনাফে নাফ নদীর তীরে হচ্ছে বিশেষ পর্যটন কেন্দ্র, বিভিন্ন বিনিয়োগে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে কক্সবাজার। তাই কক্সবাজারের সাথে যাতায়াত ব্যবস’া উন্নত করতে নেয়া হয়েছে চার লেন মহাসড়ক প্রকল্প। এছাড়া ট্রেন লাইন স’াপনের কাজও চলছে। অপরদিকে বহদ্দারহাট থেকে পটিয়া ওয়াই জংশন পর্যন্ত সড়কটি ছয় লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। কুয়েত ফান্ডের অর্থায়নে চলছে এই প্রকল্পের কাজ।
পাঠকের মতামত