ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ২৭/০৪/২০২৪ ৯:২১ এএম

বৈশাখের কাঠফাটা রোদে দেশজুড়ে চলছে দাবদাহ। বাদ নেই পর্যটন নগরী কক্সবাজারও। তীব্র তাপপ্রবাহে এখানকার মানুষের পাশাপাশি প্রাণীকূলেও হাঁসফাঁস অবস্থা। অস্বস্তিতে আছে সাফারি পার্কে থাকা প্রাণীগুলোও।

এ থেকে পরিত্রাণে জলচর প্রাণীগুলোর আবাসে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা এবং স্থলচর প্রাণীগুলোকে সকাল-সন্ধ্যা দুবার গোসল করানো হচ্ছে বলে জানান পার্কের ইনচার্জ (রেঞ্জার) মাজহারুল ইসলাম।

আবহাওয়া অধিদপ্তর কক্সবাজারের ইনচার্জ সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান বলেন, টানা পক্ষকাল ধরে কক্সবাজারের তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নামছে না। এরমধ্যে ১৩ ও ১৪ এপ্রিল দুদিন কক্সবাজারে সর্বোচ্চ ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়। যা অনুভূত হয়েছিল ৪০-৪৫ ডিগ্রির মতো। প্রায় প্রতিদিন ৩৪-৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে তাপমাত্রা বিরাজ করছে। ব্যারোমিটারে তাপমাত্রা ৩৫ দেখালেও জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে সেটা অনুভূত হচ্ছে ৪০-৪২ ডিগ্রি। এমন পরিস্থিতিতে গরমে বাইরে বের হওয়া দায় হয়ে পড়ছে।

চকরিয়ার ডুলাহাজারা সাফারি পার্কের ইনচার্জ মাজহারুল ইসলাম বলেন, প্রচণ্ড গরমে মানুষের পাশাপাশি প্রাণীগুলোও অস্বস্তিতে আছে। এ অবস্থায় জলচর প্রাণীরা প্রাকৃতিকভাবে গোসল করতে পানির পরিমাণ নিয়মিত বাড়ানো হচ্ছে। আর স্থলচর প্রাণীগুলোকে নিয়মিত দুবার গোসল করানো হচ্ছে।

ডুলাহাজারা সাফারি পার্কে কুমির, কচ্ছপ, অজগরসহ ৬৩টি সরীসৃপ প্রজাতি, বাঘ, সিংহ, বানর, গয়াল, জলহস্তি, উইল্ডবিস্ট, হাতি, হরিণ, হনুমানসহ ১১৮টি স্তন্যপায়ী, ইমু, উটপাখি, গ্রিফন শকুন, রাজহাস, টিয়া, বনমোরগ, রাজধনেশসহ ২১৭টি পাখিসহ প্রাণী রয়েছে ৩৯৮টি। ৯০০ হেক্টর জমি নিয়ে বেষ্টিত পার্কের মধ্যে বায়োডাইভারসিটি এলাকা রয়েছে প্রায় ২০০ হেক্টর। এ অংশটি গাছে আচ্ছাদিত। বাকি অংশগুলোও মাদার ট্রিসহ নানা পাহাড়ি গাছ-গাছালিতে পূর্ণ। ফলে এখানে গরম অনুভূত কম। তারপরও খাঁচাবন্দি প্রাণীকূলকে স্বাভাবিক তাপমাত্রা নিশ্চিতে কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করে যাচ্ছে বলে জানান ইনচার্জ মাজহারুল ইসলাম।

পার্কের প্রবেশ টিকিট ইজারাদার ফজলুল করিম সাঈদী বলেন, বৈশাখের খরতাপ প্রবাহিত হলেও প্রতিদিনই পার্কে দর্শনার্থী আসছেন। গড়ে হাজার দেড়েক প্রকৃতিপ্রেমী পার্কে ঢোকেন।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কক্সবাজারের কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম বলেন, সারাদেশের ন্যায় কক্সবাজার জেলার ওপর দিয়েও মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এতে মানুষের পাশাপাশি জীবজগতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

তিনি বলেন, গত শীত মৌসুম থেকে জেলায় বৃষ্টিপাত নেই বললেই চলে। অতীতে বৈশাখের শুরুতে কালবৈশাখীসহ টানা কয়েকদিন বৃষ্টি হতো। কিন্তু এখন বৃষ্টির দেখা নেই। ফলে তাপপ্রবাহ ক্রমেই বাড়ছে।

কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) আনোয়ার হোসেন সরকার বলেন, একদিকে জলবায়ুর পরিবর্তন, অন্যদিকে নির্বিচারে বৃক্ষনিধন। এসব ঘটনা প্রকৃতিকে উত্তপ্ত করছে। আবহাওয়ার নেতিবাচক প্রভাব থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় বাড়ির আঙিনা, রাস্তার পাশসহ উপযুক্ত জায়গায় পর্যাপ্ত পরিমাণে গাছ লাগানো।

সহকারী আবহাওয়াবিদ আবদুল হান্নান বলেন, আগামী ২ ও ৩ মে সারাদেশে কালবৈশাখী ঝড় হওয়া আশঙ্কা রয়েছে। এটা কক্সবাজারেও হতে পারে। তখন হয়তো কিছুটা তাপপ্রবাহ কমতে পারে। সুত্র: জাগো নিউজ

পাঠকের মতামত