নিউজ ডেস্ক::
জেলায় এলপি ও টোটাল গ্যাস বিক্রিতে অনিয়মের শেষ নেই। একদিকে ওজনে ঠকানো হচ্ছে, অপরদিকে একেক স্থানে একেক রকমের দামে বিক্রি করা হচ্ছে। এর ফলে প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছে ক্রেতারা।
এলপি ও টোটাল গ্যাসের দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠে নেমেছে জেলা প্রশাসন। এখন থেকে ১২ কেজি ও সাড়ে ১২ কেজি ওজনের গ্যাস সিলিন্ডারগুলো সর্বোচ্চ ৯৫০ টাকার বেশি দামে বিক্রি করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে ব্যবসায়ীদের সর্তক করেছেন জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন।
সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে পবিত্র রমজানে পণ্য বিক্রি থেকে শুরু করে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে ব্যবসায়ী, রাজনৈতিক ও বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় এলপি গ্যাস পরিবেশকদের উদ্দেশ্যে জেলা প্রশাসক এ কথা বলেন।
জানা গেছে, কক্সবাজারে বর্তমানে গ্যাস ব্যবহারকারি রয়েছে ৫০ হাজারেও বেশি। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সুযোগ বুঝে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিচ্ছে। একেক স্থানে একেক দামে এলপি ও টোটাল গ্যাস বিক্রি হওয়ায় বিপাকে পড়ছে ক্রেতারা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শহরে বর্তমানে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকায় এলপি ও টোটাল গ্যাস বিক্রি করা হচ্ছে। যদিও এই গ্যাসের সরকারের নির্ধারিত মূল্য ৭৫০ টাকা।
গতকাল সোমবার সকালে এলপি গ্যাস সিলিন্ডার কিনেছেন মোহাজেরপাড়া এলাকার সুজা উদ্দিন রুবেল। তিনি বলেন, ওই গ্যাস সিলিন্ডারের দাম নিয়েছে ১ হাজার ৫০ টাকা। প্রশাসন বিভিন্ন সময় দর-দাম ঠিক করে দেয়, কিন্তু ব্যবসায়ীরা সেই নির্দেশনা তোয়াক্কা করে না।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের অনুষ্ঠিত সভায় কক্সবাজার এলপি গ্যাস পরিবেশক সমিতির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, তাদের সমিতির আওতাভুক্ত ব্যবসায়ী রয়েছে ৩৭ জন। এর বাইরে আরও প্রায় ৫০টি গ্যাস বিক্রয়ের দোকান রয়েছে। সেগুলো লাইসেন্সভুক্ত নয়। তাদের সমিতির আওতাভুক্ত ব্যবসায়ীরা এলপি গ্যাস সর্বোচ্চ ৯৫০ টাকা করে বিক্রি করে। কিন্তু সমিতির বাইরের ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। একারণে ঢালাওভাবে বদনাম হচ্ছে। তাদের (লাইসেন্সবিহীন) বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, রমজান উপলক্ষে কক্সবাজারে পদ্মা ও যমুনা গ্যাসের সরবরাহ বাড়ানোর জন্য প্রশাসনকে উদ্যোগ নিতে হবে।
অভিযোগ রয়েছে, এলপি গ্যাস পরিবেশক সমিতির সদস্যরাও ১হাজার থেকে ১১’শ টাকা পর্যন্ত সিলিন্ডার প্রতি হাতিয়ে নিচ্ছে ক্রেতাদের কাছ থেকে।
কক্সবাজার সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফরিদ উদ্দীন খন্দকার বলেন, কিছু অসাধু ব্যবসায়ী রয়েছে, যারা বড় গ্যাস সিলিন্ডার খুলে ৩ থেকে ৪ টি ছোট গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি করে। এর ফলে গ্রাহকেরা প্রতারিত হয়। এছাড়াও গ্যাস সিলিন্ডার খোলার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকিও রয়েছে। এসব অসাধু ব্যবসায়ীদের খুঁজে বের করে শাস্তির আওতায় আনা হবে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন বলেন, এলপি গ্যাস নিয়ে এতদিন যা হওয়ার হয়েছে, কিন্তু এখন থেকে আর নয়। বিশেষ করে পবিত্র রমজানে সর্বোচ্চ ৯৫০ টাকার মধ্যে এলপি ও টোটাল গ্যাস বিক্রি করতে হবে। এটি মনিটরিং করতে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি টীম মাঠে থাকবে। যদি কোন নয়ছয় হয়, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে সুত্র: দৈনিক কক্সবাজার
পাঠকের মতামত