প্রকাশিত: ১১/১২/২০১৬ ১০:১০ পিএম

এনটিভি::

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনের মুখে মিয়ানমার থেকে বাস্তচ্যুত হয়ে রোহিঙ্গা মুসলিমরা জীবন নিয়ে সাগর পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আসছে। দালালদের মাধ্যমে এ দেশে ঢুকার পর তারা ছড়িয়ে পড়ছে বিভিন্ন স্থানে।

আজ রোববার বিকেলে ২২ জনের একটি রোহিঙ্গা মুসলিম দল আশ্রয়ের খোঁজে চট্টগ্রাম শহরে এসে উঠে। এদের মধ্যে ১১ জন নারী, আটজন শিশু এবং তিনজন পুরুষ। তারা বন্দরনগরীর আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ গেইটে অবস্থান নেয়। তাদের দেখতে স্থানীয় লোকজন ভিড় জমায়।

রোহিঙ্গারা জানায়, তারা নির্যাতনের মুখে মিয়ানমারের রাখাইন সীমান্ত থেকে বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে এ দেশে এসেছে দালালদের মাধ্যমে। প্রত্যেকে ২০ হাজার টাকা করে দালালদের দিয়েছে। এ দেশে আসার পর কক্সবাজারের উপকূলের কুতুবপালংয়ে তারা কয়েকদিন ছিল। সংঘবদ্ধ একটি চক্রের সহায়তায় তারা চট্টগ্রাম পর্যন্ত এসেছে ।

সেই চক্রটি টেকনাফ থেকে চট্টগ্রামগামী একটি বাসে তুলে দেয় রোহিঙ্গাদের। তাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ২৮০ টাকা করে ভাড়া নেয়। বাসটি তাদের নগরীর সিনেমা প্যালেস এলাকায় নামিয়ে দেয়। পরে তারা আন্দরকিল্লা জামে মসজিদ গেইটের সামনে অবস্থান নেয়।

রোহিঙ্গা নারী মোছাম্মৎ নাছিমা খাতুন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, মিয়ানমারের আরাকান রাজ্য থেকে তারা সাগর পাড়ি দিয়ে এ দেশে আসেন। কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালংয়ে তাদের আত্মীয়-স্বজন রয়েছে। সেখানে কয়েকদিন থাকার পর দালালের পরামর্শে তাঁরা চট্টগ্রামের পথে যাত্রা করেন।

ওই নারী এ সময় মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন। তিনি জানান, সেখানে রোহিঙ্গা মুসলমান পুরুষদের নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে। নারীদের নির্যাতন করা হচ্ছে। তাঁরা নির্যাতনের মুখে নৌকা দিয়ে হাতিমারা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে এসেছেন।

রোহিঙ্গা দলের সদস্য হাফেজ মো. কাসেম বলেন, ‘রাখাইনে বয়স্ক লোকদের মেরা ফেলা হচ্ছে। নারীদের নানাভাবে নির্যাতন করছে, জুলুম করছে। আমি দুই বোন ও ভাইয়ের মেয়েসহ ছয়জনকে নিয়ে পালিয়ে এসেছি। প্রথমে কুতুপালং আসি। সেখানে একদিন ছিলাম। পরে দালালরা আমাদের চট্টগ্রামের বাসে তুলে দেয়।’

আনোয়ারা বেগম নামের আরেক নারী জানান, তাঁর স্বামীকে কেটে ফেলা হয়েছে। ছেলেকে আগুনে ফেলে দিয়েছে। মা-বাবা আর শ্বশুর-শাশুড়িকেও মেরে ফেলা হয়েছে। পরে এক ভাইয়ের সহায়তায় তিনি রাখাইন থেকে চলে আসেন।

আজ মাগরিবের পর পুলিশের একটি টহল দল আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ এলাকায় গিয়ে রোহিঙ্গাদের দলটিকে দেখে আসে।

এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জসিম উদ্দিন জানান, রোহিঙ্গারা অবৈধভাবে এ দেশে আসছে। খবর পেলেই তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাঠকের মতামত