
উখিয়া নিউজ ডটকম::
ষষ্ঠ শ্রেণীর নিয়মিত কাস করে কক্সবাজার তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদরাসা থেকে মাত্র ৮৬ দিনে ৩০ পারা কুরআন মুখস্থ করে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করল ইয়াসিন আরাফাত খান। পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষায়ও চমকপ্রদ ফলাফল করে চলেছে মাত্র সাড়ে ১১ বছর বয়সী এই মেধাবী মুখ।
যে বয়সে খেলাধুলা আর দুষ্টুমিতে ছেলেদের সময় কাটে, সে বয়সে মহান আল্লাহর ৩০ পারা কালাম নির্ভুলভাবে মুখস্থ করা সত্যিই আশ্চর্যের।
হাফেজ ইয়াসিন নয়া দিগন্তের কক্সবাজার জেলা সংবাদদাতা (দক্ষিণ) গোলাম আজম খানের ছোট ছেলে। তার মা সালমা খাতুন গৃহিণী।
তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদরাসা কক্সবাজার শাখার মেধাবী ছাত্র ইয়াসিন আরাফাত খান ইতঃপূর্বে পঞ্চম শ্রেণীতে বৃত্তি লাভ করে। বর্তমানে একই প্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ শ্রেণীতে অধ্যয়নরত।
প্রাতিষ্ঠানিক বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক আসরেও প্রথম পুরস্কারসহ বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পুরস্কার পেয়েছে সে।
হাফেজ ইয়াসিন আরাফাতের শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি অনেক ছাত্র পেয়েছি। ইয়াসিনের মতো পাইনি। তার মধ্যে অসাধারণ শক্তি আছে। পড়া দেয়ার সাথে সাথে মুখস্থ করে ফেলে। চমৎকার সুশৃঙ্খল, অমায়িক ও মার্জিত হওয়ায় তার প্রতি সবার আকর্ষণ আলাদা। ইয়াসিনের মেজাজে নেই কোনো উগ্রভাব। সাধারণ ছাত্রদের চেয়ে সে ভিন্ন। সাদাসিধে ইয়াসিনের জীবন অনেক সম্ভাবনায় ভরা।
তিনি বলেন, সব ছাত্র যখন গভীর রাতে ঘুমিয়ে থাকে ওই সময়েও উঠে পড়তে দেখেছি ইয়াসিন আরাফাতকে। সবার আগে পড়া দেয়ার প্রবল জেদ ছিল তার ভেতর। ছিল না ফাঁকিবাজির চরিত্র। আচরণ ছিল মুগ্ধ হওয়ার মতো। আমল-আখলাকে পরিপূর্ণ এই ছেলেটি অনেক বড় হবে। তার জন্য অপেক্ষা করছে সোনালি ভবিষ্যৎ।
তানযীমুল উম্মাহ হিফজ মাদরাসা কক্সবাজার শাখার অধ্যক্ষ হাফেজ রিয়াদ হায়দার বলেন, কাসের হাজিরা খাতা অনুসারে মাত্র দুই মাস ২৬ দিনে (৮৬ দিন) ৩০ পারা পবিত্র কুরআন শরীফ খতম করেছে ইয়াসিন আরাফাত। এখন থেকে তার নামের সাথে যুক্ত হলো ‘হাফেজ’ শব্দ। যে শব্দটি কেনা যায় না। চুরি করেও মেলে না ‘হাফেজ’ সনদ। মেধা ও সাধনা দিয়ে নিতে হয় এই সনদ।
রিয়াদ হায়দার বলেন, সাধারণ কাসের পাশাপাশি এত দ্রুত সময়ের মধ্যে কুরআন হেফজ করার দৃষ্টান্ত এই অঞ্চলের জন্য নজিরবিহীন। পুরো দেশে হয়তো দু-একটা থাকতে পারে। হাফেজ আরাফাত ভবিষ্যতে বিশ্বমানের হাফেজে কুরআন হবে ইনশাল্লাহ।
হাফেজ ইয়াসিন আরাফাতের দাদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মরহুম ডাক্তার মোহাম্মদ ইছহাক খান টেকনাফের সুপরিচিত ব্যক্তি ছিলেন। নানা ছালেহ আহমদ সৌদি আরবের একজন প্রসিদ্ধ ব্যবসায়ী। তার স্থায়ী নিবাস টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের সাতঘরিয়াপাড়া এলাকায়।
পাঠকের মতামত