
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ভেসে এসেছে দুটি ইরাবতী ডলফিন। বৃহস্পতিবার (৩০ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধ পয়েন্টে ডলফিন দুটি ভেসে আসে। পরে একটি জোয়ারে ভেসে যায়, অপরটি সৈকতে আটকা পড়ে।
মৃত আটকাপড়া ডলফিনটি ৩ ফিট লম্বা ও ওজন আনুমানিক ১২-১৫ কেজি। এমন খবর পেয়ে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের একটি পর্যবেক্ষণ দল পরিদর্শন করেন।
পর্যবেক্ষন শেষে সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক সাঈদ বেলাল হায়দর জানান, প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে দেখা যায় মৃত ডলফিনটির দেহে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং দেহে পঁচন ধরেছে। ধারণা করা হচ্ছে জেলেদের জালে আটকা পড়ে কিংবা অন্যকোন ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে ডলফিনের মৃত্যু হয়েছে।
তিনি বলেন , ইরাবতী ডলফিন তীর থেকে বেশি দূরে যায় না। উপকূলের কাছাকাছি বসবাস করে বিধায় মাছের জালে আটকে মারা যাওয়া এবং বাসস্থান ধ্বংস হওয়াই ইরাবতী ডলফিনের প্রধান বিপদ। বিশেষ করে গিল নেট ও টানা জালে ইরাবতি ডলফিন আটকে পড়ে মারা যাওয়ার ঘটনা বেশী।
ইরাবতি ডলফিন সমুদ্র উপকূলের কাছাঁকাছি, নদীর সাথে সংযোগস্থলে স্বাদু ও নোনা পানির মিশ্রণ আছে এমন এলাকায় এরা বসবাস করে। তিনি পেশাদার জেলেদের সাথে ইরাবতী ডলফিনের একটি পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ভারত ও মায়ানমারের জেলেরা ইরাবতী ডলফিনদেরকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ডাক দেয় এতে সাড়া দিয়ে ইরাবতি ডলফিন জেলেদের জালের দিকে মাছ তাড়িয়ে জেলেদের গোলাকৃতি জালে পাঠায়।
পুরস্কার হিসেবে জেলেদের জালে যে অপ্রয়োজনীয় মাছ ধরা পরে সেগুলো ইরাবতী ডলফিনদের দেয়া হয়। এশিয়ার বেশকিছু দেশে ইরাবতী ডলফিনকে ধরে প্রশিক্ষণ দিয়ে পাবলিক অ্যাকুয়ারিয়ামে প্রদর্শন করা হয়।এদের অভিনব উপস্থিতি এবং অসাধারণ আচরণ, পানি ছেটানো, ডুব দেয়া এবং লেজ ঝাপটানোর দৃশ্য দেখে মানুষ বিমোহিত হয়। এদের সংখ্যা সমুদ্র উপকূলে যত বেশি দেখা যাবে তত বেশি পর্যটন প্রসার হবে। তাই এসব ডলফিনকে না মেরে রক্ষা করা প্রয়োজন।
কক্সবাজার বন পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা দীপু বলেন, বাংলাদেশে ইরাবতি ডলফিনের আবাসস্থল চিহ্নিত করা, বিচরন নিরাপদ করা এবং ক্ষতিকর জাল ব্যবহার নিষিদ্ধ করার মাধ্যমে এদের সংরক্ষণে সংশ্লিষ্ট সকলের এগিয়ে আসা প্রয়োজন।
পাঠকের মতামত