প্রকাশিত: ২২/০৮/২০২১ ১০:০১ এএম

দীর্ঘ সাড়ে চার মাস পর খুলেছে কক্সবাজারের পর্যটনকেন্দ্র। শুক্র ও শনিবার ছুটির দিনে সৈকত নগরীতে পর্যটকের উপস্থিতিও বেড়েছে। তবে করোনা পরিস্থিতিতে অধিকাংশের মধ্যে ছিল না স্বাস্থ্যবিধি মানার প্রবণতা। যে যার মতো করে সৈকতে ঘোরাফেরা করছেন। দূরত্ব যেমন মানা হচ্ছে না, তেমনি কারও মুখে নেই মাস্ক।

এদিকে স্বাস্থ্যবিধি যারা অমান্য করছেন, তাদের সতর্ক করাসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নিচ্ছে প্রশাসন। বাড়ানো হয়েছে হোটেল-মোটেল ও পর্যটনকেন্দ্রগুলোতে নজরদারি। টহলে রয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সৈকতে প্রবেশে সব পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। মাস্ক ছাড়া কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কখনই এ পরিস্থিতিতে করোনা সংক্রমণকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। সমগ্র জনগোষ্ঠীর খুব কমসংখ্যক মানুষ ভ্যাকসিনের আওতায় এলেও স্বয়ং প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান এখান থেকে সুরক্ষার নিশ্চিত দাবি করতে পারছে না; তাই স্বাস্থ্যবিধি একমাত্র নিরাপদ ভরসা।

পর্যটকরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে একঘরে বন্দি থেকে এবং শহরে যান্ত্রিকজীবন থেকে মুক্তি পেতে কক্সবাজার ভ্রমণে ছুটে এসেছেন। বিশেষ করে শুক্র ও শনিবার সরকারি ছুটি থাকায় বেশিরভাগ মানুষ কক্সবাজার ভ্রমণে এসেছেন।

চট্টগ্রামের হালিশহর থেকে আসা পর্যটক সিরাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, দীর্ঘদিন করোনার কারণে বের হওয়া যায়নি। তাই প্রথম সুযোগেই স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে কক্সবাজার সৈকতে ছুটে এলাম। আশা করছি, খুব দ্রুত এই মহামারি কেটে যাবে। মানুষ আবারও মুক্ত বাতাস নেবে। ঢাকা থেকে আসা ইলিয়াছ হায়দার বলেন, খুবই ভালো লাগছে বেড়াতে আসতে পেরে। ঘরে অনেক দিন বন্দি ছিলাম। এখন বিশাল সাগরের সামনে আসতে পেরে স্বস্তি পাচ্ছি।

কক্সবাজার হোটেল মোটেল ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাসেম জানান, সরকারের দেওয়া সব শর্ত মানা হচ্ছে। সৈকতে পর্যটকরা স্বাস্থ্যবিধি মানছে কিনা সেই দায়িত্ব আমাদের নয়। কক্সবাজারে পর্যটন জোনে যেসব হোটেল মোটেল রয়েছে সবকটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকদের রুম বুকিং দিচ্ছে।

ট্যুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, হোটেলে ৫০ শতাংশের অধিক কক্ষ ভাড়া দেয়া যাবে না। রেস্টুরেন্টসহ সবখানে পর্যটকদের শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধিসহ সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্দেশনা মানা না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পর্যটকরা যাতে আবাসন নিশ্চিত করে এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করেন।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, পর্যটন খোলা হলেও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। এজন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সতর্ক দৃষ্টিতে থাকবে। আর যে পর্যটকরা আসবে তাদেরও দেশের নাগরিক হিসেবে স্বাস্থ্যবিধি মানা প্রয়োজন। সামাজিক দূরত্বের পাশাপাশি স্যানিটাইজার ও মুখে মাস্ক পরা অবশ্য দরকার। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে।

পাইওনিয়ার ডেন্টাল কলেজ অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব ডা. মো. কামরুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেছেন, করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে বিশেষজ্ঞরা যেসব বিষয়ের ওপর ফোকাস করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, বাধ্যতামূলক মাস্ক পরা, ঘনঘন সাবান বা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোয়া। নিজে সুস্থ থাকি পরিবারকে সুস্থ রাখি এবং সরকারকে কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করি

পাঠকের মতামত