মুহাম্মদ হোসাইন ::
বঙ্গোপসাগরের রেজু চ্যানেলে ৪ টি পয়েন্ট এখন মৃত্যু কূপে পরিণত হয়েছে।
উখিয়ার সোনারপাড়ার ঘাটঘর এলাকার বয়োবৃদ্ধ জাফর আলমের প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণমতে রেজুর মোহনার ঠিক মাঝখানের একটি অংশ, মারমেইট ইকো রিসোর্টের বীচ অংশ -যেটা রেজু মোহনার উত্তর দিক এবং রেজুর মোহনা থেকে ২০০ মিটার পশ্চিম অংশের এই পয়েন্টে বছরের যে কোন মৌসুমে অন্তত ১ জন মানুষের মৃত্যুর খবর শুনা যায়।
তাই এলাকার মানুষের কাছে সাগরের রেজু নদীর চ্যানেলটি এক ভয়ঙ্কর স্থান হিসেবে পরিচিত হয়েছে।
স্থানীয় এলাকার স্পীট বোট ব্যবসায়ী নুর রশিদ ছোটন জানান, রেজু মোহনার চ্যানেলটিতে প্রতি বছর একটা না একটা অদৃশ্য ভাবে জেলেদের বোট-নৌকা দূর্ঘটনায় পতিত হয়।
তার দীর্ঘ অভিজ্ঞতার ভাষ্যনুযায়ী, সাধারণ জেলেরা জাল দিয়ে নদীর মোহনায় মাছ ধরতে গেলে আচমকা হালকা পানিতে ভেসে গিয়ে মানুষের মৃত্যু হয় অথবা মাঝি-মাল্লারা সাগর থেকে মাছ ধরে রেজুর ঘাটে ফেরার পথে নৌকা আকস্মিক উল্টে গিয়ে বা সাগরের ওই সব পয়েন্টে সাতাঁর কাটতে গিয়ে মারা যায়।
সম্প্রতি মেঘনা এভিয়েশনের একটি হেলিকপ্টার বাংলাদেশের ক্রিকেটার অল রাউন্ডার সাকিবুল হাসানকে ইনানীর তারকা হোটেল রয়েল টিউলিপে নামিয়ে দিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে এই রেজু চ্যানেলটিতে বিধ্বস্ত হওয়ায় আরো ভীতিকর পরিবেশ তৈরী হয়েছে।
সে আরো বলেন, এসব জায়গায় দুই হাজার সালের আগে প্রতি বছর একজন করে জেলের মৃত্যু হতে দেখেছি। এই পয়েন্টে পনের বছরের ভিতরে ১০ জন মত বিভিন্ন শ্রেণীর পেশার লোক মারা যায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-পশ্চিম সোনারপাড়া এলাকার জেলে হোসন (৪৭), মাওলানা আবুল বশরের পুত্র জুবায়ের (৪০), আরেক জেলে হাকিম।
তা ছাড়াও গত বছর রোজার ঈদের সময় মারমেইড ইকো রিসোর্টের বীচ পয়েন্ট দিয়ে সাগরে গোসল করতে নেমে সমুদ্রের পানিতে ভেসে যায় নাট্যকার ফারুক, এই বছর হেলিক্প্টার দূর্ঘটনায় শাহ আলম, সাগর পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার সময় উখিয়ার চাকবৈটা এলাকার এক হাফেজে কুরআন মারা যায়।
এমনকি পেচারদ্বীপ এলাকার আজাদের শিশু কন্যা গোসল করার সময় মারা যায়।
এটা ছাড়াও নাম বিহীন অনেক জেলে বিভিন্ন সময় নৌকা ডুবে মারা গেছে এই চ্যানেলটিতে।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা যায়, প্রায় দু হাজার মিটারের অধিক প্রশস্থ মুখ নিয়ে গঠিত উখিয়ার সোনারপাড়া গ্রামের রেজু নদীর মোহনাটি। যা বঙ্গোপসাগরের সাথে সংযোগ হয়ে আছে। এই মোহনা দিয়ে প্রতিদিন কয়েক শত ছোট-বড় নৌকা সাগরের গভীরে মাছ ধরতে যায়।
মোহনার আশপাশে রয়েছে বেশ কিছু চোরাবালি আবার মোহনার মাঝখানে কয়েকটি ছোট ছোট বালির দ্বীপ- যেখানে পা রাখলেই হাটু পরিমাণ বালির স্তুপের ভিতর ঢুকে পড়ে।
স্থানীয় লোকজনের সাথে আরো কথা বলে জানা যায়, এসব ফাঁকা-ফাঁকা বালির স্তুপ আরো বেশি ভয়ঙ্কর।
সহজে যে কেউ মাছ ধরতে দিয়ে এসব স্থানে দাঁড়ালেই একটা অঘটন ঘটে যায়।
অন্যদিকে মোহনার চ্যানেলটি দেখতে অসাধারণ দৃষ্টিনন্দন। যার প্রেক্ষিতে রেজু নদীর আশ-পাশে গড়ে উঠেছে তিনটি ইকো রিসোর্ট ও নিরিবিলির গিফট তেলাপিয়া মাছের হ্যাচারি।
অন্য অংশে রেজু নদীর পশ্চিমের বালিয়াড়িতে রয়েছে মন মাতানো ঝাউ গাছের বাগান। এসব মিলে রেজু নদীর মোহনাটি অনন্য অসাধারণ হয়েও মাঝে-মাঝে ছোট বড় দুর্ঘটনার কারণে সাগরের রেজু চ্যানেলটি আকস্মিক আতঙ্ক তৈরী করে।
এ বিষয়ে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জানায়, রেজু চ্যানেলটির দুর্ঘটনা কবলিত স্থান গুলো সম্পর্কে আমার ঠিক জানা নাই। আমি উখিয়ায় দায়িত্ব নিয়েছি সবে মাত্র। তবে হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হওয়ার পরে রেজু চ্যানেলটি দেখেছি।
নারী সহায়ক কর্মপরিবেশ তৈরি করে কর্মক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর পাশাপাশি বৈষম্যহীন ...
পাঠকের মতামত