প্রকাশিত: ২১/০৯/২০১৬ ৭:৩৫ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::

রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশের সহায়তা চেয়েছে মিয়ানমার। নিউ ইয়র্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সু চি-র মধ্যে সোমবার এক বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়।

পররাষ্ট্রসচিব এম. শহীদুল হক টেলিফোনে বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী ও মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সিলরের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ বৈঠক হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘বৈঠকে অং সান সু চি রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশের সহায়তা চেয়েছেন।’

সু চি প্রধানমন্ত্রীকে জানান, ‘জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনানের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে এ সমস্যা সমাধানের জন্য এবং তাদের পরামর্শ অনুযায়ী সমস্যার সমাধান হবে।’

পররাষ্ট্রসচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী সু চি-কে বলেছেন, ‘দুই দেশ মিলে এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।’

বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমার ১৯৪৮ সালে স্বাধীন হয়। দেশটি রোহিঙ্গাদের নাগরিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি এবং তারা কোনও নাগরিক সুবিধা ভোগ করে না।

মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর দমন-পীড়ন চলছে।রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির একটি বড় অংশ বাংলাদেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করে এখানে বসবাস করছে।

গত শতাব্দির ৭০ -এর দশকে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন শুরু হলে, তারা ব্যাপকহারে বাংলাদেশে আসে। এরপর ৯০-এর দশকে মায়ানমারে জাতিগত দাঙ্গার কারণে দ্বিতীয় বার তারা  বাংলাদেশে আসে।

কয়েক বছর আগে আবার জাতিগত দাঙ্গার কারণে রোহিঙ্গারা  ব্যাপকহারে আসা শুরু করে।এ সমস্যার সমাধানে বাংলাদেশ অনেকবার মিয়ানমারকে অনুরোধ জানিয়েছে।

অং সান সু চি ক্ষমতায় আসার পর গত মাসে কফি আনানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সীমান্ত সংলগ্ন রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন, জাতিসংঘের সাবেক উপদেষ্টা ঘাসান সালামে,ডাচ কূটনীতিক লেইটিসিয়া ভ্যান ডেন আসাম এবং মিয়ানমারের রেড ক্রস, মানবাধিকার ও ধর্মীয় সংস্থার প্রতিনিধি।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্ত বলেন, উন্মুক্ত সীমান্ত, বর্ডার গার্ডের অপ্রতুল জনবল ও অন্যান্য লজিস্টিকের অভাবের কারণে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার পরেও মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা আসা বন্ধ করা যাচ্ছেনা, যা বাংলাদেশের নিরাপত্তার জন্য একটি বড় হুমকি। এই রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসবাদ গ্রুপের সহজ শিকার এবং তাদেরকে সহজে জঙ্গিবাদ কাজে ব্যবহার করা সম্ভব।

জুলাই মাসের সন্ত্রাসী ঘটনার পরে সরকার এ বিষয়ে আরও বেশি সতর্কতা অবলম্বন করছে। রোহিঙ্গারা এখন যেভাবে আসছে সেটি বন্ধ করা প্রায় অসম্ভব বলে মনে করেন তিনি। তার মতে, রোহিঙ্গাদের একটি অংশ বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন ধরনের অবৈধ কার্যক্রম যেমন- ইয়াবা বা মাদক ব্যবসার সাথে জড়িয়ে পড়ছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো পরিচালিত রোহিঙ্গা জরিপের প্রাথমিক উপাত্তে দেখা গেছে, তিন লাখের কম রোহিঙ্গা নিবন্ধন করেছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা বলেন, আমাদের ধারণা ছিল অনিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় পাচঁ লাখ। কিন্তু প্রাথমিক হিসাবে এটি অনেক কম দেখা যাচ্ছে। তিনি বলেন, এর একটি অন্যতম কারণ একটি অংশ এখনও নিবন্ধনের আওতায় আসেনি এবং তারা সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। এ বছরের মে মাসে ছয়টি জেলায় রোহিঙ্গা জরিপ চালানো হয় এবং এর পূর্ণ ফলাফল এ বছরের শেষে পাওয়া যাবে বলে আসা করা হচ্ছে। এ ছয়টি জেলা হচ্ছে কক্সবাজার,চট্টগ্রাম, বান্দরবন, খাগড়াছড়ি, রাঙ্গামাটি ও পটুয়াখালী।

বাংলাদেশে ৩২ হাজারের মতো রোহিঙ্গা শরণার্থী কক্সবাজারের দুই ক্যাম্পে অবস্থান করছে এবং ধারণা করা হয়, প্রায় লাখের মতো অনিবন্ধিত রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আছে। তিনি বলেন, গত মাসে রোহিঙ্গা বিষয়ক জাতীয় টাস্কফোর্সের সভায় এ বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।বাংলা ট্রিবিউন

পাঠকের মতামত

পদত্যাগ করেছেন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের এএমডি মোস্তফা খায়ের

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের (এফএসআইবি) অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) মো. মোস্তফা খায়ের পদত্যাগ করেছেন। ব্যক্তিগত ...

‘সেন্ট মার্টিন নিয়ে প্রতিবাদকারীদের বেশিরভাগই হোটেল-মোটেলের মালিক’

অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, সেন্ট মার্টিনের বিদ্যুৎ ...

কক্সবাজারে প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কোম্পানি করতে আগ্রহী ফিনল্যান্ড

কক্সবাজারে একটি ফিনিশ প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কোম্পানি করতে আগ্রহী ফিনল্যান্ড। এই কোম্পানির মাধ্যমে কক্সবাজারের ব্যবহৃত প্লাস্টিককে ...