প্রকাশিত: ১৬/১১/২০১৭ ৮:০৩ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ১১:০২ এএম

টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি

রোহিঙ্গাদের কারণে টেকনাফের মানুষদের মধ্যে আটক আতংক বিরাজ করছে! যে সকল গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রোহিঙ্গারা বসতি গড়ে তুলেছে সে সকল ভুমি মালিক ও ভাড়া বাসায় আশ্রয় এবং ভাড়া দেওয়া মালিকদের মধ্যে এ আতংক বিরাজ করছে।

এনিয়ে দুঃচিন্তার পাশপাশি রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদ করার জন্য উপজেলা প্রশাসন বরাবর আবেদন করেছে অনেকে। এই আতংক বিরাজ করায় বাহারছড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইতিমধ্যে বিবৃতিও দিয়েছেন।

জানা গেছে, ২৫ আগস্ট সীমান্তবর্তী মিয়ানমানমারের রাখাইন রাজ্যে সহিংসতা ঘটনার জের ধরে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয়ে পালিয়ে আসেন। মানবিক কারণে সরকার তাদের আশ্রয় দেওয়ার ঘোষনা দিলে রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ান বিত্তশালী থেকে শুরু করে স্থানীয়রা। উখিয়া-টেকনাফের অনেক স্থানীয়রা এলাকায় বাড়ীতে ও ভাড়া বাসায় আশ্রয় দিয়েছে পালিয়ে আসা এসব রোহিঙ্গাদের। যত্রতত্র বসতি গড়ে তোলে অনে রোহিঙ্গা পরিবার।

এই রোহিঙ্গাদের অবাধ বিচরনের ফলে যানবাহসহ স্থানীয় বাজারে বিরাট প্রভাব পড়ে। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে মধ্যবিত্তসহ গরীব খেটে খাওয়া পরিবারগুলো। এবার মরার উপর খাড়ার ঘাঁ এর মতো আতক আতংক বিরাজ করছে উখিয়া-টেকনাফের এসব খেটে খাওয়া মানুষের উপর। আইন শৃংখলা বাহিনী ও উপজেলা প্রশাসন অভিযান পরিচালনা করছে এসব ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রোহিঙ্গাদের আশ্রয়স্থলে। কিন্তু রোহিঙ্গাদের উচ্ছেদও করতে পারছেনা বসতি দেওয়া স্থান থেকে। ফলে অনেকে এখন উপজেলা প্রশাসনসহ আইনশৃংখরা বাহিনীর সহায়তা চেয়ে আবেদন করতে দেখা গেছে। ইতিমধ্যে র‌্যাব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমান আদালত চালিয়ে রোহিঙ্গা আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে কয়েকজনকে সাজা প্রদান করেছে।

এদিকে বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়াম্যান মাওঃ আজিজ উদ্দিন এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, স্থানীয় পরিষদের মেম্বারগণ, গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ মানবতার সেবায় সাধ্যমত আইনশৃংখরা বাহিনীকে সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন। কিন্ত সম্প্রতি ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে রোহিঙ্গাদের অবস্থান নিয়ে ভাড়া নেয়ার মিথ্যা অজুহাতে ১৩ নভেম্বর বিকালে সহোদর দুই ভাইসহ তিন জনকে আটক করে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ছয় মাস করে সাজা দিয়েছেন। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। আটক তিন জন হলেন নয়াপাড়া গ্রামের কাদের হোসেনের দুই পুত্র জুহুর আলম (৪৭), আব্দুল মাবুদ (৩৮), আজিজুর রহমানের পুত্র সাকিব (৪২)। এধরণের ঘটনা নিয়ে ব্যাপক ভাবে পরস্পর শত্রুতা ও হয়রানি করার প্রবনতা এবং আশংকা দেখা দিয়েছে। সরকার বলছেন রোহিঙ্গাদের কারণে বিনা দোষে স্থানীয়দের হয়রানী না করতে। কিন্ত মিথ্যা অজুহাতে তদন্ত না করে এভাবে বাজার থেকে ধরে নিয়ে সাজা দিয়ে দিয়ে চালান দেয়া খুবই দুঃখজনক ঘটনা। নতুন অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা বিনা ভাড়ায় ব্যক্তি মালিকানাধীন জমিতে অস্থায়ীভাবে বসবাস করছে। আর মানবতা দেখাতে গিয়ে জমির মালিকরা হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। সব রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে নিয়ে গেলে আমরা সব দিক দিয়ে খুশী। কিন্ত বিনা অপরাধে এভাবে হয়রানীর শিকার হতে চাইনা’।

ভুক্তভোগী স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সরকার বা প্রশাসন ঘোষনা করলেই রোহিঙ্গাদের আশ্রয় না দিয়ে তাড়িয়ে দেবো। কিন্তু কোন ঘোষনা ছাড়াই হঠাৎ করে অভিযান চালিয়ে আটক করে সাজা দেওয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন ছিদ্দিকী বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় বা বাসাভাড়া না দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাইকিং করা হয়েছে এবং সকল রোহিঙ্গাদের নির্দিষ্ট ক্যাম্পে চলে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যারা রোহিঙ্গাদের ভাড়া বাসায় ও নিজস্ব জমিতে আশ্রয় বা ভাড়া বাসা দিয়ে যাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। অহেতুক কাউকে হয়রানী করা হবেনা।

পাঠকের মতামত

রামুর ফতেখাঁরকুলে উপ-নির্বাচনে প্রতীক পেয়ে প্রচারনায় ৩ চেয়ারম্যান প্রার্থী

রামু উপজেলার ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন পরিষদের উপ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধি ৩ প্রার্থীকে প্রতীক বরাদ্ধ দেয়া ...