প্রকাশিত: ২১/১২/২০১৬ ৮:০০ এএম

বিশেষ প্রতিবেদক::

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনা-পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকায় আতঙ্কিত রোহিঙ্গাদের পালিয়ে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়ায় আসা অব্যাহত রয়েছে।  মঙ্গলবার এ দুই উপজেলার দুটি শিবিরে প্রায় ১ হাজার ৭০০ রোহিঙ্গা এসেছে বলে স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র বলেছে।

দুপুরে উখিয়ার কুতুপালং অনিবন্ধিত শিবিরে আশ্রয় নেন রাখাইন রাজ্যের নাকপুরা গ্রামের বৃদ্ধ নুরুল আজিম। সঙ্গে আছেন স্ত্রী, তিন মেয়ে ও ছয় নাতি।

নুরুল আজিম বলেন, গত সোমবার রাতে সেনা ও পুলিশ তাঁদের গ্রামে ঢুকে গুলিবর্ষণ করে। এতে তাঁর দুই ছেলে নিহত হয়। এরপর প্রাণ বাঁচাতে তিনি সবাইকে নিয়ে উখিয়ায় পালিয়ে আসেন। তিনি বলেন, রাখাইনে অতিরিক্ত সেনা ও পুলিশ আনা হচ্ছে।

নাফ নদী অতিক্রম করে গতকাল ভোররাতে টেকনাফের লেদা রোহিঙ্গা বস্তিতে আশ্রয় নেন রাখাইনের মাংগালা ও বুচিদং এলাকার ৩৮ জন নারী, পুরুষ ও শিশু। তাঁদের কয়েকজন হলেন সনজিদা খাতুন, মাবিয়া খাতুন, শবমেরাজ, ফয়েজ উল্লাহ, হাবিব উল্লাহ, সাদ্দাম হোসেন।

টেকনাফ ও উখিয়ার সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা বলেন, তিন দিন ধরে নাফ নদীর ওপারে রাখাইন রাজ্যের নাইছাপ্রু, গজরবিল, কাওয়ারবিল, জামবনিয়া, রাইম্যাবিল, শিলখালী, খেয়ারিপ্রাং, নাকপুরাসহ বিভিন্ন গ্রামে দিন ও রাতে থেমে থেমে গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। এতে নাফ নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশি জেলেরা আতঙ্কিত থাকছেন।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের বরাত দিয়ে লেদা রোহিঙ্গা বস্তির ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন বলেন, রাখাইন রাজ্যের ওয়াবেগ সেনা ব্যাটালিয়নে ও বুচিডং সেনা ব্যাটালিয়নে নতুনভাবে সেনা আনা হয়েছে। এ ছাড়া আটটি বিজিপির ছাউনিতে আগের সদস্যদের সঙ্গে অতিরিক্ত সদস্য যোগ দিয়েছে।

রাখাইন রাজ্যে সেনা ও পুলিশের সদস্য বাড়ানো প্রসঙ্গে টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদ বলেন, ‘বিষয়টি আমরাও শুনেছি। এ ব্যাপারে আরও অনুসন্ধান চলছে। সীমান্তে নজরদারি আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে এবং বিজিবির টহল জোরদার করা হয়েছে।’

গত ৯ অক্টোবর রাখাইন রাজ্যে তিনটি সীমান্ত ছাউনিতে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় ৯ পুলিশসহ ১৮ ব্যক্তি নিহত হন। এরপর মিয়ানমারের সেনা, পুলিশ রাজ্যটিতে রোহিঙ্গাদের দমন-পীড়ন শুরু করে। নিহত হয়েছে শতাধিক রোহিঙ্গা। ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে।

বিভিন্ন সূত্র বলেছে, গতকাল প্রায় ৭০০ জন রোহিঙ্গা টেকনাফের লেদা এবং প্রায় ১ হাজার জন উখিয়ার কুতুপালং রোহিঙ্গা শিবিরে এসেছে। এ ছাড়া আরও ৩০০ রোহিঙ্গা কক্সবাজার শহরের দিকে চলে গেছে।

জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেন, শিবিরে কর্মরত বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তারা তাঁকে জানিয়েছেন, টেকনাফ ও উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে সব মিলে নতুন করে ঢুকেছে ৩৫ হাজারের মতো রোহিঙ্গা। রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ ঠেকানোর চেষ্টা চলছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, এর বাইরে টেকনাফ ও উখিয়ার চারটি শিবিরসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছে আরও পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা।

পাঠকের মতামত

কোটবাজার দোকান-মালিক সমিতির নবনির্বাচিতদের শপথ ও দায়িত্বভার গ্রহণ

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কোটবাজার দোকান মালিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের নবনির্বাচিত ব্যবস্থাপনা কমিটির শপথ গ্রহণ, দায়িত্বভার ...

‘ইয়াবাকান্ডে’ কক্সবাজারে অধিনায়কসহ ৩ শতাধিক র‍্যাব সদস্যকে গণবদলি

ইয়াবা উদ্ধার করে মামলায় কম দেখানো এবং আর্থিক কেলেংকারির অভিযোগে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র‍্যাব) কক্সবাজার ...

কড়াইল বস্তির অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্তদের জরুরি খাদ্যসহায়তা ডব্লিউএফপির

 রাজধানীর কড়াইল বস্তিতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য জরুরি খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দিয়েছে জাতিসংঘের বিশ্ব ...

উখিয়ায় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহে র‍্যালি-প্রদর্শনী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

কক্সবাজারের উখিয়ায় জাতীয় প্রাণিসম্পদ সপ্তাহ ও প্রদর্শনী–২০২৫ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসন এবং প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি ...

রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তায় কোরিয়ার ৫০ লাখ ডলার অনুদান

কক্সবাজারে বসবাসরত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থাকে (আইওএম) ৫০ লাখ মার্কিন ...