খালেদ হোসেন টাপু, রামু:
দিনব্যাপী নানান আয়োজনের মধ্যদিয়ে স্মরণ করা হলো রামু সহিংসতার চার বছর অতিক্রান্তের দিনব্যাপী আয়োজন। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সেই অশুভ দিনে ধ্বংসপ্রাপ্ত পবিত্র বুদ্ধের ধাতু,বুদ্ধ মূর্তি,বৌদ্ধ বিহার,পবিত্র ত্রিপিটক হারিয়ে যাওয়া সকল স্মৃতির উদ্দেশ্যে পুণ্যদান করতে এ অনুষ্ঠানের আযোজন করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রামু লালচিং-মৈত্রী কমপ্লেক্সে দিনব্যাপী এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে রামু কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ যুব পরিষদ।
রামু লালচিং-মৈত্রী কমপ্লেক্সের সাদাচিং এ বুদ্ধের সামনে অর্ঘ্যদানের মধ্যদিয়ে শুরু হয় দিনব্যাপী আয়োজন। দিনের অন্যান্য কর্মসুচীর মধ্যে ছিল মহা সংঘদান ও অষ্ট উপকরণ দান,সদ্ধর্ম্ম সভা,অতিথি ভোজন, মৈত্রী শোভাযাত্রা ও সন্ধ্যায় হাজার প্রদীপ প্রজ্বলন।
এতে সভাপতিত্ব করেন,বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উপসংঘরাজ ও রামু কেন্দ্রীয় সীমা বিহারের অধ্যক্ষ পন্ডিত সত্যপ্রিয় মহাথের। প্রধান ধর্মদেশক ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচ্য ভাষা পালি বিভাগের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ড. জিনবোধি মহাথের। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বাংলাদেশী বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় গুরু ড. ধর্মসেন মহাথের উপস্থিত থাকার কথা থাকলে শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি উপস্থিত থাকতে পারেননি।
ধর্মসভায় অন্যান্যদের মধ্যে,শ্রীকুল রাখাইন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ পাঞাদ্বীপা মহাথের, দ্বীপ শ্রীকুল ধর্মরত্ন বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ উপাঞাচারা মহাথের,রামু মৈত্রী বিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞাতিলোক মহাথের, হাজারীকুল বোধিরত্ন বৌদ্ধ বিহারের প্রজ্ঞাবোধি থের,রাংকুট বনাশ্রম বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ জ্যোতিসেন থের প্রমুখ ধর্ম দেশনা করেন।
রামু সীমা বিহারের সহকারী পরিচালক প্রজ্ঞানন্দ ভিক্ষুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন, রামু কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ যুব পরিষদের আবায়ক রজত বড়ুয়া রিকু শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন স্মরণ সভা উদযাপন পরিষদের আহবায়ক রিটন বড়ুয়া, এমইউপি ও সদস্য সচীব পূর্ণধন বড়ুয়া। অনুষ্ঠানে সারা দেশের শতাধিক বৌদ্ধ ভিক্ষু ও শ্রামন এবং হাজারো বৌদ্ধ উপাসক-উপাসিকা অংশ নেন।
দিনব্যাপী এ আয়োজনে স্থানীয় রামু কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ ছাত্র পরিষদ-উদ্যোগে বিনামূল্যে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় ও সেই কালো রাত ২৯ সেপ্টেম্বর অবলম্বনে স্থির চিত্র ও ভিডিও চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে।
এ ছাড়াও অনুষ্ঠানে সার্বিক সহযোগিতার হাত বাড়ায় রামু ত্রিরত্ন মহিলা সংঘ।
এবারের আয়োজনের আহবান ছিল, ‘দূর হোক সাম্প্রদায়িকতা, সম্প্রীতির সমুজ্জ্বল সুবাতাসে উদ্ভাসিত হোক সকল নাগরিক জীবন’ মূলত ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরের মত আর কোনো বিভিষিকাময় রাত আর কোন জাতীর জীবনে না আসুক, এই কামনা এবং সেদিনের রাতে ধব্ংসপ্রাপ্ত সকল বুদ্ধমূর্তির উদ্দেশ্যে পুণ্যদান করতে এসব আয়োজন করা হয়।
পাঠকের মতামত