প্রকাশিত: ২৮/০২/২০১৭ ৩:০০ পিএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::

টেকনাফে নিকাহ ও তালাকনামা রেজিস্ট্রি অফিসে অর্থের বিনিময়ে রোহিঙ্গা ও অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েদের নিকাহ রেজিস্ট্রির অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া প্রথম স্ত্রী থাকার পরও দ্বিতীয় বিয়ের রেজিস্ট্রিটাও হচ্ছে ঐ কাজীর বিরুদ্ধে। টেকনাফের মধ্যহ্নীলায় হোয়াইক্যং ইউনিয়নের নিকাহ ও তালাকনামা রেজিস্ট্রি অফিসের কাজী আকতার কামাল নুরীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। জানা গেছে, হোয়াইক্যং লম্বাবিলে বসবাসরত মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গা হোছন আলীর মেয়ে মনিরা বেগম এবং একই গ্রামের বসবাসরত আবু তৈয়বের পুত্র মো. আয়ুবের সহিত রেজিস্ট্রিমূলে বিবাহ সম্পাদন হয়। বর্তমানে মনিরা ও আয়ুব দুইজনে স্বামী-স্ত্রী। তারা দুইজনে বাংলাদেশ সরকারের নিয়ম অনুযায়ী রেজিস্ট্রি কাবিননামা করে বিয়ে করেন। এরা বার্মা থেকে এসে হোয়াইক্যং লম্বাবিল, তেচ্ছিব্রিজ গ্রামে থাকেন। বিয়ের কাবিননামাতে মো. আয়ুব ঠিকানা দেখিয়েছে পেকুয়া উপজেলার মগনামার গ্রামে আর মনিরা বেগমের ঠিকানা হোয়াইক্যংয়ের লম্বাবিলের।
তাদের সঙ্গে আলাপকালে তারা বলেন, ‘আমরা বার্মা থেকে এসেছি। টাকা দিয়ে নিকাহনামা সম্পাদন করেছি। জন্ম নিবন্ধন বা ভোটার আইডি কার্ড আছে কিনা জানতে চাইলে বলেন, ‘জন্ম নিবন্ধন দিয়েছি’। তবে বিয়ের কাবিননামাতে উক্ত ব্যক্তিদের দেয়া জন্ম নিবন্ধনসমূহ ইউনিয়ন পরিষদ থেকে দেয়া হয়নি। কম্পিউটার দোকান থেকে নাম বদলানো স্ক্যান কপি।
পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এই নামে কারও নিবন্ধন পরিষদের নিবন্ধন খাতায় উল্লেখ নেই।
হোয়াইক্যং মধ্যহ্নীলা ওরি আমগাছ তলা নামক স্থানে অবস্থিত বিয়ের কাবিননামা রেজিস্ট্রি কাজী অফিসে বিয়ের কাবিননামা করার সময় কাজী আক্তার কামাল নুরী অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে মেয়েসহ রোহিঙ্গাদের বৈধ কোনো কাগজপত্র ছাড়া বিয়ের কাবিননামা মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময় করে দিচ্ছে। বিয়ের কাবিননামা রেজিস্ট্রি করার সময় বর পক্ষ বা কনে পক্ষের তেমন কোনো সাক্ষী লাগে না টাকা দিলে সব ঠিক। উক্ত কাজী অফিসে গিয়াস উদ্দিন নামে এক সহকারী কাজী আক্তার কামাল নুরীর দিক নির্দেশনায় সমস্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। মূল কাজী ঠিকমতো তার নিজ কার্যালয়ে তেমন থাকে না। রেজিস্ট্রি করার ক্ষেত্রে কোনো আইন কানুন না মেনে অসম্পন্ন ভাবে বিয়ের কাবিননামা সম্পাদন করেন। দিন দিন রোহিঙ্গারা এসব সুযোগের ফলে এলাকাতে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে।
এই নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। এই ভাবে চলতে থাকলে অপ্রাপ্ত ছেলে মেয়েদের মাঝে বাল্যবিবাহের প্রভাব বিস্তার ঘটবে। অভিভাবক ছাড়া নিজেরা অল্প বয়সে বিবাহবন্ধনে জড়িয়ে পড়বে।
বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের কাজী আক্তার কামাল নুরীর বিরুদ্ধে এগুলো তেমন কিছু না, কারণ অনেক অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়েদের সরকারি কোনো নিয়মের তোয়াক্কা না করে ও রোহিঙ্গাদের সরকারি রেজিস্ট্রি মোতাবেক বিয়ের কাবিননামার কাজ সম্পাদন করে যাচ্ছে। স্থানীয়রা এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে তদারকি করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান। এব্যাপারে কাজী নুরীর অফিস সহকারীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে এই রকম কোনো কাজ এই অফিসে হয়নি। কাজী অফিসের প্রধান কাজী আক্তার কামাল নুরীর কাছ থেকে অনিয়মের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিকাহনামা সম্পাদন করা হলেও পরে জন্ম নিবন্ধন এবং আইডি কার্ড দেখাতে না পারায় বাতিল করা হয়েছে। এছাড়া অপর অভিযোগগুলো ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দেন।

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের আরেক গুরুত্বপূর্ণ শহর বিদ্রোহীদের দখলে

মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা দেশটির আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের দখল নিয়েছে। মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী তা’আং ...

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ও দূরপাল্লার ট্রেন পটিয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতির দাবি

চট্টগ্রাম–কক্সবাজার ও দূরপাল্লার ট্রেন পটিয়া স্টেশনে যাত্রা বিরতিসহ বিভিন্ন দাবিতে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিমকে স্মারকলিপি দিয়েছেন ...