ডেস্ক নিউজ
প্রকাশিত: ০৫/০৪/২০২৪ ৭:৪৩ পিএম

বিশেষ প্রতিনিধি ও শামীমুল ইসলাম ফয়সাল ::

পাহাড়খেকোদের পরিকল্পনায় বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামানকে হত্যার চারদিন অতিবাহিত হলেও এখনো আইনের আওতায় আসেনি ঘাতক ডাম্পারের চালক বাপ্পী (২৩) ।

রবিবার (৩১ মার্চ) মধ্যরাত তিনটা ১৫ মিনিটের দিকে উখিয়ার হরিণমারা এলাকায় অবৈধভাবে মাটি-বালি সরবরাহে ব্যবহৃত ডাম্পার (মিনিট্রাক) চালাচ্ছিলো লাইন্সেসবিহীন এই চালক।

পথিমধ্যে অভিযান পরিচালনায় থাকা দোছড়ি বিটের দায়িত্বরত বন কর্মকর্তা সাজ্জাদ গাড়িটি থামানোর চেষ্টা করলে বাপ্পী তাকে চাপা দেয়।

ডাম্পারের চাকা দিয়ে মাথা পিষ্ট করে সাজ্জাদের মৃত্যু নিশ্চিত করার পর সেখান থেকে পালিয়ে যায় সে।

পরদিন, সকাল ১০ টার দিকে উখিয়ার পার্শ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের একটি ইটভাটার পাশে পাওয়া যায় ঘটনায় ব্যবহার করা ডাম্পার, হদিস মেলেনি বাপ্পীর।

রাজাপালং ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের হরিণমারা এলাকাটি স্থানীয় রাজনীতিতে বিএনপি সমর্থকদের অধ্যুষিত বলেই পরিচিত।

এই এলাকার পাহাড় নিধনে জড়িতদের মধ্যে বিএনপির অনেক স্থানীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীদের নাম মিলেছে।

চালক বাপ্পীর পিতা মোহাম্মদ শাহ আলম (৫৪) নিজেও দলটির ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা, সে সুবাদে উপজেলা পর্যায়ের স্থানীয় এক প্রভাবশালী বিএনপি নেতার সাথে তার সখ্যতা রয়েছে বলে জানা গেছে।

ঘটনার তদন্তের স্বার্থে সঙ্গত কারণে সেই প্রভাবশালীর নাম এই মূহুর্তে প্রকাশ করা না হলেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র বলছে, ঐদিন রাত ৩ টা ৪০ মিনিটের দিকে বাপ্পীর পিতা ফোন করে সেই উপজেলা পর্যায়ের নেতার সাথে ১ মিনিট ৪৪ সেকেন্ড আলাপ করেন।

সূত্রটির ধারণা, ফোনালাপে তিনি ছেলের কৃতকর্ম অবগত করার পাশাপাশি চান ছেলেকে বাঁচানোর সহযোগিতা।

ঘটনার পর থেকেই বাপ্পী ও তার পরিবারের সদস্যরা পলাতক। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রতিবেশী জানান ( রেকর্ড সংরক্ষিত), “তারা কেউই ঘটনার পর থেকে বাড়িতে নেই, শুনেছি বাপ্পী মালেয়শিয়া পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।”

বাপ্পী, সাজ্জাদ হত্যাকান্ডে দায়ের করা মামলার ১নং আসামী। এজাহারে উল্লেখ আছে ২ নং আসামী অর্থাৎ বাপ্পীর ডাম্পারের মালিক স্থানীয় সুলতানের আহমেদের পুত্র ছৈয়দ আলম প্রকাশ কানা ছৈয়দ আলম (৪০) তাকে এই হত্যাকান্ড ঘটানোর নির্দেশদাতা ।

ছৈয়দ আলমও বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত বলে জানা গেছে।

রাষ্ট্রীয় সম্পদ রক্ষা করতে গিয়ে নিহত সাহসী বন কর্মকর্তা সাজ্জাদের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সারাদেশে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

এসব সমাবেশ থেকে দ্রুতই জড়িতদের গ্রেফতার ও সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানের দাবী জানানো হয়।

উখিয়া রেঞ্জ কর্মকর্তা গাজী শফিউল আলম বলেন, ” সাজ্জাদের মৃত্যুতে বনবিভাগের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেলো। দ্রুত এঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি করছি।”

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শামীম হোসাইন জানান, ” আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ তৎপরতায় আসামীদের আইনের আওতায় আনার অভিযান অব্যাহত আছে। আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক রয়েছি জড়িতরা যেনো অনত্র পালিয়ে যেতে না পারে।”

মামলার ৫নং আসামী ছৈয়দ করিম এখন পর্যন্ত এঘটনায় গ্রেফতার হওয়া একমাত্র ব্যক্তি।

সূত্র : টিটিএন

পাঠকের মতামত

রাজাপালং ইউপি’র উপ নির্বাচনে প্রতীক পেলেন চার চেয়ারম্যান প্রার্থী

উখিয়ার রাজাপালং ইউপির উপ নির্বাচনে অংশ নেওয়া চার চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনী প্রতীক পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার (১১ ...

আইনি লড়াইয়ে প্রার্থীতা ফিরে পেলেন হুমায়ুন কবির চৌধুরী

উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের উপনির্বাচনে মহামান্য হাইকোর্টের রাযে কক্সবাজার জেলা নির্বাচন অফিস কর্তৃক বাতিলকৃত মনোনয়ন ...

ড্রেন ও ফুটপাত থেকে অবৈধ স্থাপনা সরাতে মাঠে নামলো কক্সবাজার পৌরসভা

চলতি বর্ষা মৌসুমে জলাবদ্ধতায় ডুবে ছিল কক্সবাজার শহরের নিম্নাঞ্চল। বিশেষ করে টানা বৃষ্টিপাতে হোটেল—মোটেল জোনের ...