বাবার লাশ ঘরে রেখে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে নিলুফা ইয়াছমিন নামে এক শিক্ষার্থী। ৮ নভেম্বর (মঙ্গলবার) ভোর ৫টায় নিলুফার বাবা পেঠান আলী (৬০) মারা যান।
নিলুফা এবার টেকনাফের হ্নীলা রঙ্গিখালী মঈন উদ্দিন মেমোরিয়াল কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়। তার বাড়ি রঙ্গিখালী মাদ্রাসা পাড়া এলাকায়।
স্থানীয় হ্নীলা ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, ‘বাবারর লাশ ঘরে রেখে মেয়েটি সকালে কাঁদতে কাঁদতে পরীক্ষাকেন্দ্রে গেছে। এটা আসলে সাহস দিলেও সহজে মেনে নেয়ার মতো না।
তিনি জানান, মঙ্গলবার ভোররাতে নিলুফার বাবা রঙ্গিখালী মাদ্রাসায় ক্যাম্পাসে রাস্তায় স্ট্রোক করে আকস্মিকভাবে মারা গেছেন। তিনি রাতে ক্যাম্পাসে সুপারী বাগান দেখভাল করতেন।
এদিকে বাবার মৃত্যুতে নিলুফা ইয়াছমিন মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। সে সকাল থেকেই কাঁদছিল। তাকে সান্ত্বনা দিয়ে সহপাঠী ও স্বজনরা পরীক্ষা দিতে উৎসাহিত করে। সে উপজেলার হ্নীলা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাংলা দ্বিতীয় পত্র বিষয়ে পরীক্ষা দেয়।
নিলুফার বড় ভাই শাখাওয়াত হোছাইন জানান, বাবার মৃত্যুর পর সে পরীক্ষা দিতে অনীহা প্রকাশ করেছিল। আমরা স্বজনরা অনেক বুঝিয়ে যেহেতু বোর্ড পরীক্ষা তাই তাকে সাহস ও সান্ত্বনা দিয়ে পরীক্ষা কেন্দ্রে নিয়ে যায়। তবে সে দেড় ঘন্টা লিখে চলে আসে বাড়িতে।
এই পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বরত ছিদ্দিক আহমদ ও কলেজের প্রতিনিধি ইব্রাহিম খলিল বলেন, ‘বেলা ১১টায় পরীক্ষায় অংশ নেয় নিলুফা ইয়াছমিন। তবে সে সাড়ে ১২ টায় হল থেকে খাতা জমা দিয়ে বের হয়ে যান। তার বাবার মৃত্যুর সংবাদ আমরা শিক্ষকরা জানতে পেরে তাকে মানসিক সাহস জোগাতে সহযোগিতা করেছি।’
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত (ইউএনও) এরফানুল হক চৌধুরী বলেন, ‘খবর পেয়েছি পরীক্ষাকেন্দ্রে শোকাহত ওই শিক্ষার্থীর পাশে থেকে সাহস জোগাতে হলের দায়িত্বরতদের বলেছি।
পাঠকের মতামত