প্রকাশিত: ২১/০৮/২০১৭ ৩:৩২ পিএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ২:৪৮ পিএম

ডেস্ক রিপোর্ট::
প্রতারক চক্রের সহযোগীতায় ভূঁয়া কাগজপত্র দেখিয়ে পাসপোর্ট করার চেষ্টাকালে গোয়েন্দা পুলিশের হাতে আটক হয়েছে এক রোহিঙ্গা যুবক। এ ঘটনায় প্রতারক চক্রের পলাতক এক সদস্যসহ আটক ব্যক্তি ও জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ, আব্দুল মাজেদ নামের এ যুবক নিজকে কক্সবাজার শহরের গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী নামের এক ব্যক্তিকে পিতা সাজিয়ে পাসপোর্ট তৈরী করা জন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে ভূঁয়া কাগজপত্র প্রদর্শন করে। পুলিশের কাছে বিষয়টি নজরে এলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে আটক করা হয়।
এ নিয়ে রোববার দুপুরে জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মো. রুহুল আমিন বাদী হয়ে মামলা করা হয়েছে বলে জানান কক্সবাজার সদর থানার ওসি রণজিত কুমার বড়–য়া।
আটক আব্দুল মাজেদ (২৩) টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের উনচিপ্রাং এলাকার আব্দুর রহমানের ছেলে বলে দাবি করলেও তিনি প্রকৃত এক রোহিঙ্গা বলে দাবি পুলিশের বিশেষ গোয়েন্দা শাখার।
এ ঘটনায় পলাতক আসামী হয়েছেন, কক্সবাজার শহরের বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন পশ্চিম চৌধুরী পাড়ার মৃত বজলুর রহমানের ছেলে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী। তার আদিনিবাস কক্সবাজার সদরের পিএমখালী ইউনিয়নের চৌধুরী পাড়ায়।
মামলা এজাহারের বরাত দিয়ে ওসি রণজিত বলেন, কক্সবাজার পৌরসভা থেকে জন্ম নিবন্ধন, জাতীয়তা সনদ ও ভূমিহীন হিসেবে ভূঁয়া কাগজপত্র সংগ্রহ করে পাসপোর্ট তৈরীর চেষ্টা করছিল আব্দুল মাজেদ। সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সহায়তা এ জন্য তিনি নিজের পিতার নামের জায়গায় গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী নামের কক্সবাজার শহরের এক ব্যক্তিকে পিতা সাজান। এসব নথিপত্র নিয়ে গত ২৪ জুলাই আব্দুল মাজেদ পাসপোর্ট অধিদপ্তরের কক্সবাজার আঞ্চলিক কার্যালয়ে আবেদনও করেন।
“ যার এমআরপি নম্বর – ২১০৩৭২ এবং পুলিশের বিশেষ শাখার স্মারক নম্বর – ৪২৩৭। এ ব্যাপারে তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট ঠিকানায় আবেদনকারি আব্দুল মজিদ নামের কাউকে সন্ধান পাননি। এমনকি স্থানীয় কাউন্সিলার ও লোকজনও তাকে চিনেন না বলে অবহিত করেন। এ নিয়ে মোবাইল ফোনে তাকে পুলিশের বিশেষ শাখায় এসে যোগাযোগ করতে বলেন। ”
তিনি বলেন, পাসপোর্টের জন্য আবেদনকারি আব্দুল মাজেদ শনিবার সন্ধ্যায় পুলিশের বিশেষ কার্যালয়ে এসে পরিচয় প্রকাশ করেন। এসময় আবেদনপত্রে পিতা উল্লেখ করা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীকেও তিনি সঙ্গে নিয়ে আসেন। এক পর্যায়ে তথ্য-উপাত্ত যাছাইয়ের জন্য মাজেদকে জিজ্ঞাসাবাদকালে আবেদনকারির পিতা পরিচয়দানকারি গিয়াস উদ্দিন কৌশলে সটকে পড়েন। এতে দীর্ঘসময় পর্যন্ত তিনি পুলিশ কার্যালয়ে না ফিরলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। ”
রণজিত বলেন, এতে এক পর্যায়ে পাসপোর্ট আবেদনকারি আব্দুল মাজেদ পুলিশের কাছে গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী আসল পিতা নন বলে স্বীকার করেন। সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সহায়তায় মিথ্যা তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করেছেন। পাসপোর্ট আবেদনকারির জমা দেয়া কাগজপত্র পর্যালোচনা করে পুলিশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা অবগত হন, মিথ্যা তথ্য উপস্থাপন করে কক্সবাজার পৌরসভা থেকে জন্মসনদ, জাতীয়তা সনদ ও ভূমিহীনের সনদ সংগ্রহ করেছেন। এতে পৌরসভার সংরক্ষিত একজন নারী কাউন্সিলর’সহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সীলমোহরযুক্ত স্বাক্ষর রয়েছে।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের অন্যতম হোতা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীসহ অন্য সহযোগীদের পারস্পরিক যোগসাজশে জাল-জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে এহেন অনৈতিক কাজটি করেছেন বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা রণজিত।
এ ঘটনায় জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শক মো. রুহুল আমিন বাদী হয়ে পাসপোর্ট আবেদনকারি আব্দুল মাজেদ ও প্রতারক চক্রের অন্যতম হোতা গিয়াস উদ্দিন চৌধুরীসহ অজ্ঞাত সহযোগীদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করা হয়েছে বলে জানান ওসি রণজিত।

পাঠকের মতামত

শেখ মুজিবকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে পোস্ট, এসিল্যান্ড প্রত্যাহার

শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক দাবি করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) সিরাজুম মুনিরা ...

আলোচিত স্কুলছাত্রী টেকনাফের তাসফিয়া হত্যা: এবার তদন্ত করবে পুলিশ

চট্টগ্রামের আলোচিত স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিন হত্যা মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনের ...