প্রকাশিত: ১৩/০৯/২০১৬ ১:৪৪ পিএম

বলরাম দাশ অনুপম::

পবিত্র ঈদুল আযহা মঙ্গলবার। ঈদ উপলক্ষে কয়েকদিনের ছুটি পেয়েছেন সবাই। এ ছুটিতে অনেকেই দেশের নানান প্রান্তে ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করছেন। ঘোরার জন্য আদর্শ জায়গা হলো চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চল। এর মধ্যে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজার অন্যতম।

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন ঈদের দিন থেকে পর্যটকের ঢল নামবে কক্সবাজারে। আর তাদের বরণ করে নিতে কক্সবাজারও প্রস্তুত।

ইতোমধ্যে অনেক পর্যটক কক্সবাজারে আগমন করেছেন। পর্যটকদের উচ্ছ্বাস যেন নব উদ্যমে রাঙিয়ে তুলছে কক্সবাজারকে। সমুদ্র সৈকত ছাড়াও জেলার পর্যটন স্পটগুলো মুখরিত হয়ে ওঠবে পর্যটকের পদভারে।

দেশি-বিদেশি বিপুল পর্যটকের আগমনকে কেন্দ্র করে চাঙ্গা হয়ে উঠেছে এখানকার পর্যটন শিল্প। ইতোমধ্যে ছোটবড় হোটেল-মোটেল, গেস্ট হাউস-কটেজ, ফ্ল্যাট অগ্রিম বুকিং হয়ে গেছে। সব ধরনের শঙ্কা কাটিয়ে এবার কোটি টাকার বাণিজ্যিক লেনদেন হওয়ার আশা করছেন এখানকার ছোট-বড়-মাঝারি সকল স্তরের ব্যবসায়ীরা।

কয়েক বছরের সকল ক্ষতি পুষিয়ে এবার লাভের মুখ দেখার অপেক্ষায় পর্যটন শিল্পকে কেন্দ্র করে মোটা অংকের বিনিয়োগ করা ব্যবসায়ীরা। হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস, বার্মিজ মার্কেট থেকে শুরু করে ডিম, আচার বিক্রেতাদের পাশাপাশি বাণিজ্যিক লেনদেন হওয়ার খুশিতে আত্মহারা ব্যবসায়ীরা।

দীর্ঘদিন পর বিপুল পর্যটকের আগমনের শুভক্ষণে খুশির ভাগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন না বাস, রিকশা, টমটম, সিএনজি থেকে শুরু করে পরিবহন সেক্টরের বিনিয়োগকারীরাও।

তাদের মতে সাগরকন্যা কক্সবাজারে গত কয়েকদিন ধরে আশানুতীত পর্যটকের আগমন হওয়ায় দীর্ঘদিনের লোকসান আর হতাশাকে কাটিয়ে নব উদ্যমে পুরোদমে পর্যটন ব্যবসা চালু হয়ে ওঠায় লাখ লাখ কোটি টাকার বাণিজ্যিক লেনদেন হবে।

ঈদুল আযহার ছুটি ও পর্যটন মৌসুম উপলক্ষে আনন্দের দিনগুলোকে স্মৃতির পাতায় স্মরণীয় করে রাখতে বিশ্বের দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে পাড়ি জমাবে লাখো পর্যটক।

বিচপার্ক মার্কেট মালিক বহুমুখী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান বলেন, বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর সহনশীল অবস্থা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারীতে পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় ব্যবসায়ীরা সুন্দরভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করছে। স্বস্তিতে দিন কাটাতে পারছেন ব্যবসায়ীরা। শহরের বার্মিজ মার্কেটের পানের দোকানদার বাচ্ছু জানান, দীর্ঘদিন পর পর্যটকের মুখ দেখায় তার পানের দোকানে দৈনিক আগে যেখানে কয়েক’শ টাকা বিক্রি হতো সেখানে এখন কয়েক হাজার টাকার বিকিকিনি হচ্ছে।

শহরের পাশ্ববর্তী ইউনিয়ন খুরুস্কুলের রিকশাচালক রহিম মিয়া বলেন, পর্যটকের আগমনকে কেন্দ্র করে রামুতে রিকশা না চালিয়ে কক্সবাজার শহরে চলে এসেছি। এখন পর্যটকদের বহন করে দৈনিক এক থেকে দেড় হাজার টাকা আয় করে স্ত্রী-সন্তানদের নিয়ে সুখে দিনাদিপাত করছি। কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আবুল কাশেম সিকদার বলেন, সব মিলিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় এবার বিপুল পর্যটকের সমাগম হয়েছে কক্সবাজারে। পর্যটকদের আগমনে অতীতের লোকসান পুষিয়ে এখন আমরা লাভের মুখ দেখতে শুরু করেছি।

এদিকে পর্যটকদের আগমনকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে জেলা পুলিশ।

জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফেরদৌস আলী জানান, পর্যটকদের নিরাপত্তায় সবসময় সর্তকাবস্থায় রয়েছে পুলিশ। পর্যটকরা যাতে কোনো ধরনের ছিনতাই কিংবা হয়রানির শিকার না হন সেজন্য পোষাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোষাকে এবং পর্যটক বেশে পুরুষ-মহিলা পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

শুধু কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত নয়, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের পথভারে মুখরিত হয়ে ওঠবে জেলার দর্শনীয় পর্যটন স্পটগুলো।

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সীমাবদ্ধ না রেখে তা ছড়িয়ে পড়বে ইনানি পাথুরে বিচ, হিমছড়ির অপরুপ ঝর্ণা, দেশের একমাত্র প্রবালদ্বীপ সেন্টমার্টিন, দরিয়ানগর, রামুর নব-নির্মিত বৌদ্ধ বিহার, আদিনাথ মন্দিরের অপরুপ সৌন্দর্যের মাঝে।

পাঠকের মতামত

রোহিঙ্গা আনাস ওয়ানএক্স’ বিট’র মাধ্যমে ধব্বংস করছে হাজারো জীবন

উখিয়া উপজেলার রোহিঙ্গা ক‌্যাম্পসহ সর্বত্র এক ভয়াবহ নেট ওয়ার্কের (অনলাইন জোয়া) ওয়ানএক্স বিটের ছায়াতলে হাজারও ...