প্রকাশিত: ১২/০৬/২০১৬ ৮:১৪ এএম

নুরুল আমিন হেলালী::

জলবায়ুর বিরুপ প্রতিক্রিয়ায় পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সমুদ্র উপকুলবর্তী মানুষের জীবন ও জীবিকা অস্থিত্ব সংকটের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সারা বিশ্বজুড়ে চলমান আশংকা ও উদ্বেগ ধীরে ধীরে বাস্তবরূপে আবির্ভূত হতে শুরু করেছে। গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষনে কক্সবাজার সদর, টেকনাফ, সেন্টমার্টিন, শাহপরীরদ্বীপ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া ও চকরিয়াসহ বঙ্গোপসাগরের উপকুলীয় নিম্নাঞ্চল ও দ্বীপাঞ্চল সমূহে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও নানা মুখি সামাজিক এবং প্রতিবেশগত মিথষ্ক্রিয়ায় ওই সকল অঞ্চলের জনগোষ্ঠির অস্তিত্ব বিপন্ন হতে চলেছে। প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গত কয়েক দিনের মাঝামাঝি থেকে ভারী বৃষ্টির কারনে দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারী মানুষের নাগরিক জীবন। এছাড়া গতকয়েক দিনের অতিবৃষ্টিতে জল-কাঁদায় একাকার শহরের সড়ক-উপসড়ক। এমনকি শহরের কিছু কিছু এলাকায় হাটু পরিমান পানিতে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা । জানা যায়, জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাবের কারণে সৃষ্টি হচ্ছে ঘন ঘন নিম্নচাপ, ঘূর্ণিঝড়, অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি, খরা, বন্যা, টর্ণেডো, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতাবৃদ্ধি, ভূমিক্ষয়, লবণাক্ততা, ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী-নালা-খাল-বিল ও জলাশয়, নিচে নেমে যাচ্ছে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্থর, বিপন্ন হচ্ছে জীববৈচিত্র্যতা। এছাড়া বৈশ্বিক উষ্ণতাবৃদ্ধির ফলে প্রতিবেশের স্বাভাবিক খাদ্যশৃঙ্খল ভেঙ্গে পড়ছে এবং মানুষের আচরণগত অভ্যাস পরিবর্তন হয়ে দেখা দিচ্ছে শারীরিক ও মানসিক জটিলতা। জার্মান ওয়াচ এর গ্লোবাল ক্লাইমেট ইন্ডেক্স ২০১১ অনুযায়ী জলোবায়ু পরিবর্তনের কারণে সবচেয়ে বেশি ঝূঁকিপ্রবন ১০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ শীর্ষে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষনা সংস্থা “নাসা”র তথ্যানুযায়ী চলতি শতকের শেষ নাগাদ বাংলাদেশ সমুদ্র গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে বলে ইংগিত দিয়েছেন। আবার আন্তর্জাতিক জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক প্যানেল এর হুশিয়ারী হচ্ছে ২০৫০ সালের মধ্যে বাংলাদেশের শতভাগ ভূখন্ড সমুদ্রে তলিয়ে যাবে। যা শুধু উপকুলীয় নিম্নাঞ্চল ও দীপাঞ্চল সমূহের মধ্যে সীমাবদ্ধ। সেই হিসেবে সমুদ্রশহর কক্সবাজার, সেন্টমার্টিন, টেকনাফ, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, সোনাদিয়াদ্বীপ, কক্সবাজার সদরের উপকুলবর্তী খুরুস্কুল, পিএমখালী, ভারুয়াখালী, চৌফলদন্ডী, ইসলামপুর, পোকখালী, চকরিয়ার বদরখালী, পেকুয়ার মগনামাসহ সমুদ্র উপকুলের নিম্নাঞ্চল ও দ্বীপাঞ্চলসমূহ অস্তিত্ব সংকটের মুখোমুখি। পরিবেশ ও আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের ধারণা ২১০০ সালের মধ্যে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১.৪ থেকে ৫.৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বৃদ্ধি পেতে পারে।  এছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনে হুমকির মুখে পড়ছে জীববৈচিত্র্যতা ও প্রতিবেশ। পরিবেশবিদদের অভিমত জলবায়ু পরিবর্তন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে মারাত্মক ঝূঁকির কবলে পড়তে হবে বাংলাদেশের উপকুলীয় জেলাসমুহ। অচিরেই জলবায়ু পরিবর্তনজনিত জটিলতারোধকল্পে ব্যাপক গণসচেতনতা এবং কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী।

পাঠকের মতামত

কক্সবাজার-৪ আসনে ইসহাক, বাহাদুর ও বশরের মনোনয়নপত্র বাতিল

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেকক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদি’র পুত্র দাবিদার ...

আচরণ বিধি লঙ্ঘন: বদির স্ত্রী শাহীন আক্তারের কাছে ব্যখ্যা চেয়েছে অনুসন্ধান কমিটি

নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘন করায় কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী ও সংসদ সদস্য শাহীন ...

উখিয়ায় বেতন কর্তনের প্রতিবাদ করা টিকাদানকর্মীকে হত্যার চেষ্টা!

উখিয়া স্বাস্থ্য বিভাগ পরিচালিত রোহিঙ্গা শরণার্থীদের টিকাদান কর্মসূচিতে কর্মরত রাজীব বড়ুয়া নামে এক টিকাদান কর্মী ...