নিউজ ডেস্ক::
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে পৃথক চারটি সেতু নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ চকরিয়ার মাতামুহুরী সেতু ছাড়াও দোহাজারীর সাঙ্গু, চন্দনাইশের বরগুনি ও পটিয়ার ইন্দ্রপুল সেতু পুনর্নির্মাণ হবে। এ চারটি সেতু নির্মাণে ৩৬০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণপূর্বক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানের সড়কের পাশাপাশি সেতুগুলো নির্মাণ করা হবে চারলেনের।
এদিকে, লোড ক্যাপসিটির অধিক পণ্যবোঝাই যানবাহন চলাচলের কারণে নির্দিষ্ট মেয়াদের আগেই মাতামুহুরী সেতু চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই যান চলাচল বন্ধ করতে সওজের পক্ষ থেকে স্থানীয় প্রশাসনকে মৌখিকভাবে জানানো হলেও কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় সেতু ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বলে কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়ুয়া জানান। অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই যান চলাচল বন্ধে ট্রাফিক ও হাইওয়ে পুলিশ কোন ব্যবস্থাই নেয়নি।
সরেজমিন ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চকরিয়ায় মাতামুহুরী সেতুটি নির্মাণ হয় ১৯৬০ সালে। এই সেতুর মেয়াদ ১শ’ বছর ধরা থাকলেও ইতিমধ্যেই সেতুটির বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে ও দেবে গেছে। ফাটল ধরেছে কয়েকটি স্থানে। সেতুর ঠিক মাঝখানে বড় ধরনের গর্ত হওয়ায় পাটাতনের মাধ্যমে জোড়াতালি দিয়ে যান যোগাযোগ চালু রাখলেও যাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়িগুলো সেতুতে উঠলেই কেঁপে ওঠায় আতঙ্কে ভুগেন যাত্রীরা। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় জীবন-ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করছে লাখো মানুষ। এসব সমস্যার পাশাপাশি সম্প্রতি সেতুর পিলারও দেবে যাওয়ায় ও ফাটল ধরায় বালির বস্তা ঠেস দিয়ে রাখতে হয়েছে।
অপরদিকে, দোহাজারীর সাঙ্গু, ইন্দ্রপুল ও বরগুনি সেতুগুলোও নির্মাণ হয় অন্তত ৬০ বছর পূর্বে। সড়ক প্রশস্ত হতে যাওয়ায় এই তিনটি সেতু পুনর্নির্মাণ জরুরি হয়ে পড়ে।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী রানাপ্রিয় বড়–য়া বলেন, মাতামুহুরী, সাঙ্গু, ইন্দ্রপুল ও বরগুনি সেতু চারটি পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই সেতুগুলো চারলেন বিশিষ্ট হবে। লোড ক্যাপাসিটির অতিরিক্ত পণ্য বোঝাই যানবাহন চলাচলের কারণে মেয়াদের আগেই সেতুগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
নির্বাহী প্রকৌশলী আরো বলেন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চারটি সেতু নির্মাণ করতে ৩৬০ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয় নির্ধারণপূর্বক বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে। জাপানি সংস্থা জাইকা ও বাংলাদেশ সরকার যৌথ উদ্যোগে এ চারটি সেতু নির্মাণ করার সম্মতি দিয়েছে। সেতুগুলোর মধ্যে মাতামুহুরী ও সাঙ্গু ৩৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে এবং ইন্দ্রপুল ও বরগুনি সেতু দুটি ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যরে। ইতিমধ্যে মাতামুহুরী সেতু নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষা করা হয়েছে। সাঙ্গু সেতুর মাটি পরীক্ষা চলছে। অপর দুটির পরীক্ষা অচিরেই শুরু হবে। চারটি সেতুর ডিজাইন একসাথে প্রণয়নের পর ব্যয় হিসেব করে বরাদ্দ নিশ্চিত হলে চারটি সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাহেদুল ইসলাম বলেন, সওজ’র পক্ষ থেকে আমাকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানানোর পর ট্রাফিক পুলিশের ওসিকে বলেছি, মাতামুহুরী সেতু দিয়ে ১০ টনের অধিক পণ্য বোঝাই যানবাহন চলাচল রোধ করতে। তিনি আরো বলেন, মাতামুহুরী সেতুটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ। জোড়াতালি দিয়ে যান চলাচল করছে। তাই জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় জরুরি ভিত্তিতে মাতামুহুরী সেতু নির্মাণ করার লক্ষ্যে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছি।
পাঠকের মতামত