প্রকাশিত: ০৭/০৭/২০২১ ৯:০৮ এএম

এম.এ আজিজ রাসেল:
কক্সবাজার জেলায় দিন দিন বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছেন শত শত মানুষ। সর্বশেষ টেকনাফ করোনা আক্রান্ত হয়ে ইয়াসিন আরাফাত নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। সে সাবরাং মন্ডল পাড়ার মৃত কবির আহমদ মেম্বারের ছেলে।

মঙ্গলবার (৬ জুলাই) দুপুর ১টার দিকে কক্সবাজার মেডিকেলের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইয়াসিন আরাফাতের বড় ভাই ফারুক জামসেদ। তিনি জানান,গত কয়েকদিন আগে কোভিট টেস্ট তার ফলাফল পজেটিভ আসে। পরে তাকে টেকনাফ আইসিডিডিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য কক্সবাজার প্রেরণ করে সেখান চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে মৃত্যু হয়। তিনি আরো জানান, তার পরিবারে আরো কয়েকজন করোনা পজেটিভ বলে ও তিনি। গত ৪ জুলাই কক্সবাজার সদর হাসপাতালে সদর উপজেলার ঈদগাঁওয়ের পিএমখালীর আশিউর রহমান(৯০) মৃত্যু বরণ করেন। গত ২৮ জুন করোনায় আক্রান্ত হয়ে সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন।

এদিকে মঙ্গলবার ৬ জুলাই কক্সবাজার জেলায় ২টি প্রতিষ্ঠানে মোট ১৮১ জনের দেহে করোনা শনাক্ত করা হয়েছে। তারমধ্যে, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ল্যাবে ৫৫৫ জনের নমুনা টেস্ট করে ১৫৫ জনের টেস্ট রিপোর্ট ‘পজেটিভ’ পাওয়া গেছে। বাকী ৪০০ জনের নমুনা টেস্ট রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসে। এছাড়া, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে একইদিন ৬৯ জনের র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট পদ্ধতিতে নমুনা টেস্ট করে ২৬ জনের টেস্ট রিপোর্ট ‘পজেটিভ’ শনাক্ত করা হয়। বাকী ৪৩ জনের টেস্ট রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসে।

কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের ট্রপিক্যাল মেডিসিন ও সংক্রামক ব্যাধি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শাহজাহান নাজির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কক্সবাজার মেডিকেল কলেজের (পিসিআর) ল্যাবে শনাক্ত হওয়া ১৫৫ জন করোনা রোগীর মধ্যে ৩ জন আগে আক্রান্ত হওয়া রোগীর ফলোআপ টেস্ট রিপোর্ট। নতুন শনাক্ত হওয়া বাকী ১৫২ জন রোগীর মধ্যে ২ জন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার রোগী। অবশিষ্ট ১৫০ জন সকলেই কক্সবাজারের রোগী। তারমধ্যে, ৪৮ জন রোহিঙ্গা শরনার্থী। এছাড়া সদর উপজেলায় ৩৮ জন, উখিয়া উপজেলায় ২৩ জন, রামু উপজেলায় ১৩ জন, টেকনাফ উপজেলায় ২০ জন, চকরিয়া উপজেলায় ৫ জন, কুতুবদিয়া উপজেলায় ২ জন এবং মহেশখালী উপজেলার ১ জন রোগী রয়েছে।

এদিকে, র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট পদ্ধতিতে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে করোনা শনাক্ত হওয়া ২৬ জনের মধ্যে ২৩ জন কক্সবাজার সদর উপজেলার, এবং ৩ জন রামু উপজেলার রোগী। এনিয়ে, ৬ জুলাই পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হলো—মোট ১২ হাজার ৯৯২ জন। এরমধ্যে, গত ৫ জুলাই পর্যন্ত করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে জেলায় মৃত্যুবরণ করেছে ১৩১ জন। তারমধ্যে, ২০ জন রোহিঙ্গা শরনার্থী। আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুর হার ১’০৮% ভাগ। গত ৫ জুলাই পর্যন্ত কক্সবাজার জেলায় করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে ১১ হাজার ২৭০ জন রোগী সুস্থ হয়েছেন। আক্রান্তের তুলনায় সুস্থতার হার ৮৭’৯০% ভাগ।

কক্সবাজার শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বিশেষ তৎপরতা শুরু করেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। ১লা জুলাই থেকে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নের পাশাপাশি করোনা রোগীরা যাতে সাধারণ মানুষের স্পর্শে আসতে না পারে ও মানুষ যাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে সে বিষয়ে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

কক্সবাজার সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান বলেছেন, জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই অবস্থায় চলমান লকডাউনে জেলার সর্বত্র সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। জনগণ যদি সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে এবং সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে পারে তাহলে করোনা সংক্রমণের হার কমে যাবে।

পাঠকের মতামত

ডালিম বড়ুয়া ও তার স্ত্রী তান্নি বড়ুয়া’র বিরুদ্ধে ঘুমধুমের অসহায় পরিবার’কে হয়রানি’র অভিযোগ

বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে ঘুমধুমে বিএনপি, জামায়াত সহ অনেক নিরীহ পরিবারকে মামলা দিয়ে হয়রানির অহরহ ...