প্রকাশিত: ০৯/০৬/২০১৭ ৯:২৬ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৪:৪৮ পিএম

শিক্ষানবীশ ব্যবস্থা চালুকরণের মাধ্যমে স্থানীয় যুবদের অগ্রাধিকার নিশ্চিত করা জরুরী…!!

সর্বদক্ষিণের জেলা কক্সবাজারের দুটি উপজেলা উখিয়া এবং টেকনাফ। এই দুটি উপজেলায় মায়ানমার সীমান্তবর্তী এবং শিক্ষাহার মৌলিক সূচকে অনেক কম। স্বাক্ষরতা বিষয়টি ভিন্ন। কর্মসংস্থানের উৎস কৃষি, মৎস্য ও মধ্যপ্রাচ্য প্রবাসী। নেই কোন শিল্পায়ন ও অায়ের জন্য নতুন কর্মের সুযোগ। অবকাঠামো ও ভৌগলিক কারণে শিল্পায়ন হয়ে উঠেনি। জীবন মান নিম্ন। জনসংখ্যার ঘনত্ব রয়েছে। বেশিরভাগ মানুষের বসবাস বনের সরকারি সংরক্ষিত ভূমিতে। খাসজমিগুলো বন্দোবস্ত পায় গুটিকয়েক ধনী শ্রেনী। সাধারণ জনগণের অধিকাংশ মুসলমান। অন্যান্য ধর্মাবলম্বী রয়েছে। তবে সকলের বসবাস এক পরিবারের মত ভ্রাতৃত্ববোধে ভরা।
এই দুই উপজেলায় সবচেয়ে কঠিন বিষয় হল রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পের প্রায় পাচঁ লাখ লোকের বসবাস। এরা দীর্ঘ সময় যাবৎ পার্শ্ববর্তী দেশ মায়ানমার থেকে এসে থিতু হয়েছে। তাদের মানবিক সহযোগিতা দেয়ার জন্য জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা সহ শত শত দেশী-বিদেশী এনজিও এই ক্যাম্পগুলোতে কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। শরণার্থীদের সীমিত অায়তনের এই দুই জেলায় বসবাসের ব্যবস্থা করতে গিয়ে স্থানীয় অবকাঠামোর অনেক কিছু ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তৎমধ্যে উল্লেখযোগ্য হল: অাইনশৃঙ্খলা, শিক্ষা, নিরাপত্তা, খাদ্য, জলবায়ু, মৃত্তিকা, বন, পরিবেশ, মূল্যবোধ সহ বিবিধ। দেখা যায়যে, এসব শরণার্থী ক্যাম্পগুলোতে হাজার হাজার এনজিও কর্মী চাকুরী করে। যাদের বেশিরভাগ কক্সবাজারের বাহিরের জেলা থেকে এসে কাজ করে থাকে। কারণ এনজিওগুলো বহুমুখী সেক্টরে কাজ করার কারনে কর্মীর সংখ্যাও বহুশ্রেণীর এবং সংখ্যায় অনেক।
কিন্তু পরিতাপের বিষয় যা, তাহল এতগুলো কর্মীর নগণ্য সংখ্যক কর্মী স্থানীয় এলাকা হতে নিয়োগ দেয়া হয় বাকিগুলো অামদানী করা হয় অন্যকোন জেলা হতে। এখান থেকে যারা নিয়োগ পায় তারা হল অায়া, ঝাড়ুদার, ক্লিনার, দারোয়ান এসব শ্রনীর। অামার জানার অাগ্রহ হল কেন এমনটা করা হয়! কারণ দেখানো হল, এনজিওতে কাজ করতে হলে প্রিভিয়াস অভিজ্ঞতা থাকতে হবে তখনি কাজ করার জন্য যোগ্য হবে। খুব-ই ভাল কথা। অভিজ্ঞতা না থাকলে প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব নয় বুঝেনিলাম। তাহলে কি, কোনদিনও উখিয়া টেকনাফের স্থানীয়রা এসব এনজিওতে ভাল পদগুলোতে কাজের সুযোগ পাবেনা?
অভিজ্ঞতা নাই অাজ, সুযোগ দিলেতো কাল অভিজ্ঞতার অভাব থাকবেনা। যদি তা পারা নায় তাহলে স্থানীয়দের জন্য অন্তত শিক্ষানবীশ ব্যবস্থা চালু করা হউক। তখনতো তারা ইন্টার্নশীপ শেষ করে অভিজ্ঞ হয়ে কাজ করে যেতে পারবে। কারণ এখানে যেসব কার্যক্র্ম পরিচালিত হয় তা অাহমরি কিছুনা। পথ দেখিয়ে দিলে তরুনরা সব পারে। কিন্তু অাদৌ সেরকম কোন উদ্যোগ নিতে দেখলাম না। উদ্যোগ গুলো নেওয়াতে স্থানীয় প্রশাসন, নেতৃত্ব, রাজনীতিবীদ, কেউ চাপদিতে দেখলাম না। না দিচ্ছে চাপ, না দিচ্ছে অাহবান। এনজিওগুলো কোটি কোটি ডলারের বিজনেস করে যাচ্ছে অামাদের এলাকায়। ক্ষতি করছে চরমভাবে তাদের ক্যাম্প ও কর্মসূচীগুলো। তবু অামরা মিনিমাম কর্মসংস্থানগত অগ্রাধিকারটা তাদের কাছ থেকে নিতে পারিনা!!
এলাকাবাসী ও তরুনরা যদি ঘুমায় তাহলে তাদেরকে কেউ প্লেটভরে খায়ে দেবেনা। দাবী জানাতে হবে। নেতৃবৃন্দকে দায়ীত্বশীল হয়ে অাগ বাড়াতে হবে যে, অামার এলাকায় দিতে হবে। জোরজবস্তির বিষয় নয় বরং পদ্ধতিগতভাবে।
স্থানীয় তরুনরা যদি ক্যাম্পে কাজ করে তাহলে তারা অনেক গোপনীয় বিষয় জানার সুযোগ পাবে যদি শরণার্থীরা কোন অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করে। তাহলে তারা সচেতন ও সজাগ থাকবে। নিজের বাড়ীর জন্য যত মায়া হবে ভাড়া বাড়ীর জন্য তত মায়া কোনদিন হবেনা। যারা বাহিরের জেলার তাদের দায় পড়েনি এসবের প্রতি দৃষ্টি দেওয়ার।
তাই সময় এখনি, শিক্ষানবীশ ব্যবস্থা চালুকরে স্থানীয় তরুনদের অভিজ্ঞতা সঞ্চালন করে যোগ্যতানুযায়ী কর্মের সুযোগ নিশ্চিত করার।
অদ্যাবধি এমন কোন নেতৃত্ব তৈরী হয়নি যে, পশ্চাৎপদ এই এলাকায় নতুন কোন কর্মসংস্থান ও শিক্ষায় উচ্চমানের জনসম্পদ তৈরী করায় অবদান রাখতে পারেমত। সেটি নাহয় কঠিন কাজ কিন্তু এনজিওগুলোকে বাস্তবমুখী ও পদ্ধতিগতকরনের মাধ্যমে ক্ষুদ্র হলেও জনকল্যান নিশ্চিত করা তো কঠিন বিষয় নয়।
এই বিষয়টি নিয়ে সকলের ভাবা দরকার ও অবস্থানগতভাবে এগিয়ে অাসা দরকার।
কারণ যতদিন মানুষ কর্মমুখী অবস্থানে পৌছতে না পারবে ততদিন উন্নয়নন মুখ থুবড়ে পড়বে।

মহি উদ্দিনের ফেইসবুক ওয়াল থেকে সংগৃহিত

পাঠকের মতামত

মিয়ানমারের চোরাই ১১টি মহিষ ১১লাখ ৫০হাজার টাকায় নিলামে বিক্রয়

মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে চোরাইপথে পাচারকালে কক্সবাজার উখিয়ার সীমান্ত পয়েন্ট থেকে ৬৪ বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি ...